পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্য। ] হঠাৎ বাহির হইতে অমিয় চীৎকার করিয়া বলিয়া উঠিল, “একি দিদি ! এখনো রেড হওনি, তুমি যাবেন। বুঝি ?” হিমানী বলিল, “না যাব কি আর! তুমি নিজে রেডী হও ত, আমার তার ঢের আগে হয়ে যাবে।” “তা আর হতে হয় না, মেয়েদের সাজ করতে কখনো পাচ ঘণ্টার কম সময় লাগে ?” বলিয়া অমিয় চলিয়া গেল ! • কাৰ্য্যকালে যদিও দেখা গেল, হিমানী প্রস্তুত হইয়া বাহিরে দাড়াইয়া, আর অমিয় তখনও একমনে চুল আঁচড়াইতেছে । সাবিত্রী রান্নার জায়গা হইতে মুখ বাহির করিয়া বলিলেন, “তোর সেই সিন্ধের শাড়ীটা পবৃলি না কেন মা, বড়মানুষের বাড়ী যাচ্ছিস ।” হিমানী বলিল, “ভারি ত এক ছাইয়ের সিস্কের শাড়ী, তাই উঠতে বসতে পরতে হবে । ওটা কম হ’লেও উপরি উপরি দশবার পরেছি। আমার স্থতি কাপড়ই ভাল ।” অল্পমূল্যের একখানি কালপেড়ে ঢাকাই শাড়ী ও সেইরকম পাড়-বসানো একটি হাতকাটা ব্লাউসেই তাহাকে এত ভাল দেখাইতেছিল যে, সাবিত্রী স্বীকার না করিয়া পারিলেন না, যে, তাহার ভাইঝিকে সুন্দর করিবার জন্য রেশম বা অলঙ্কারের প্রয়োজন হয় না । এমন সময় অমিয় ঘর হইতে বাহির হইয়া বলিল, “চল, চল, আর সিদ্ধ, পৰ্বতে হবে না, ঢের হয়েছে । যা না চেহারা, তা সাজ করলেও কিছু ভাল হবে না ।” হিমানী মুখ বাকাইয় তাহাকে এক তাড়া দিয়া সিড়ি দিয়া,নামিয়। চলিল । রাস্তায় নামিয়া অমিয় জিজ্ঞাসা করিল, “গাড়ী করব, না হেঁটেই যাবে ?" “এইটুকুৰু জন্তে আর গাড়ী চড়ে না, চল” বলিয়া হিমানী হঁাটিয়া চলিল । ( २ ) 歌 মৃণালের বাড়ী পৌছিতে যে সময়টুকু লাগে, ভাগ্যক্রমে তাঙ্গর শর্কর বৃষ্টি আসিল না। ভাই-বোনে -উৎসব-ক্ষেত্রে পৌছিয়া দেখিল, অভ্যাগতের দলে বসিবার ঘর প্রায় ভরিয়া উঠিয়াছে, বারাণ্ডা ও খাবার-ঘরও খালি নাই। সকলেই এধার ওধার ঘুরিয়া বেড়াইতেছে, ԳՅ> বসিয়া গল্প করিবার আগ্রহ কাহারও বিশেষ দেখ যাইতেছে না। অমিয় বলিল, “এঃ ! আমাদের সত্যি দেরি হয়ে গেছে, সব শেষে এসেছি দেখছি।’ তাহার দিদি বলিল, “সব আগে এসে বসে’ থাকা চেয়ে সব শেষে আসাই ভাল ।” বসিবার ঘরে ঢুকিতেই কমল ছুটিয়া আসিয়া তাহা গাল টিপিয়া ধরিয়া বলিল, “কি গো, বড় যে মা বেড়েছে, একেবারে শেষ মুহূৰ্ত্ত ছাড়া আসতে নেই মিঠু কতক্ষণ বসেছিল তোর অপেক্ষায়, আর কা চুল বাধা তার পছন্দই হয় না ।” . হিমানী মৃণালের জন্য একখানি বই উপহার লইয় আসিয়াছিল । সেটা যথাস্থানে পৌছাইয়া দিবার উদ্দেশ্নে সে বলিল, “মিছু কই, এখানে ত দেখছি না ?” “সে এখনো শোবার ঘরে বসে’ সাজ শেষ করছে খুব ভাল সাজ করে’ না বেরলে আজ যে তার বরে মান থাকৃবে না, তার সব বন্ধুরা আজ এসেছে।” মৃণালের ঘরে ঢুকিয়৷ হিমানী দেখিল তাহার সাজ সজ্জা প্রায় শেষ হইয়া আসিয়াছে । বিবাহের লার শাড়ী ও জাম। আজ আবার তাহার অঙ্গে উঠিয়াছে তবে গহনার সংখ্যা কিছু কম । বর নব্য যুবক, অলঙ্কার ভারাক্রান্ত ভাবটা বোধ হয় তাহার চোখে ভাল ঠেবে না । মৃণাল কাপড়-পরা শেষ করিয়া, একটি বহুমূল জড়োয়া কণ্ঠহার গলায় পরিতে ব্যস্ত ছিল । মোট সোনার হারের তলায় যাহাতে তাহার অপূৰ্ব্ব কারুকার্য চাপা না পড়ে বা ব্লাউসের উপর তাহা ঝুলিয়া না পড়ে ইহাই দেখিতে সে তখন মহাব্যস্ত । হিমানী ঘরে ঢুকিয়া বলিল, “বাপ রে ; তোর বি আবার আজ বিয়ে নাকি ? এ যে ক’নের সাজকেও হার মানায় ” মৃণাল সগৰ্ব্বে হাসিয়া বলিল, “তা ভাই উনি বললেন বিয়ের কাপড়গুলে; পৰ্বতে, না পরে আর কি করি } আর এই নেকলেস্ট। উনি সখ করে দিল্লী থেকে করিয়ে এনেছেন, আজ আমাকে দিলেন । এটা ত পবৃতেই হবে । আর এমন কি বেশী পরেছি ?” 尊 মৃণালের গায়ে কম করিয়া চারপাঁচ হাজার টাকা