পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SR.の প্রায় তিন ঘণ্টার পথ। সাধারণ টেনে শুধু যাইতে তৃতীয় শ্রেণীর ভাড়া ৪৮ লিরা । কিন্তু রবিবারের এই বিশেষ টেনে রোম হইতে নেপলস্ যাতায়াতের ভাড়া মাত্র ১৮ লিরা। সকালবেল উঠিয়া এইরূপে একটি বিশেষ ট্রেন ধরুন, যেস্থান আপনার পছন্দ হয় সেইখানেই যান (পূৰ্ব্ব হইতেই খবরের কাগজে টুেন ছাড়িবার সময় ভাড়া ও স্থানের নাম ছাপাইয়া দেওয়া হয় ), সারাদিন আনন্দে কাটাইয়া রাত্রে ১১টা ১২টার মধ্যে ফিরিয়া আসুন। এজন্য আপনার পকেট বেশী হাল্কা হয় না, অথচ আপনি স্তৃপ্তম মনে ফিরিয়া আসেন I মুসোলিনী রোমানদিগকে যে-সকল সুন্দর জিনিষ উপহার দিয়াছেন, তাহার মধ্যে সকলের চেয়ে সেরা ও সুন্দর উপহার হইতেছে রোমের লি দা বা সমুদ্রতীর । রোম সমুদ্রতীর হইতে মাত্র ১৫ মাইল দূরে । কিন্তু এত দিন রোমের সমুদ্রতীর বলিয়া কোন কিছু ছিল না। মাত্র কয়েক বৎসর আগে তাহার স্বষ্টি হইয়াছে। এখন এষ্ট সমুদ্রতীর রোমানদিগের পক্ষে গ্রীষ্মের সন্ধা কাটাইবার প্রিয় স্থান হইয়া উঠিয়াছে। রোম হইতে সমুদ্রতীর পর্যন্ত ইলেকট্রিক রেলওয়ে আছে I' ট্রেনে আধ ঘণ্টার পথ। ট্রেন প্রতি দশ মিনিট অস্তুর ছাড়ে। মোটরে যাওয়ার জন্ত একটি বিশেষ মোটর রোডও আছে। রাত্রে অসংখ্য দীপমালায় যখন এই পথ আলোকিত হয়, তখন মনে হয় স্বর্গের পথ ধরিয়া চলিয়াছি । স্নান করিবার জন্ত চমৎকার বন্দোবস্ত আছে। ইচ্ছা হয় আপনি স্নান করিতে পারেন কিংবা কাফেতে বসিয়া বাজনা শুনিতে পারেন ও সমুদ্রের হাওয়া সেবন করিতে করিতে তরঙ্গের খেলা ও স্নানার্থীদের দৃশু দেখিতে পারেন। জনসাধারণের কাছে রোমের এই সমুদ্রতীর অস্তিয়া নামে পরিচিত। প্রকৃত অস্তিয়া এখান হইতে খানিকট দূরে । প্রাচীন রোমান যুগের ধ্বংসাবশেষে ভরা। সেই মুদূর অতীতে অস্তিয় ছিল রোমের বাণিজ্য ও ফৌজ বন্দর। কিন্তু কালের অগ্রগতির সঙ্গে সমুদ্র দূরে সরিয়া যায়। এই অপসরণের ফলে যে ভূখণ্ডের উদ্ভব হইয়াছে তাহারই উপর নূতন অস্তিয়া নিৰ্ম্মিত। সেদিন ছিল রবিবার। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী ক্রমাগত ৭৫ গ্ৰবাসী%• ఎ983 মানসিক পরিশ্রমের ফলে মাথাটা ঝিম ঝিম করিতেছিল। কি করিব ভাবিয়া না পাইয়া কোটটা গীয় দিয়া রাস্তায় বাহির হইয়া পড়িলাম। রাস্তা তখন জনবিরল। কদাচিৎ কোন পুরুষ কিংবা নারী যাইতেছিল। তখনও বহিরে যাইবার সময় হয় নাই । উদগুহীনভাবে কিছুক্ষণ এদিক-সেদিক ঘুরিতে ঘুরিতে হঠাৎ মাথায় আসিল সমুদ্রতীরে গেলে মন্দ হয় না । তৎক্ষণাৎ টমে চাপিয়া বসিলাম ও আধঘণ্টার মধ্যে সেন্ট পলস্ গেট ষ্টেশনে পৌছিলাম। এই ষ্টেশন হইতে অস্তিয়ার টুেন ছাড়ে। সেণ্ট পলের গির্জার কাছে বলিয়া ষ্টেশনের নাম সেণ্ট পলস্ গেট। এই গির্জাটি রোমের একটি অপরূপ সুন্দর অট্টালিকা । সেণ্ট পিটারের গির্জার খ্যাতি বেশী, কিন্তু এই গির্জার গঠনশ্ৰী অধিক চিত্ততোষিণী । সেণ্ট পিটারের গির্জা বৃহদায়তন ও জাকজমকে ভরা ; এই আয়তন ও জাকজমক মনকে অভিভূত করিয়া ফেলে। ইহা পৃষ্টান ধৰ্ম্মের উপর প্যাগান প্রভাবের পরিচায়ক । রেনাসসের যুগে প্যাগানিজমের যে বীজ ইটালীর উর্বর ক্ষেত্রে উপ্ত হইয়ছিল এই গির্জা তারই একটি ফল। কিন্তু সেণ্ট পলের গির্জার অনাড়ম্বর ও শাস্ত সৌন্দর্যে আধ্যাত্মিকতা অধিক পরিস্ফুট, কাজই মনের উপর ইহার প্রভাবও সূক্ষ্মতর । ষ্টেশনের পাশেই ইংরেজদের সমাধিভূমি। এখানে দুই জন অমর ইংরেজের কবর রহিয়াছে—শেলি ও কীট্‌সের। র্তাহীদের যশ ও তঁহি দর কবরের মধ্যে বিস্তর প্রভেদ ! থাসে-চাকা দুইটি অতি সাধারণ কবর। দেখিয়া আশ্চৰ্য্য হইতে হয়। আগন্তুকের দৃষ্টি আকর্ষণ করিবার মত কিছুই নাই। শুধু কবরের উপরকার শিলালিপি হইতে বুঝিতে পারি কত বড় দুই জন লোকের মৃতদেহ এখানে ক্টিৰি রহিয়াছে। শেলির কবরের শিলালিপিতে লেখা আছে – Nothing of him doth fade But doth suffer a sea-change, Into Bolnething rich and strange. কীটসের কবরের শিলালিপি এইরূপ - This grave contains all that was or of a young English poet, who on his death-bed, in the bitterness of his heart, at tho malicious power of his enemies, dosired these words to be engraved on his tomb-stone : Herc lics one whose Trame was written in wator. আমি যখন ষ্টেশনে পৌছিলাম তখন একটা ট্রেন প্রায়