পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] ৭৪৯ । গেল। ভিতরে একটি জড়োয় নেকৃলেস, মৃণালের গলায় যেরকম দেখিয়াছিল, অবিকল সেই জিনিষ ছোট এক টুকরা কাগজে হিমানীর নাম লেখা, কাগজটা পিন দিয়া বাক্সের গায়ে আটকানো। 呜 হিমানীর দুই চোখ জলে ভরিয়া উঠিল। অম্বথের সময় কেন যে বিনয় ডাক্তার ডাকিতে বা ঔষধ খাইতে শুদ্ধ চায় নাই, তাঁহার কারণ বেশ স্পষ্ট করিয়াই সে বুবিল। বাক্সটা হাতে করিয়া অন্ধকার ঘরে সে অনেকক্ষণ চুপ করিয়া দাড়াইয়া রহিল। থানিক পরে হাতবাক্সের ডালা বন্ধ করিয়া সে আবার বিনয়ের ঘরে আসিয়া ঢুকিল। অমিয় ঔষধ আনিতে কেবলই দেরী করিতেছে, হিমানীর মন অসহিষ্ণু হইয়া উঠিতেছিল ; সে বিনয়ের মুখের দিকে চাহিয়া দেখিল, জরের ঝোকে-তাহার সমস্ত মুখ রক্তবর্ণ হইয়া উঠিয়াছে, নিশ্বাসও যেন আগের চেয়ে দ্রুত চলিতেছে। হিমর্মিীর বুকের ভিতরটা ভয়ে যেন কেমন করিতে লাগিল । বিনয়ের অসুখ যদি নাই সারে ? তাহা হইলে, জগতে আর কিসের আশায় সে বঁাচিয়া থাকিবে ? কিন্তু বাচিয়া যে থাকিতে হইবে, সে বিষয়ে তাহার সন্দেহও ছিল না। কারণ বাচিয়া যাহাদের কোনোই আনন্দ নাই, তাহাদেরই বাচাইয়া রাখিতে বিধাতার ম্বেন উৎসাহের সীমা থাকে না, ইহাই সে চিরকাল দেখিয়া আসিতেছে। T. অমিয় গোটা-দুই শিশি হাতে করিয়া ঘরে ঢুকিয়া তাহার চিপ্তা-স্রোতে বাধা দিল । বিনয়ের পাশে বলিয়া তাহাৰু গায়ের তাপ পরীক্ষা করিয়া, বলিল, “দিদি, ' টেম্পারেচার ত আরো উঠেছে। কি করব? দ্রাক্তারকে আবার খবর দুেব ?” - হিমানী বলিল, “তাই যা।” আবার অন্ধকার ঘরে একৃলা বসিয়া যত কাল্পনিক বিভীষিকার সতুি যুছেক্সালা। জরের ধোরে বিনয় এপাশ পাশ কঠিছিল, তাহার মুখ হইতে মাঝে মাঝে ক্ষক-একটা অস্ফুর্ট কাতরোক্তিও বাহির হইয়া আসিতেছিল। হিমানী সত্তাহার মাথার পাশে বসিয়া কপালের উপর হাত Aলাইতে লাগিল। বিনয় আরক্ত চোখ মেলিয়া একবার তাহার দিকে চাহিয়া দেখিল, তাহার" পর তাহার হাতের উপর জরতপ্ত মুখ রাখিয়া একটু যেন স্থির হইয়াই ঘুমাইয়া পড়িল । ডাক্তার আসিয়া ঔষধ ব্যবস্থা সবই বদল করিলেন ও রাত্রে রোগীর কাছে একজন লোক থাকিতে বলিয়া বিদায় হইলেন। অমিয় কলিল, “দিদি, আমিই থাকৃব এখন। মেস্ থেকে রমেশকে ডেকে আনব, সে আর আমি পালা করে রাত জেগে ওষুধ খাওয়াব এখন : হিমানীর শরীর সারাদিনের পরিশ্রম আর দুশ্চিন্তায় যেন ভাঙিয়া wপড়িতেছিল। সে ক্লাস্তকণ্ঠে বলিল, “আমায় তা হলে এবার বাড়ী রেখে আয়: তোর বন্ধুকে ডাক ততক্ষণ এখানে একটু বস্তুক।” যাইবার সমর হিমানী মখমলের বান্ধটি লুকাইয়া সঙ্গে লইয়া গেল। মুকুলের চিরকালই ঘুম হইতে উঠিতে দেরি হইত, বেলা আটট-নটার সময় সে সবে হাত মুখ ধুইয়া চা থাইতে বসিয়াছে, এমন সময় হিমানীকে ঘরে ঢুকিতে দেখিয়া সে বেশ খানিকটা অবাক হইয়া গেল। জিজ্ঞাসা করিল, “এমন প্লেজেন্ট, সাৰ্বপ্রাইজ, কেন অকস্মাৎ ?” হিমানী জিজ্ঞাসা করিল, “একটা জিনিষ কিনৃবি কি না, তাই জানতে এলাম।” 象 সমস্ত মুখ কৌতুহলে ভরিয়া তুলিয়া মুকুল বলিল, “কি জিনিষ আগে দেখি ?” জিনিষটা দেখিয় তাহার বিস্ময় বাড়িল বই কমিল না, জিজ্ঞাসা করিল, “এ তুই বেচে দিচ্ছিস ? কবে গড়ালি ? হিমানী বলিল, “সম্প্রতি একটু টাকার দরকার, তাই বেচ ছি, আবার স্ববিধা হ’লেই গড়াব।” মুকুলের গহনাটা এত বেশী পছন্দ হইয়াছিল, যে, সে আর বেশী বাক্যব্যয় না করিয়া কেনার কাজটা সারিয়া ফেলিল । যদিও গরীবের মেয়ে হিমানী কোথা হইতে এমন বহুমূল্য গহনা গড়াইল, তাহা জানিবার জন্য কৌতুহলে তাঁহার মন ভরিয়া উঠিয়াছিল, কিন্তু হিমানী এত তাড়াতাড়ি চলিয়া গেল, ঘূে, বিশেষ কিছু জিজ্ঞাসা করিবারও তাহার সময় হইল না। ডাক্তারের ভিজিটের টাকা জিনেীর বাকি