পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা] . বাংলাদেশে ক্ষয়কাশের প্রাদুর্ভাব sti সম্প্রতি কলিকাতায় একটি বক্তৃতায় ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় বলিয়াছেন, বাংলা দেশে ক্ষয়কাশে মৃত্যুর সংখ্যা ভীষণ হইরা উঠিয়াছে ; প্রতিবৎসর এই রোগে এক লক্ষ লোক মরিতেছে, থাৎ মোটামুটি ঘণ্টায় ১২ জন মরিতেছে। এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়া তিনি সৰ্ব্বসাধারণের উপকার করিয়াছেন। এই রোগের বিস্তৃতির কারণ কি-কি, এবং কি উপায়েই বা ইচ্ছার প্রাদুর্ভাব কমাইতে পারা যায়, বাংলা ও ইংরেজী সমুদয় খবরের কাগজে এবং নানা বক্তৃতায় তাহার আলোচনা হওয়া উচিত । গবর্ণমেণ্টের এবং সমুদয় ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ডের, মিউনিসিপালিটির ও গ্রাম্যইউনিয়নের এই বিষয়ে মন দেওয়া উচিত । রেলওয়ে বোর্ডে ভারতীয়ের অভাব • ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় এক প্রশ্নের উত্তরে গবর্ণমেণ্ট, পক্ষ হইতে জানান হইয়াছে যে, উপযুক্ত কোন ভারতীয় লোক না পাওয়াতেই রেলওয়ে বোডের মেম্বররূপে কোন ভারতীয়কে নিযুক্ত করা হয় নাই ! জবাবটা ভিত্তিহীন । শ্ৰীযুক্ত সাতকড়ি-ঘোষের রেলওয়েসম্বন্ধে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা খুব বেশী। তাহার রচিত রেলওয়ে বিষয়ক বহিগুলি রেলওয়ে বিভাগের ও অন্যান্য বিভাগের কর্তৃস্থানীয় ইংরেজরাও প্রামাণিক বলিয়া স্বীকার করিয়াছেন। বড়লাটু হাডিং তাহার ভূয়ী প্রশংসা করিয়াছিলেন। তাহার রেলওয়ে-বিষয়ক জ্ঞান বিশেষজ্ঞের দ্বারা “আনরাইভ্যাল্ড° বা অসমকক্ষ বলিয়া বর্ণিত হইয়াছে তথাপি, তিনি ইউরোপীয় নহেন বলিয়াঁ তাহার গুণের যথোপযুক্ত আদর হইতেছে না ! @ জাতীয় আত্মকর্তৃত্ব ও দেশরক্ষা • ইংরেজদের মুখে একটা তর্ক শুনা যায় ( এবং ইংরেজভক্ত কোন-কোন ভারতীয়ও বলিয়া থাকেন) ভারতীয়ের জাতীয় আত্মকর্তৃত্ব চায়, অথচ ইচ্ছা করে বিবিধ প্রসঙ্গ—জাতীয় আত্মকর্তৃক ও দেশরক্ষা b&ని যে, বহিঃশত্রু ও অন্তঃশত্রু হইতে দেশ-রক্ষার কাজ ইংরেজ করুক ; অর্থাৎ তাহারা জীবনের মুখ ও ঐশ্বর্ঘ্যের স্বখ সবটুকু চায়, কিন্তু জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করিবার সামর্থ্য তাহাদের নাই । ইহার জবাব দু-রকম। ভারতীয়দিগকে সামরিক নেতৃত্বে অক্ষম ইংরেজষ্ট করিয়াছে। সিপাহী-বিদ্রোহের সময়েও গোরা সৈন্যের ভারতীয় নেতা ছিল । তাহার পর দেশী সিপাহীদের .নেতৃত্ব পর্য্যন্ত ইংরেজদের হাতে গিয়াছে । এখন “পিওিরক্ষার” জন্য যে সামান্য ২১ জন ভারতীয়কে সামরিক অফিসার করা হইতেছে, তাহাতে ভারতবর্যের সৈনিক বিভাগ কখনও পূর্ণমাত্রায় ভারতীয়দের দ্বারা চালিত হইতে পরিবে না । স্বতরাং ইংরেজের যে-অবস্থা ঘটাইয়াছে ও যেঅবস্থা কায়েম রাখিতে এখনও সচেষ্ট, তাহার জন্ত আমাদিগকে দোষী করা, ভণ্ডামি ভিন্ন আর কিছু নয়। দ্বিতীয় জবাব এই, যে, ভারতবর্য যে, দেশ-রক্ষার ভার অনেকটা ইংরেজ সেনাপতিদের হাতে থাকা সত্ত্বেও অসামরিক অন্যান্য বিষয়ে আত্মকত্ত্ব ত্ব চাহিতেছে, তাহার নজীর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ইতিহাসেই আছে। কানাডাকে ও অষ্ট্রেলিয়াকে যখন দায়িত্বপূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হর, তখন সেখান হইতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সৈন্যদল সরাইয়া লওয়া হয় নাই ; কানাডার ও অষ্ট্রেলিয়ার আভ্যন্তরীণ রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে যখন বিলাতের গবর্ণমেণ্টের কোন ক্ষমতা রহিল না, তখনও ঐ বিলাতী গবর্ণমেণ্টের সৈন্যদল ঐ দুই উপনিবেশকে (বিলাতী গবর্ণমেন্টরই ব্যয়ে ) রক্ষা করিবার জন্য তথায় অবস্থিত ছিল । অথচ আমাদের দেশে আমাদেরই ব্যয়ে দেশী সিপাহী ও ইংরেজ সৈন্যকে ইংরেজ সেনাপতির অধীনে কিছু-কাল দেশরক্ষা করিতে হইবে বলিয়া আমাদিগকে অসামরিক ও আভ্যন্তরীণ বিষয়ে আত্মকর্তৃত্ব দেওয়ায় আপত্তি হইতেছে। আমরা চিরকালের জন্য এইরূপ অপমানকর ও অসহায় অবস্থায়, গ্লাকিতে চাহিতেছি না । নিজেরাই সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীল হইবার জন্য সময় ও ক্ষমতা চাহিতেছি । আমাদের হাতে অন্য বিষয়ে আত্মকত্ত্ব ত্ব