পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

მტe গলিত পদার্থসমূহকে মাটির স্তর ভেদ করিয়া পৃথিবীর বুক চিরিয়া আকাশে বহু উৰ্দ্ধে প্রক্ষিপ্ত করে, আর এই মুক্তির স্পন্দনে সমস্ত পৃথিবী কঁাপিয় উঠে। সাহিত্যের ভাষায় ইহাকেই ভূমিকম্প কহে । লোকলোচনের সীমার ভিতর যুগযুগ ধরিয়া পৃথিবীর যে ভাঙ্গা-গড়া চলিতেছে, তাহার অনেকখানিই এই ভূমিকম্পের দরুন। এই যে সেদিন জাপানে এত বড় ভূমিকম্পটা হইয়া গেল, তাহাতে কত হাজার-হাজার লোক মরিল, কত কোটি কোটি টাকার ধন-সম্পত্তি নষ্ট হইল, তাহার ইয়ত্ত নাই । অনেকেই অনুমান করেন, বহু যুগ পূৰ্ব্বে জাপান এসিয়া-মহাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল । তার পর হঠাৎ ভূমিকম্পের ফলে বর্তমান জাপান ও এসিয়ার মধ্যেকাল্প সমস্ত ভূখণ্ড ধসিয়া গেল এবং তাহার স্থান সমুদ্র-জলে পূর্ণ হইয়া জাপানকে বিচ্ছিন্ন করিয়া দিল । আর ছোট-খাটরকমের ভূমিকম্প ত জাপানে বারমাসে তের পাৰ্ব্বণের মত লাগিয়াই আছে । কত বড় একটা নগরী, তাহার সমস্ত সমৃদ্ধি, সমস্ত সভ্যতা-সমেত চিরদিনের মত মুহূৰ্ত্তে লুপ্ত হইয়া গেল। ১৮৮৩ খৃষ্টাব্দে ক্রাকাতোয়াতে ষে ছোট-খাটরকমের ভূমিকম্পটি হয়, তাহার ফলে এক বর্গমাইল-পরিমিত গোটা একটি পৰ্ব্বত ধূলি-মুষ্টির ন্যায় শূন্তে নিক্ষিপ্ত হইয়াছিল; প্রায় দুই হাজার মাইল দূরবর্তী স্থান হইতে এই কম্পনের ধ্বনি শ্রত হইয়াছিল ও দেড়শত মাইল দূরের দরজাজানালার কাচ ইহার প্রবাহের ধাক্কায় চুরমার হইয়া গিয়াছিল। দক্ষিণ-আফ্রিকায় জোহান্নেসবার্গ নগরের রেলষ্টেশনে ১৮৯৬ খৃষ্টাব্দে প্রায় ৫৫টন ( এক টন প্রায় ২৭ মণের সমান ) বিদারক জেলাটিন নামক একপ্রকার বিস্ফোরক দৈবাৎ সংঘর্ষণের ফলে বিদীর্ণ হইয়া যায় । বজ্ৰনিনাদে ও প্রচণ্ডকম্পনে সহরবাসীগণ শিহরিয়া উঠিয় উদ্ধে দৃষ্টিপাত করিয়া শুধু নিবিড় মেঘের ন্যায় পুঞ্জীভূত ধূমরাশির ভিতর হইতে উখিত একটি প্ৰজলিত অগ্নিশিখা দেখিতে পাইল । কিন্তু এত বড় সাংঘাতিক বিষ্ণুরণের ফলে অকুস্থানে মোট ৩০ শত ফুট দীর্ঘ, ჯ)(R ফুট શ્નનેજી "8 Woo ফুট গভীর একটি খাতের স্বষ্টি হইল ও চতুর্দিকে প্রায় ১০০০ গজ পরিমিত স্থানের প্রবাসী—জাখিন, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড বাড়ীঘর চুর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া গেল। মানুষের এই কৃত্রিম . বিস্ফোরকাদি প্রকৃতির বজশক্তির তুলনায় কত ক্ষীণ ! এইবারে একটি-একটি করিয়া বিস্ফোরকগুলির উপাদান, প্রস্তুত-প্রণালী ও তাহাদের ধৰ্ম্ম ( property ) সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিব । বারুদ ইহার উপাদান— at 516; oi ( potassium nitrate ) > & 5İ5İ R5:3İİ ( elıatcımal) > - Siol foot (sulphur ) উপরোক্ত পদার্থগুলি উত্তমরূপে গুড়া করিয়া উক্তপরিমাণে মিশ্রিত করিতে হয় ! কামান-গড়ার উপযোগী তাম-দস্তা-মিশ্র ধাতুকে অথবা তাম্রে নিৰ্ম্মিত ভিতরে ফল লাগানে বৃহৎ ঢোলে এই মিশ্রণ-কাৰ্য্য সম্পাদিত হয় । অতঃপর চালুনী দিয়া ছাকিয়া হাইড্রলিক প্রেস বা জল-পীড়ন-যন্ত্র দ্বারা চাপ দিয়া উহাকে একটি বৃহৎ তালে পরিণত করা যায় ও পরে উহা হইতে আবশ্বক-অমুযায়ী আকারবিশিষ্ট খণ্ড বারুদ প্রস্তুত হয়। মোটামুটিভাবে এই হইল ইহার প্রস্তুত-প্রণালী। কামান বন্দুক প্রভৃতি হইতে গুলি ছুড়িবার জন্যই সাধারণতঃ এই বারুদ ব্যবহৃত হইয়৷ থাকে। নলের ভিতরে প্রথমে খানিকটা বারুদ পূরিয়া গুলি ঠাসিয়া দিতে হয় । অতঃপর যেই পশ্চাৎদিক্ হইতে বারুদে আগুন দেওয়া হয়, অম্নি তৎক্ষণাৎ উহা জলিয়। গ্যাসে পরিণত হয় ও রাসায়নিক প্রক্রিয়াতে সে-সময় যে ভীষণ তাপ উৎপাদিত হয়, তাহা উক্ত গ্যাসকে বহুগুণে বদ্ধিত করে ও এই সম্প্রসারণের ফলে ভয়ানক চাপের স্বষ্টি হয়। সম্মুখে খোলা পাইয় গ্যাস গুলিটিকে সেই দিকে ঠেলিয়া দেয় ও উহা বিষম-বেগে সম্মুখে বহুদূরে নিক্ষিপ্ত হয়। কিন্তু বিস্ফোরক-বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এই বারুদের ব্যবহার অনেক কমিয়া গিয়াছে ও ধূমহীন বারুদ উহার স্থান অধিকার করিয়াছে। প্রথমতঃ এই বারুদ পোড়ানয় যে দুর্গন্ধের স্বষ্টি হয়, তাহ চারিদিক্কার বায়ুকে দূষিত করে ও গুলি-নিক্ষেপ-কারীকে বেষ্টন