পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭১৬ দেখা যাইবে, যে, মোটের উপর ভারতবর্ষের লোকের ক্রমশঃ দরিদ্রতর হইতেছে। সণর শঙ্করন মায়ার ভারত-গবর্ণমেণ্টের উচ্চপদস্থ সদস্য ছিলেন। ভারত-গবর্ণমেণ্টের খয়েরখৃ হইয় “গান্ধী ও অরাজকতা” নামক পুস্তক লিখিয়াছিলেন। তাহার প্রণয়ন জন্য তিনি গবর্ণমেণ্টের নিকট হইতে অনেক উপকরণ পাইয়াছিলেন, এবং গবর্ণমেণ্ট উহার অনেক খণ্ড ক্রয় করিয়াছিলেন । এহেন শঙ্করন নাযার বিলাতের একখানি কাগজে লিখিয়াছেন, যে, ভারতবর্ষ ক্রমশঃ দরিদ্রতর হইতেছে । جسه ইংরেজের কার্য্যকারিতা লর্ড উইন্টাটন তাহার এসিয়াটিক রিভিউয়ের প্রবন্ধে লিখিয়ছেন, যে, এসিয়াবাসীরা কখনও ইংরেজের মত এফিসিয়েণ্ট হইতে পরিবে না । তাহার কোন প্রমাণ তিনি দেন নাই । আমবা কিন্তু একটা প্রশ্ন করিতেছি । পঞ্চাশ বৎসরের মধ্যে জাপানীরা মধ্যযুগের অবস্থা হইতে কল-কারখান। বাণিজ্য জাহাজ যুদ্ধজাহাজ শিল্প বাণিজ্য কৃষি প্রভৃতি বিষয়ে এবং রাষ্ট্রীয় বিষয়ে পুথিবীর চারিটি কি পাচটি শক্তিশালা জাতির মধ্যে পরিগণিত হইয়াছে । ইউরোপের বা পুথিবীর অন্য কোন জাতি এত অল্প সময়ের মধ্যে এরূপ কার্য্যকারিত। কখনও দেখাইতে শারিয়াছে কি ? ই-রেজ পুব এফিসিয়েণ্ট , আমরা নহি ; এই কারণে উইণ্টার্টন চিরকাল ইংরেজের ভারতের প্রভু থাকিবার দাবী করেন । অনেক বিষয়ে জাম্য নিরা, আমেরিকানরা, ফরাসীরা ইংরেজদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ । স্বতরাং ন্যায়তঃ উহাদেরও ইং লণ্ডের প্রভু হু ওয়া উচিত । উইণ্টাটন দয়া করিয়া বলিয়াছেন, যে, যদিও ভারতয়ের এফিসিয়েণ্ট নহে, তথাপি ইহাও স্বীকার্য্য যে ইউরোপের কোন কোন জাতিও তাহীদের মত কম এফিসিয়েণ্ট । তাই। হইলে জিজ্ঞাসা এই যে, এই-সব “অকেজো” অথচ স্বাধীন ইউরোপীয় জাতিদের উপর “কেজো” ইংরেজ প্রভৃত্বের দাবী কেন করে না ? তাহারা “ অকেজো” হইয়াও যদি স্বাধীন থাকিতে পারে, তাহণ হইলে তাহাদেরই সমান কম-এফিসিয়েণ্ট আমরা চিরদাসত্ব ব্যতীত আর কিছুব যোগ্য বলিয়৷ কেজে ইংরেজদের দ্বারা স্বীকৃত হইল না কেন ? উইন্টার্টন বলেন, ধে পপ লারে যে ভাবে স্থানিক স্বায়ত্ত শাসন চলে, তাহার সঙ্গে ভারতবর্ষের বিশৃঙ্খলতম মিউনিসিপালিটিরও তুলনা করিলে তাহ নিকৃষ্ট মনে হইবে না। এই পপলার ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাজধানী লগুনের একটা অংশ। ইংরেজরাই তথাকার কাজ চালায়। প্রবাসী—ভাদে, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড অথচ উইন্টার্টন একই মুখে ইংরেজকে কেজোতম এবং এসিয়াবাসীদিগকে অকেজো বলিয়াছেন । উইণ্টার্টনের অসাবধানতা উইন্টার্টন দু একটা সত্যি কথা হঠাৎ বলিয়া ফেলি য়াছেন। তিনি যাহা লিখিয়াছেন, তাহার তাৎপৰ্য্য এই, যে, শুধু বেতন কম বলিয়াই যে ইংরেজরা ভারতে কাজ করিতে অনিচ্ছুক, তাহ নছে । তাহারা ভারতীযদের অধীনে কাজ করিতে চায় না। তবে যদি তাহাদের পাওনাটা কিছু বাড়াইয়া দাও, তাহা হইলে, জানই ত, পেটে খেলে পিঠে সয় ! আরও দুটা সত্যি বথ তাহার প্রবন্ধে পাওয়া যায়। তিনি লিখিয়াছেন :– “Thal hard work. diffir-ult conditions, and indifferent pay do not of themselves act as a deterrent to Civil Serview oversious is proved loy the case is Africa.” - তাৎপর্যা । শক্ত কাজ ও খাটুনি, পারিপাশ্বিক অবস্থার কঠোরত এবং বেতনের অপ্রচুরতা সত্ত্বেও ইংরেজরা যে সাগরপারে সিবিলিয়ানী করিতে পরাম্মুখ হয় না, আফ্রিকায় তাহার প্রমাণ পাওয়া যায়। অতঃপর তিনি দেখাইয়াছেন, যে, উগাণ্ডা, কেন্যা, সুদান, ও উত্তর রোডেসিয়াতে চাকরী করিবার নিমিত্ত ইংরেজের অভাব হয় না । তাহার নিজের কথা এই :– ”I am searcely conceive a harder life than that ledl. say by a lBritish member of the Soudan - Civil Sorvice in the Equatorial Provinces. . . . . ११ “বিষুব-রেখার সন্নিহিত গ্রীষ্মপ্রধান প্রদেশ-সকলে সুদান সিবিল সার্বিসের ব্রিটিশ জাতীয় কোন চাকর্যের অপেক্ষ ক্লেশকর জীবনের কথা হামি ধারণা করিতে পারি না বলিলেও চলে।” অথচ সেখানেও লোক জুটে । কিন্তু ক্রমাগত অধিক হইতে অধিকতর বেতন না দিলে কেবল ভারতবর্যেই লোক জুটে না ! - ইংরেজদের নিজের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী যুবকদেরও যে আজকাল জীবিকা উপার্জনের পথ খুব ংকীর্ণ এবং কম টাকাতেও অনেকে ভারতে আসিতে পারে, উষ্টন্টার্টন তাহা লিখিয়াছেন ; অথচ বলিয়াছেন, আর কিছু জুটে না বলিয়া নাচার হইয়া এই-সব কৃতী যুবক ভারতীয় সিবিল সার্বিসে প্রবেশ করে, তাহা তিনি চান না! এর মানে ইহা ভিন্ন আর কি, যে, আর কোথাও জোর করিয়া বেশী বেতনের রন্দোবস্ত করিবার জো নাই, ভারতবর্ষে আছে, অতএব, যত বেশী পার ভারতবর্ষের নিকট হইতে আদায় কর । উইণ্টার্টনের একেবারে বুদ্ধি নাই, বলা যায় না ; কারণ তিনি স্বদেশবাসীদিগকে ঠারে ঠোরে বলিয়াছেন, ‘ভারতবর্ষের উপর বেশী চাপ দিও না ; জানই ত বিলাতে সব বৃত্তি ও