পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२० প্রবাসী—ভান্দ্র, ১৩৩১ { ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড কমিয়া গিয়া ঐ বাৎসরিক ৩০ টাকাতেও বা লাগিবার সম্ভাবলা। এই দ্বিতীয় ভুলটাও কাল মাক্স করিয়াছিলেন। সাম্যনীতিকামী এক পয়সার সাপ্তাহিকখানি বড়ই বর্ণনাপ্রিয়। ইহাতে দেখিতেছি, “এত বড় বৃটিশ সাম্রাজ্য—সেই সাম্রাজ্যের কেন্দ্র ইংলণ্ডের অবস্থাই বা আজ কি ? সেখানেও আজ এইরূপ ( ভারতের মত) দারিদ্র্য, এইরূপ বেকার-সমস্ত বিপ্লবের বীজ বপন করিতেছে। সেখানেও আজ লক্ষ লক্ষ গৃহহীন, অন্নহীন, দরিদ্র লগুনব্রিজের নিয়ে পুরুষানুক্রমিক ভাবে বাস করে কেন ?” প্রশ্নটি বড়ই বিপদজনক । আমাদের দেশের মধ্যবিত্তের সমান অর্থ যে দেশের লোকের বেকার অবস্থায় সরকার হইতে সাহায্যক্রপেই পায়, যে দেশের লোকেরা একটি কামরায় দুইজন থাকিতে হইলেই তাহাকে গৃহহীনতা নাম দেয়, চারবার উত্তমরূপে আহার না করিতে পাইলেই তাহাকে অনাহার বলে, সে দেশের সহিত আমাদের দেশের তুলনাই বাতুলত। আর “লণ্ডন-ব্রিজ” নামধেয় কোন ব্রিজের নিয়ে কেহ থাকে বলিয়। কখন শুনি নাই— পুরুষানুক্রমিক ভাবে যদি কেহ সতাই ঐরুপ নামের কোন ব্রিজের নিয়ে থাকে, তাহা হইলে বলিতে হইবে, তাহ তাহাদের বংশগত বদ-অভ্যাস অথবা সামাজিক রীতি । ধৰ্ম্মসংক্রান্ত কিছুও হইতে পারে । প্রকৃতি আমাদের যাহা অকাতরে দিতেছেন, তাহা কি আমাদের শ্রমলব ? সাগরকুলে বেড়াইতে বেড়াইতে একটি মুক্ত অথবা একটি মৎস্য কুড়াইল পাইলে কি তাত শ্রমলব্ধ বলিতে হুইবে, না বলিতে হইবে, তাহার মূল্য নাই, তাহ ঐশ্বৰ্য্য নহে ? মানুষ যত কিছুকে ঐশ্বধ্য বলে তাঙ্গ- প্রথমত প্রকৃতিৰ দান, দ্বিতীয়ত অতীত সমাজের * সঞ্চয়ের ফল, ও তৃতীয়ত বৰ্ত্তমানের মানুষের শ্রমলব্ধ। কাজেই সকল ঐশ্বৰ্য্য, অর্থ বা মূল্যবান দ্রব্য শুধু শ্রমিকের শ্রমপ্রস্বত, ইহ সত্য কথা নহে । সুদ্ধিজীবীর বুদ্ধির ফলে কত যন্ত্র উদ্ভাবিত হইয়াছে । বৈজ্ঞানিক কত সাধনার ফলে আজি মানবসমাজকে এই অবস্থায় আনিতে পারিয়াছেন। নূতন উপায়ে মানবসমাজের ঐশ্বধ্য বুদ্ধি করিবার জন্য কত ধনবান সৰ্ব্বস্ব বিসর্জন দয়াছেন । সকল ভুলিয়, পাশ্চাত্য বিপ্লববাদের নিশান উড়াইবার উন্মদিনীয় আমরা কি বলিব যে, শুধু শ্রমিক, এই-সব মূঢ় মান মূক মুখের অধিকারী শ্রমিকরাই সামাজিক ঐশ্বর্ঘ্যের একমাত্র শ্রষ্টা ? এ ভুলটাও কাল মার্কস করিয়াছিলেন । কোন কোন ধনী অর্থবলে ৪ রাজশক্তির সহায়তায় কোন কোন میجی ہمہع শ্রমিকের উপর অত্যাচার করিতেছে, একথা স্বীকার্য্য। কিন্তু সকল ধনীই অত্যাচারী, একথা মিথ্যা। কোন কোন শ্রমিক বা ধরা যাক সকল শ্রমিকই তাহাদের ন্যায্য পাওনা পায় না, কিন্তু স্তায্য পাওনা লাভের উপায় একটা আরও বড় অস্কায়ের স্বষ্টি নয়। ভারতবর্ষের ইতিহাসের আরম্ভ হইতে অনেক ধনীকে দরিদ্রের সহায় ও ন্যায়ের সেবক দেথা যাইতেছে । গৌতম, অশোক, আকৃবর প্রমুখ মহাধনীরাই এর উদাহরণ—সহস্ৰ সহস্র মন্দির, জলাশয়, অন্নছত্র ইত্যাদি এর সাক্ষী । আজ ভারতের ইতিহাস ও আদর্শ ভুলিয়া, অর্থনৈতিক সত্য অবহেলা করিয়া আমরা কি পাশ্চাত্যের মোহে ভুলিয়া মিথ্যাকে অবলম্বন করিব ? কাল মার্ক সের ছাত্রর স্বযোগ বুঝিয়া আজ ভারতে সমাগত—অল্পবুদ্ধি শ্রমিক তাহীদের পাল্লায় পড়িয়া ও তাহদের “অকাট্য” যুক্তির প্রভাবে আজ সমাজনীতিবিরুদ্ধ বিশ্বাসে হৃদয় বোঝাই করিতেছে । আমাদের এখন প্রয়োজন, অর্থনৈতিক শিক্ষার প্রচার ও তদনুসারে সর্বত্র কার্য্যারম্ভ করা । অ আশ্বিনের প্রবাসী আশ্বিনের প্রবাসীর সহিত শীঘুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের নূতন নাটক “রক্তকরবী” আদ্যোপান্ত প্রকাশিত হইবে । রবীন্দ্রনাথের “অচলায়তন” ও “মুক্তধারা”ও এইরূপে প্রবাসীর এক এক সংখ্যায় সমগ্র প্রকাশিত হইয়াছিল । বিজ্ঞাপনদাতাদিগের প্রতি ১ । বিজ্ঞাপনদাতাগণ লক্ষ্য করিয়া থাকিবেন, যে, কয়েক মাস হইতে প্রবাসীর বিজ্ঞাপন প্রবন্ধাদির মতই উৎকৃষ্ট কাগজে ছাপা হইতেছে। অক্ষর-সজ্জাও পূর্বপেক্ষ উংকৃষ্ট হইতেছে । ইহাতে আমাদের ব্যয বেশী হষ্টলেও বিজ্ঞাপনের মূল্য বাড়ান হয় নাই । ২ । আশ্বিনের প্রবাসী অন্যান্য সংখ্যা অপেক্ষা বেশী ছাপা হইতেছে। কিন্তু বিজ্ঞাপনের মূল্য সমান থাকিবে। বিজ্ঞাপন ১৫ই ভান্দ্রের মধ্যে দেওয়া চাই।