পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سواoج ক্ষেপণ বলা হয়। স্বর্ণর লহরকে গুণ বলিত। এতদ্ভিন্ন নিরেট অথবা শূন্তগর্ভ বিবিধ মালা তৈয়ারী হইত, তাহাকে “ক্ষুদ্র' বলা হইত। স্বর্ণকারগণকে স্বর্ণ দিলে সেই পরিমাণ রাজমুদ্রাও প্রস্তুত করিয়া দিতেন ; সাধারণ লোকও এইরূপ স্বর্ণবিনিময়ে স্বর্ণকীরগণের নিকট হইতে মুদ্র গ্রহণ করিতে পারিতেন । স্বর্ণকারগণ এইজন্ত রাষ্ট্রের অধীনে বিশেষ তত্ত্বাবধানে নিযুক্ত হইতেন। শুদ্রকের মৃচ্ছকটিকে এক জন মণিকারের বিপণিবর্ণনায় আমরা মুক্ত, হীরক, মণিমাণিক্য, পদ্মরাগমণি, প্রবাল, গোমেধ, বৈদূৰ্য্যমণি প্রভৃতির এবং স্বর্ণে খচিত বিবিধ মণি-মুক্তার কারুকার্যের উল্লেখ পাই। বিভিন্ন অলঙ্কারের বৈশিষ্ট্যবিচারে ইহার উপাদান, দেশ কাল ও পাত্রভেদে ইহার ঐতিহাসিক ভিত্তি ও সংস্কৃতির কথা বিশেষভাবে চিন্তা করিতে হয় ; শিল্পতত্ত্বের সঙ্গে শিল্পের উপাদান বিশেষভাবে সংশ্লিষ্ট ; যে দ্রব্য বা পদার্থ হইতে যে অলঙ্কার প্রস্তুত হয়, তাহর সঙ্গে সেই অলঙ্কারের মৌলিক যোগ রহিয়াছে। কর্দম অথবা পাথরে যে কারুকার্য্য করা হয়, তাহার সঙ্গে নিশ্চয়ই স্থতার কারুকাৰ্য্যের পার্থক্য রহিয়াছে। প্রত্যেক কারুকার্য্যেই একটি ছন্দ ও একটি স্তুর রক্ষিত হয় ; তাহ দেখিলেই শিল্পীর রুচি ও সংস্কৃতির আভাস পাওয়া যায় । কাব্যেও অলঙ্কারের ছড়াছড়ি । পুরুষরাও নানাবিধ অলঙ্কার পরিধান করিত। কয়েকটি উদাহরণ দিতেছি। মেঘদূতের যক্ষ “কনকবলয়ন্ত্রংশরিক্তপ্রকোষ্ঠ”—গ্রকোষ্ঠ হইতে তাহার কনকবলয় লষ্ট হইয়াছে। আবার ভাল কাজ করিলে তাহার পুরস্কারের জন্ত এগুলি দানও করা হইত। চুরুিদত্ত কর্ণপূরককে পুরস্কার দিতে উদ্যত হইলেন। পূৰ্ব্বে তাহার ধন ছিল, তখন গহনা পরিতেন। এখন অদৃষ্টের পরিহাসে তিনি নিঃস্ব,—কিন্তু তাহার মনে নাইতোহার অঙ্গে ভূষণ নাই পূৰ্ব্ব অভ্যাসবশতঃ শীঘ্ৰ অলঙ্কার খুলিয়া দিতে গেলেন। কিন্তু অঙ্গের যেখানে যেখানে অলঙ্কার ধারণ করা হয়, সেই সেই স্থানে হাত দিয়া দেখিলেন—আভরণ নাই। তখন ক্লিপার হল নিবাস উত্তী নিক্ষেপ করিলেন।

    • zvisit-{19}

S98S মুদ্রারাক্ষসে দেখা যায়, রাক্ষস অলঙ্কার পরিয়া মলয়কেতুর নিকট যাইতেছেন। পৰ্ব্বতকও এই অলঙ্কারগুলি পরিতেন । রাক্ষস নিবেদন করিতেছেন—“উচ্যতাং শকটদাসঃ । যথা পরিধাপিত কুমারেণাভরণানি বয়ম্। তন্নযুক্তমনলগ্নতৈঃ কুমারদর্শনমমুভবিভুমূ। অতো যত্তদলঙ্করণত্ৰয়ং ক্রীতং তন্মধ্যাদেকং ীিয়তাম্।”—শকটদাসকে বল, কুমার আমার অলঙ্কার পরিয়াছেন ; অলঙ্কার না পরিয়া কুমীরের সহিত সাক্ষাৎ করা অনুচিত। সুতরাং যে তিনটি অলঙ্কার কেনা হইয়াছে তাঁহাদের মধ্যে একটি যেন পাঠাইয়া দেন । “রসাকর” একখানি অতি প্রাচীন গ্রন্থ। মল্লিনাথ মেঘদূতের টীকায় এই গ্রন্থ হইতে বচন উদ্ধৃত করিয়াছেন। মল্লিনাথকৃত একটি বচন এই— কচধাৰ্য্যং দেহধার্যাং পরিধেয়ং বিলেপন।। চতুধর্ণ ভূষণং প্রাহুঃ স্ত্রণামস্কচ্চ দেশিকম। —উত্তরমেঘ, ১৩ গ্লোকের টীকা এই গ্রন্থের মতে রমণীদিগের অলঙ্কার চতুবিধ ( ১ ) ‘কচধাৰ্য, অর্থাৎ যাহা মস্তকে ধারণ করা হয়, (২ ) ‘দেহধাৰ্য্য—অঙ্গশোভ অলঙ্কার, (৬) পরিধেয়’— বস্ত্রাদি, (৪) 'বিলেপন , কস্তুরী প্রভৃতি। ভিন্ন ভিন্ন দেশের বিশেষ বিশেয অলঙ্কার ‘দেশিক’ নামে অভিহিত । সংস্কৃত সাহিত্যে দেখা যায় তখন নুপুর, বলয়, কাঞ্চী, হার ও কুণ্ডলের খুবই প্রচলন ছিল। রাজশেখরের ‘কপূরমঞ্জরীতে পাই— মরগ অমঙ্গীয়জুঅং চরণে সে লস্তিআ বঅসূসাহিং । ভীএ নিঅম্বফল এ শিবেসি আ পঞ্চরাজ মণিকঞ্চী । দি৷ বলঅ বলিও কয়কমল পট্টশাল জুমলম্বি।” —ব্যস্তর চরণে নুপুর পরাইয়া দিল। নিতম্বফলকে পদ্মরাগমণির কাঞ্চী নিবেসিত হইল। করকমলে বলয়, কণ্ঠে মুক্তাহার দেওয়া হইল, আর কর্ণে কুণ্ডলযুগল স্থাপিত হইল । কপুরমঞ্জুরীর অন্তস্থানেও পাওয়া যায়-সুন্দরীর হিমোললীলার আন্দোলনের সহিত তাহার মণিনুপুর রণিত হইতেছে, হার ঝন ঝন্‌ করিয়া বাজিতেছে, মেখলার কিঙ্কিণী কশিত হইতেছে, চঞ্চল বলয়ের মধুর মিনাদ শ্রত হইতেছে। তখনকার দিনে সুচতুর স্বর্ণকারদের দক্ষতাও লক্ষণীয়। মৃচ্ছকটিকের চতুর্থ অন্তে ইহার বেশ আভাস পাওয়া যায়। শিল্পিগণ বৈষ্ণুর্য, মৌক্তিক, প্রবাল, পুষ্পরাগ, ইক্রনীল,