পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

A8b.' “খোকা, একজন ভাল ডাক্তার ডাকৃতেই হবে, কাছে কেউ আছেন " " খোকা বলিল, “কাছে না থাক্ দূরে ত আছেই, কলকাতায় আবার ডাক্তারের ভাবনা। তবে “ফিট একটু মোটা-রকমের হবে। এখুনি যাব নাকি ?” তাহার দিদি বলিল, “একবার টেম্পারেচাবটা নিয়ে তবে যা, মুখের চেহারা দেখে’ ত মনে হচ্ছে, জর খুব বেশী ।” த 為 ধাৰ্ম্মোমিটারের সাক্ষ্যেও তাই দেখা গেল। আশঙ্কায় অভিভূত হইয়৷ হিমানী বলিল, “তুই এখুনি যা থোকা, বেশ ভাল ডাক্তার নিয়ে আয় ।” অমিয় বলিল, “বিনয়-বাবুকে একবার জিগগেষ করে যাব না?” ● , হিমানী বলিল, “জরের ঘোরে একেবারে কেমন যেন হ’য়ে রয়েছেন, ওঁকে এখন আর ডাকাডাকি * কোরো না ।” - খোকা চলিয়া গেল । ডাক্তার আসিলেন, যথাবিধি পরীক্ষা করিলেন, ঔষধ লিখিয়া দিলেন এবং অন্যান্ত ব্যবস্থা দিতেও ক্রটি করিলেন না। তিনি বিদায় হুইবার সময় অমিয় মৃদুস্বরে বলিল, *আপনার ভিজিটুটা ?” “সে হবে এগুন, তার জন্যে অত ব্যস্ত, কেন ? যেরকম দেখছি তাতে আমাকে আরো দু-চার বার আসতে হবে।” বলিয়। ডাক্তার চলিয়া গেলেন । সেদিন হিমানী যখন বাড়ী ফিরিল, তখন বেলা প্রায় প্রিহর। সমস্ত স্থখ শান্তি যেন তাহার পক্ষে জগৎ হইতে বিদায় লইয়াছিল। স্কুল হইতে সে এক সপ্তাহের ছুটি লইল, এ ছুটিটা তাহার পাওনাই ছিল। বাড়ীতে পিতা ও পিসির বিরক্তিকঠিন মুখ অবস্থাটা আরো অসত্ব করিয়া তুলিল, একমাত্র খোকাই নিৰ্ব্বিচারে দিদির পক্ষ অবলম্বন করিয়া তাহাকে সাহায্য করিতে লাগিল । বিনয়ের জুমুখ শীঘ্ৰ সারিবার.কোনো লক্ষণই দেখাইল না তৃতীয়বার ডাক্তার আসার পর অমিয় চুপিচুপি হিমানীNৈবুলিল, “দিদি, আর ওঁকে টাকা প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩১ ' ' [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড ন দেওয়া ভাল দেখায় না, এর পর ডাকৃতে লজ্জা করবে। তোমার কাছে টাকা আছে ?” হিমানী বলিল, “ওঁর ‘ফি কত ? আমার কাছে বিশেষ কিছু নেই।” অমিয় বলিল, “যোল টাকা করে । তা ছাড়া, ডিস্পেনসারীতেও গোট পনেরো টাকা ধার রয়েছে।” হিমানী শুল্কমুখে বলিল, “ওর অৰ্দ্ধেক টাকাও আমার কাছে নেই। আচ্ছা, তুই যা এই ওষুধটা নিয়ে আয়, আমি দেখি কোথা থেকেও জোগাড় করতে পারি কি না।” অমিয় চলিয়া যাইবার পর, সে কিন্তু ভাবিয়া কিছু কুলকিনারা দেখিতে পাইল না। তাহাদের দরিত্রের সংসারে অর্থের অনটন চিরকালই, একসঙ্গে পাচটার বেশী টাকা কখনও থাকিতে পায় না। বিনয়ের এই সাংঘাতিক অস্বখের মধ্যে অর্থের জন্য তাহাকে ব্যস্ত করা চলে না। বিশেষ সে যখন ডাক্তার ডাকিতে বলে নাই, হিমানী নিজেই ডাকিয়াছে। এ অবস্থায় কি করা যায় ? পাশের ছোট ঘরটাতে বিনয়ের লিখিবার পড়িবার আড্ডা ছিল, জিনিষপত্রও বেশীর ভাগ এইখানেই থাকিত। হিমানী তাহার হাতবাক্সটার কাছে গিয়া ইতস্ততঃ করিতে লাগিল। ইহার চাবী ত ঐখানেই রহিয়াছে ; খুলিয়া দেখিলে হয়, টাকাকড়ি কিছু আছে কি না। রীতিবিরুদ্ধ কাজ করিয়াই ত তাহার দিন কাটিতেছে, অন্তের অজ্ঞাতসারে তাহার বাক্স খোলাটাও না হয় তাহার অদৃষ্টে জুটিল। সংসারের কাছে খানিকটা অপরাধী তাহাকে সাজিতেই হইয়াছে, বাকি যেটুকু জাছে বিনয়ের জন্ত তাহাওঁ সে সহিতে পারিবে । চাৰী আনিয়া হাত-বাক্সট সে খুলি ফেলিল । উপরাংশে রাজ্যের আবর্জনা বোঝাই, ছেড়া কাগজ, ভাঙা কলকপেদিল, বোতাম, সেফটিপিন প্রচুর দেখা গেল, কিন্তু পাঁচ-ছ আনা পহু ভিন্ন আর বেশী অর্থের সন্ধান মিলিল না। হিমানী উপরে ডালাটা তুলিয়া ফেলিল। . . . . . . নীচে একটি মখমলের বাক্ষ্মণ হিমানী বিম্মিত হইয়া সেটি হাতে করিয়া তুলিতেই বাটা খুলিয়া