পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$$8 5&istolo ఏ98S স্ত্রী-কণ্ঠের স্বর। কণ্ঠস্বর আর্ক ব্যাকুলত । ঘামিনী মাথার কাছে টিপায়ে-রfথা মোমবাতি ও দেশলাই দিয়া আলো জাগিয়া দরজা খুলিয়া দিল খুলিয়া দিয়া ডাকিল, “কে ? কি বলছো ।” সড়ি পাইয়া স্ত্রীলোকটি তাহার ঘরের দিকে আগাইয়া আদিল যামিনী দেখিয়া চিনিল, ও-বাড়ীর দাদী । যাহকে প্রায়ই দে সদর দরজা খুলিয়া বাতায়াত করিতে দেখিয়াছে । “কি হয়েছে ?” “সর্বনাশ হয়েছে বাৰু। বাড়িতে দাঙ্গ হয়েছে । দিদিমণির মাথায় ছুরি মেরে-“আর কি বলব বাৰু? সে সব নোঙর কথা । ঝগড়া-ঝাঁটির পর কে কোন দিকে পালিয়েছে । এক বাড়িতে কি করব ভেবে পাচ্ছি নে । এক জন ডাক্তার ডাকা ত দরকার । কিন্তু কি করব, একলা তাকে ফেলে রেখে কোথায় যাব ? এদিকে ডাক্তাব ডাকতে বেশীক্ষণ দেরি হ'লে হয়ত ওনাকে বাচান যাবে না।” ঘামিনী কিছুকাল ভাবিয়া কহিল, “তুমি একটু দাড়াও, দেখি আমি কি করতে পারি।” নিখিলকে ডাকিয়া উ,াইরা সে সমস্ত বৃত্তাস্ত বলিল । নিখিল গেৈয়র কাপড়টা টffনয়া লইয়া কহিল, “চল । বিপদের সময় আর কোন কথা ভাবতে নেই। একটা ডাক্তার ডাকিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা ক’রে দিয়ে চলে আসিব ।” সিড়ি দিয়া উঠিয়া দোতলার বড় ঘরে আসিয়া সকলে দেখিল মেঝেময় ফরাস পাতা । দলিত ফুলের মালায়, পিঙ্গুরেটের পোড়াটুকরায় সমস্ত জায়গাটা লণ্ডভণ্ড । একধার সোফার উপর মেয়েটি মুদিত চক্ষে গুইয়া আছে । জ্ঞান আছে কি না ঠিক বোঝা গেল না, রগের পাশে কালশিরার স্পষ্ট দাগ । নিখিল দুয়ারের কাছে আসিয়া চুপি চুপি কহিল, “ঘরের মধ্যে যেতে আমার ঘুণ বোধ হচ্ছে। আমি চললুম। একটা ডাক্তার ডেকে এনে দিচ্ছি। ততক্ষণ তুমি বারানায় ব’স ” নিখিল চলিয়া গেল। যামিনী বাহিরে বলিয়া রহিল । কৃষ্ণপক্ষের রাত্রি—অন্ধকার । আকাশের তারাগুলি যেন কাহার অনিমেষ দৃষ্টির মত স্থির হইয়া চাহিয়া আছে । সেই দিকে তাকাইয়া সে আপনার চিস্তার মধ্যে তন্ময় হইয়া গিয়াছে। দাসী পিছনে আসিয়া মুচুস্বরে কছিল, “কই ডাক্তার বাবু ত এখন এলেন না । ওঁর কি আর জ্ঞান হবে না ?” ঘামিনী তাঁহাকে ভয়ে অভিভূত দেখিয়া কহিল, "চল ভিতরে গিয়ে দে:থ আদি গে।” সোফার পাশে একটা টুল লইয়া গিয়া সে বসিল । দাসীকে বলিল, “তোমাদের বাড়িতে যদি গোলাপজল থাকে নিয়ে এল। অfর অমনি একটা হাত পাখীও ।” দাসী প্রথিত জিনিষপত্র খোজ করিয়া আনিতে গেল। ঘরের মধ্যে উজ্জ্বল অলো । সেই বিমথিত, বিশৃঙ্খল কক্ষের মাঝে নিম্পন নারীমূৰ্ত্তির দিকে সে ভাল করিয়া চাহিয়া দেখিল। কী সুন্দর মুথ ! সুকুমার ললাটখণ্ডটুকুতে কি অসহায় করুণতা ! সমস্ত মুখ বিবর্ণ। ইহারই মুথর দিকে তাকাইয়া কে বলিতে পারে দিন কাটে ইহার নি:শব্দ গ্রানিতে, রাত্রি যাপন হয় প্ৰেমত্ত লালসার মাঝে ; দাসী আসিয়া মাথায় গোলাপজলের পটি দিয়া পাখা করিতে লাগিল। যামিনী তাহার হাতের মণিবন্ধ স্পর্শ করিয়া দেখিল নাড়ী ক্ষীণ । মিনিট পাঁচ-ছয় পরে সে চোখ খুলিয়া চাহিল ৷ শৃষ্ঠ অর্থহীন দৃষ্টি। বাড়ির গেটের কাছে একটা মোটরের হর্ণ বাজিতে লাগিল । দিড়ির অলোটা জালিয়া দিয়া দাসী কহিল, “ওই যে ডাক্তারবাবু এসছেন।” ডাক্তার অসিয়া কয়েকটা বলকারক ঔষধ লিখিয়া দিয়া গেলেন । খানিকট গরম দুধে বাগ হইতে কয়েক ফেf ব্র্যাণ্ডি মিশাইয়া পান করিতে দিয়া আঘাত পরীক্ষা করিয়া কহিলেন, “তেমন কিছুই নয়। হঠাৎ শক্‌ পেয়ে এতক্ষণ জ্ঞান ছিল না --- অজ্ঞে, না । রাত্রিতে আমি বত্রিশ টাকাই নিই।” যামিনী তাহার পাস হইতে দশ টাকার চারিধান নোট বাহির করিল। নিখিল সেইদিকে চাহিয়া ভ্ৰকুঞ্চিত করিল। সোফা হইতে মেয়েটি ক্ষীণশ্বরে কি কহিল ঠিক শোনা গেল না। ডাক্তার পকেট হাতড়াইয়া কছিলেন, “আমার কাছে চেঞ্জ নেই ।” নিখিলের দিকে চাহিয়া কহিলেন, “আপনি টকিটা আর ওষুধ কয়েকটা নিয়ে যান আমার ডিম্পেনসারী থেকে । ওঁর মে-রকম অবস্থা, অ’জ রাfত্তরেই দু-দাগ ওষুধ পড়া চাই।” নিখিল নিতান্ত বিরক্ত হইয়া তঁহীর সঙ্গে বাহির হইয় গেল ।