পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W28e প্রবাসী—ভাদে, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড প্রত্যহই কেহ না কেহ আফিম প্রভৃতি বে-আইনীভাবে চোরা গোপ্ত আমদানি বা বিক্রী করায় ধরা পড়িতেছে— কিন্তু একদল ধরা পড়িলে সেস্থলে দশটা দল দাড়ায়—তাই পুলিশে আর কত ধরিবে ! সাধারণতঃ এই-সব পাপ । ব্যবসায়ীরা ছোট-ছোট ছেলেদের এই নেশায় আসক্ত করিয়া পরে কোথা হইতে কিকি চালাকি করিয়া এইসব মাদক দ্রব্য পাওয়া যাইবে, তাহা শিখায় ; একবার ইহাতে অভ্যস্ত করিতে পারিলেই তাহাদের কার্য্য-সমাধা হইল। কারণ এই-সব নেশা এমন প্রকৃতির যে, শত চেষ্টাতেও ইহা ছাড়া যায় না । এই সব মাদক-দ্ৰব্যব্যবসায়ীরা এ-কথা জানে ; তাই তাহারা যা-তা দামে ইহা বিক্রয় করে। যুক্ত-রাষ্ট্রে দেখা গিয়াছে যে, এই-সব নেশা-থোরের প্রায় প্রথম যৌবনেই নেশা করিতে শেখে। ১৯১৯এর ১৫ই এপ্রিল তারিখে যুক্ত-রাষ্ট্রের মাদক-দ্রব্য-তদন্ত-সমিতি এইসম্বন্ধীয় রিপোটে লেখেন— “The Committee is of opinion that the total number of addict in this country probably exceeds 1,000,000 at the present time.* * * The range of ages of all addicts was reported as from 12 to 75 years. The large majority of addict of all ages was reported as using morphine or ppiuin or its preparations * *. Most of the heroin addicts are comparatively young, a portion of them being boys and girls under the age of 20. This is also true of cocaine addicts. কমিটীর মতে তখন যুক্তরাষ্ট্রে নেশা-খোরদের ংখ্যা ছিল ১০ লক্ষ •••নেশ-গে রদের বয়স ১২ হই.ে ৭৫এর মধ্যে । ইহাদের অধিকাংশই মরফিয়া, আফিম, অথবা তজা ত কোন নেশাসক্ত । হিরোইন- ( আফিম হইতে প্রস্তুত একরকম, নেশা ) সেবীরা প্রায়ই অল্পবয়স্ক, অনেক ছেলে-মেয়ের বয়স ২০এর নীচে । কোকেনখোরদের বেলাতেও এই কথাই খাটে । ১৯১৯এর পরে ইহাদের সংখ্যা যে ঢের বাড়িয়ছে সেবিষয়ে কোন সন্দেহই নাই । অল্প-বয়স্ক ছেলে-মেয়েদের রক্ষা করিতে আজ যুক্তরাষ্ট্র চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছে। কিন্তু నెర్ পৃথিবীর অন্যান্য রাষ্ট্রগুলি যদি নিজেদের স্বার্থ রাখিতে সচেষ্ট না হয়, তাহা হইলে এক যুক্তরাষ্ট্র কিছুই করিতে পারিবে না। আফিম হইতেই অধিকাংশ নেশার জিনিষ প্রস্তুত হয়। আফিম ও কোকেন এই দুইটি জিনিষ প্রস্তুত করা বন্ধ করা বর্তমানে অত্যাবস্তক হইয়া পড়িয়াছে । কারণ ইহারা মানুষের মকুন্যত্ব-নাশের পক্ষে চমৎকার নেশা । পৃথিবীতে আফিম সব চেয়ে বেশী . প্রস্তুত হয় আমাদের দেশে ; তার পর তুরস্ক, পারস্ত ও চীনে। ইংরেজ আসিবার পূৰ্ব্বে এদেশে আফিমের চাষ ছিল সত্য ; কিন্তু তাহা আমাদের ‘ক্রিশ্চিয়ান’ কৰ্ত্তারা যেভাবে বৃদ্ধি করিয়াছেন, সেভাবে কখনই ছিল না। সামান্তপরিমাণে আফিম উৎপন্ন হষ্টত ; এবং তাছা দেশেই ব্যয়িত হইত। কিন্তু বর্তমানে ইংরেজ-সরকার অহিফেন বেচিয়া পৃথিবীর লোককে আফিমের নেশায় আসক্ত করিতে যে বিরাটু কারবার ফাদিয়া বসিয়াছেন—তাহাতে র্তাহারা আফিম বিক্রী করাটাকে পাপ বা অন্যায় বলিয়া যে জ্ঞান করেন, তাহা মনে হয় না। আফিম-চাষ হইতে শুরু করিয়া আফিম খুচরা বিক্ৰী করা পর্যন্ত সরকারের একচেটিয়া ব্যবসায়। পৃথিবীর সর্বত্র ভারতবর্ষের আফিম প্রচলিত। একদিকে আমাদের ও অপরদিকে সারা পৃথিবীকে নেশা-থোর করিবার “মহান কৰ্ত্তব্য” ভারতের ইংরেজ সরকারের হাতে ! ঔষধের জন্য আফিম ও কোকেনের খানিকট দরকার । বিশেষজ্ঞদের মতে গড়পড়তা বার্ষিক ১০০ টন (১ টন = ২৮ মণ ) আফিম হইলে পৃথিবীর ঔষধ-ব্যবসায়ী ও বৈজ্ঞানিকদের কাজ চলিয়া যায় । কিন্তু বংসরে প্রায় ১৫০০ টন আফিম পৃথিবীতে উৎপন্ন হয়। তাহার অর্থ ১৩০০ ১৪০০ টন আফিম পৃথিবীতে প্রতিবৎসর নেশা-খোরদের সেবায় লাগিতেছে। মামুষকে এই ভীষণ নেশার কবল হইতে উদ্ধার করিতে হইলে હરીપરે উদৃত্ত অহিফেনচাষ বন্ধ করা প্রয়োজন । কিন্তু কে বন্ধ করে ? ইওরোপের খৃষ্টীয় জাতিরা যে জিনিষটা সবচেয়ে বেশী চেনে তাহা হইতেছে—আর্থিক লাভ । তাহার। বোঝে টাকা । তাহারা দেখিয়াছে যে, এশিয়ার চতুর্দিকে