পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহা আমরা অনেক-বার বলিয়াছি । ته وليسرا না আসিলে আমরা, দেশ-রক্ষা বিষয়েও প্রস্তুত হইতে , পারিব না । ইংরেজরা আমাদিগকে প্রস্তুত হইবার ক্ষমতা ও সুযোগ দিতে চান না, অথচ আমাদের অসহায়তা ও অসামর্থ্য বিষয়ে বিদ্রুপ করিতেও ছাড়িবেন না। কানাডা ও অষ্ট্রেলিয়ায় প্রধানতঃ ইংরেজদের জাতভাই খৃষ্টিয়ান ও শ্বেতকায় লোকেরা বাস করে । এইজন্য ঐ দুই উপনিবেশ-সম্বন্ধে বিলাতের গবর্ণমেণ্ট যে-নীতি অবলম্বন করিয়াছিলেন, ভারতবর্ষ-সম্বন্ধে সে-নীতি অবলস্থিত না হওয়াই মানষ-সভ্যতা ও মানব-প্রকৃতির বর্তমান অবস্থায় স্বাভাবিক। তথাপি যে আমরা ঐ দুই দেশের নজীরের উল্লেখ করিলাম, তাহার কারণ এই, যে, ইংরেজ জাতি, বিলাতী গষণমেণ্ট এবং ভারতের ব্রিটিশ গবর্ণমেণ্ট বলিয়া থাকেন, যে, জাতিধর্মের বিচার না করিম ভারতবর্ষ সম্বন্ধে ন্যায়ামুমোদিত নীতিই অবলম্বিত হইয়া থাকে। অধিকন্তু, মহারাণী ভিক্টোরিয়ার ঘোষণা-পত্রেও লেখা আছে, যে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সকল লোকের প্রতি সমান ব্যবহার হইবে—যদিও এই সমান ব্যবহার ইংরেজ রাজপুরুষদিগকে ও অন্য ইংরেজদিগকে করাইবার ক্ষমতা মহারাণী ভিক্টোরিয়ার ছিল না, তাহার ংশধরদেরও ছিল না ও নাই । ● বিলাতী কুাপড় বর্জন বিলাতী কাপড় ব্যবহার না করিয়া দেশী কাপড় ব্যবহার করিলে নানাপ্রকারে দেশের উপকার করা হয়, কাপাসের চাষ এদেশে অন্য কোন দেশ হইতে আমদানী করা হয় নাই, ইহা ভারতের আদিম জিনিষ ; বরং যতদূর জানা গিয়াছে তাহাতে ইহাই মনে হয়, যে, কাপাসের চায ভারতবর্ষ হইতেই অন্য সব দেশে নীত হইয়াছে। ভারতে প্রচুর ,তুলা হয়, আরওঁ বেশী হইতে পারে। তাহা হইতে মৃত কাটিবার এবং ঐ স্থত হইতে কাপড় বুনিবার নৈপুণ্যও আমাদের দেশে যথেষ্ট-সংখ্যক লোকে অর্জন করিতে পারে, স্বতরাং কাপড়ের জন্য অন্য দেশের উপর নির্ভর করা আমাদের পক্ষে লজ্জার বিষয়। আমাদের সকলেরই যে দেশী কাপড় ব্যবহার করা প্রবাসা—আশ্বিন, ১৩৩১ { ২৪শ ভাগ, ১ম থও উচিত, তাহা বুঝাইবার জন্য এবং এই কৰ্ত্তব্যের প্রতি সৰ্ব্বসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করিবার নিমিত্ত সভা আহ্বান করা, তথায় বক্তৃতা করা, দলবদ্ধ হইয় পতাকা লইয়া রাস্তায়-রাস্তায় গান করা, কাপড়ের দোকানেম সম্মুখে দাড়াইয়া ক্রেতাদিগকে কেবলমাত্র দেশী কাপড় কিনিতে অনুরোধ করা ও তাহার অমুকুল যুক্তি প্রদর্শন করাএইপ্রকার নানা চেষ্টার বিরোধী আমরা নহি এইরূপ চেষ্টার প্রয়োজন আছে । তাহার দ্বারা যত বেশী দেশী কাপড় বিক্ৰী হইবে, ততই মঙ্গল । কিন্তু আমাদের বক্তব্য এই, যে, কেবল এইপ্রকার উপায়ে ভারতবর্ষের সৰ্ব্বসাধারণকে স্বদেশীবন্ত্রপরিহিত করা যাইবে না ; আরও বেশী তুলা, স্থতা, কাপড় ভারতে উৎপাদন করতে হইবে। যাহারা কেবলমাত্র চীংকার করিতেছেন, এইজন্যই আমরা তাহাদের সমালোচনা করিয়াছি । চীৎকার করা সোজা কাজ, তাহাতে বাহবাও পাওয়া যায়। কিন্তু સ চীৎকারে স্থায়ী ফল হইবে না, এবং আমাদের উদ্দেশ্যও সিদ্ধ হইবে না। স্বরাজ্যদল কর্তৃক তাড়াতাড়ি একটা খাদি-সমিতি গঠন করিয়া খাদি-প্রদর্শনী করিলেও প্রমাণ হইবে না যে, তাহাদের দ্বারা বস্ত্র উৎপাদনের কাজ বরাবর হইয়া আসিতেছে। বঙ্গ-বিভাগের সময় । দেশী কাপড়ের সপক্ষে সভা, গান প্রভৃতি এখনকার চেয়ে অনেক বেশী হইয়াছিল, কিন্তু তাহাতে কোন স্থায়ী ফল হয় নাই । যাহা করিব বলিয়া আমরা আস্ফালন করি, তাঙ্গ করিতে না-পারা লজ্জার বিষয় ত বটেই, অধিকন্তু বার-বার বিফলপ্রযত্ব হইলে আমরা নিজেই নিজেদের উপর বিশ্বাস হারাইব, নিরুৎসাহ হইয়া পড়িব ; স্বতলাং ভবিষ্যতে কোন বড় কাজে হাত দিবার সাহস এবং তাহা সম্পন্ন করিবার সামর্থ্য আমাদের থাকিবে না । অতএব বর্তমান চেষ্টা যাহাতে বিফল না হয়, তাহার উপায় অবলম্বন করিতে হইবে,--যথেষ্ট তুলা, স্বতা ও বস্ত্র উৎপাদনে মন দিতে হইবে । মজুরদের চা-বাগান পরিত্যাগ " আসামের অনেক চা-বাগান হইতে আবার বিস্তর মজুর চলিয়া আসিতে আরম্ভ করিয়াছে । ইহার প্রকৃত గా * *