পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• & ৫ম সংখ্যা ] ভারতবর্ষ ও হংকং প্রভৃতি প্রাচ্যের পাশ্চাত্যরাষ্ট্রগুলির অধীন দেশে অহিফেন মফিয়ার ধূমপান ও কাচ গিলিয়া খাওয়া আইন-সঙ্গত। অথচ এই “আইন-সঙ্গত” ব্যবহার দেশের ও জাতির পক্ষে সৰ্ব্বনাশকর । যদি “কেবল চিকিৎসা ও বৈজ্ঞানিক প্রয়োজন ভিন্ন’ অহিফেন ও তজ্জাত দ্রব্যাদি" প্রস্তুত হওয়া “বৈঠক” নিষিদ্ধ হইত, তবে সৰ্ব্বত্র অহিফেন-চাষ কমিয়া ঘাইত । কিন্তু বর্তমান প্রস্তাৰ অনুসারে তাহা আর হইবে না। একজন “দেশহিত-ব্রতী" শিক্ষিত ভারতবাসী কত্ত্বক যে এরূপ প্রস্তাব উত্থাপিত হইতে পারে, তাহ পৃথিবীর সমক্ষে ভারতবাসীর আত্ম-মর্য্যাদা-জ্ঞান-হীনতা প্রচার করিয়াছে । মিঃ শ্ৰীনিবাস শাস্ত্রী ইংরেজ-সরকার কর্তৃক মনোনীত হইয় যে নিজ স্বাধীনচিত্ততাকে জলাঞ্জলি দিতে একটু ও ইতস্ততঃ করেন নাই—ইহাই সৰ্ব্বাপেক্ষা ব্যথার ও দুঃখের *I “Sorvant of India Society” সভাপতির পক্ষে ইহা অপেক্ষা কলঙ্ককর ব্যবহার যে আর কি হইতে পারে তাহ জানি না ! অহিফেন আমাদের দেশের ষে কি ভীষণ সৰ্ব্বনাশ করিতেছে তাহা সম্যক্ জানিয়াও মি: শাস্ত্রী এই প্রস্তাব আনয়ন করিয়া দেশের অতিবড় শত্রুর কৰ্ম্মই করিয়াছেন। মি: শাস্ত্রীর এই কীৰ্ত্তির পর অ্যামেরিকার যুক্ত-রাষ্ট্র দেখিলেন যে, তাহারা সাংহাইতে যে মানব-কল্যাণের ভিত্তি স্থাপন করিয়াছিলেন, তাহা স্বার্থাদ্ধ ব্রিটিশ-সরকারের কূটনীতিতে ধ্বংস হইতে বসিয়াছে। যুক্তরাষ্ট্র ইওরোপের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের সহিত সংলিপ্ত থাকিতে ইচ্ছুক নহেন বলিয়া তাহারা আন্তর্জাতিক বৈঠকে ষোগদান করেন নাই। কিন্তু মুহিফেন-সমস্ত স্ব রূপে সমাধান না হইলে তদ্বারা মানব-সমাজের প্রভূত অকল্যাণ সাধিত হইবে বলিয়া হইতে তাহারা সাংহাই কনভেনশনের আহবায়ক বলিয়া লীগ অব নেশনের অহিফেন-শাখাতে যোগ দিবার দাবি করিলেন । লীগ, তাহাতে স্বীকৃষ্ঠ হইলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ অহিফেন-বৈঠকে যোগ দিয়াছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থofastwo TEJ (House of Representatives ) f: পোর্টারের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ গত বৎসর মে মাসে জেনেভায় উক্ত বৈঠকে যোগ দেন। তাহারা অহিফেন-ব্যবসাঁয়ে ব্রিটিশ-রাজ Ö8ዓ খুব খোলাখুলিভাবে তাহদের মতামত উক্ত বৈঠকে প্রকাশ করেন । তাহারা বলেন যে, হেগ বৈঠকের নিদ্ধারণকে যদি সরলভাবে কার্য্যে পরিণত করার ইচ্ছা থাকে, তাই। হইলে কেৰল চিকিৎসা-কাৰ্য্য ও বৈজ্ঞানিক প্রয়োজন ব্যতীত অন্য-কোনভাবে অহিফেন ও তক্তাত দ্রব্যাদির ব্যবহারকে आईन। সঙ্গত বলা অত্যন্ত অন্যায়। দ্বিতীয়তঃ এই-সব দ্রব্যাদি যাহাতে অন্যায়ভাবে ব্যবহৃত না হয় সেজন্য চিকিৎসা ও বৈজ্ঞানিক কাৰ্য্যাদিতে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুর বেশী অহিফেন বাহাতে পুথিবীতে উৎপন্ন না হয়, তাহা দেখিতে হইবে । মিঃ পোর্টারের এই স্পষ্ট কথায় স্বার্থপর রাষ্ট্রগুলি যে নানা বাধা উত্থাপিত করিয়াছিল, তাত সহজেই বোঝা যায়। প্রথমে এক চীন ছাড়া সকল রাষ্ট্রই আমেরিকার প্রস্তাবগুলির বিপক্ষে দাড়ায় । পরে আস্তে আস্তে সকল রাষ্ট্রই মি: পোর্টারকে সমর্থন করে। কেবল এক ভারতের ইংরেজ সরকারই ইহার বিপক্ষে শেষ পর্য্যন্ত দাড়াইয় আছেন। ভারতের পরম হিতৈষী কৰ্ত্তাদের অভিমত এই যে, অষ্টিফেন-খাওয়া ভারতবাসীর পক্ষে মোটেই অনিষ্টকর নহে । বরং চিকিৎসকের অভাব-হেতু সাধারণ লোকে অহিফেনকে ঔষধ-রূপে ব্যবহার করে এবং তাহাতে তাহার উপরুতই হয় । কোন সভ্য শিক্ষিত জাতি যে এরূপ কথা প্রকাশ্য সভায় পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সম্মুখে দাড়াইয়া কহিতে পারে—ইহা আমাদের ধারণাতেই আসে মা । পুথিবীর সর্বত্র চিকিৎসকদের অভিমত এই ষে, সাধারণতঃ লোকে যে-সব বিভিন্ন উপায়ে অহিফেন ব্যবহার করে তাহার মধ্যে অহিফেন গুলি পাকাইয়া খাওয়াটাই শরীর ও মনের পক্ষে সৰ্ব্বাপেক্ষ। অনিষ্টকর। আর ভারতবর্ষে এইভাবেই অহিফেন ব্যবহৃত হয় । পৃথিবীর সকল দেশের লোকের শরীরের পক্ষে যাহা অনিষ্টকর, এই রুগ্ন শীর্ণ দীন ক্ষুধাপীড়িত জাতির তাহাতে কোন অনিষ্ট হয় না—ইহা অপেক্ষা বিস্ময়কর বাণী কোন দেশে কখনও উচ্চারিত হইয়াছে বলিয়া জানি না । ভারতের ইংরেজ "ট্রাষ্টী”রা ভারতবাসীর শারীরিক স্বাস্থ্য-রক্ষার্থে অহিফেন-ব্যবহার-সম্পর্কে না হয় অত্যন্ত