পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ROR বন্ধ করিয়া দেয়। আঠ দিকে অবরোধ (blookade) নীতিও। চলিতে থাকে । রুশিয়ার গম বাহিরে যাইত না পারায় আমেরিক তাহার গমের চাষ এই সুধোগে খুব বৃদ্ধি করিয়া ফেলে। বুদ্ধের অবদানে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসিলে দেখা যায়, পৃথিবীর প্রয়োজন অপেক্ষা গমর সরবরাহ অত্যধিক হইয়া পড়িয়াছে। ভারতবর্ষ এবং জাপান লড়াইয়ের সময়ে তাহীদের কাপড়ের কল যথাসাধ্য বাড়াইয়া ফেলিয়া ল্যাঙ্কাশায়ারের বাজার অধিকার করিয়া ফেলিল । লড়াই অস্তে ল্যাঙ্কাশায়ারের কল যখন পুনঃ পুরা দমে চলিত মুরু কfরল তখন সকল কলওয়ালারই হইল ফ্যাসাদ। যুদ্ধের সময় জিলিবের আমদানি বা রপ্তানি কষ্টসাধ্য হওয়ায় প্রত্যেক দেশই নিজ নিজ প্রয়োজনীয় জিনিষ তৈরি ও সরবরাহের ব্যবস্থা নিজ দেশের মধ্যেই করিয়া লইতে বাধ্য হয় । কাজেই যুদ্ধশেষে আমদানি রপ্তানি পুনরায় অরম্ভ হইলে জিনিষের প্রাচুর্য্য লক্ষিত হইতে থাকে আয়োজনের সহিত প্রয়োজনের, কৃষির সহিত শিল্পের এই আকস্মিক বৈষম্য বিগত যুদ্ধেরই অপর পরিণাম এবং ব্যবসা-বাণিজ্যকে পঙ্গু করিবার অন্ততম কারণ। এই ত গেল পণ্যের যোগান ও চাহিদা সম্পৰ্কীয় সমস্তা— একের অদুরদর্শিতা ও অব্যবস্থা ; অপরের খামখেয়ালি । যোগান ও চাহিদার মধ্যে ষে জিনিযটি সার পদার্থ, মধ্যস্থ হইয়া যিনি উভয়ের সংযোগ সংঘটন করেন, সেই সকল অনর্থের গোড়া অর্থ সম্বন্ধে এক্ষণে আমরা আর একটু বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করিব । আমাকে স্থিরচিত্তে কাজ করিতে হইলে আমার পুৰ্ব্বয়ে জানা দরকার, যেমধ্যস্থ মাপকাঠির সাহায্যে আমার পণ্যের দর নিদিষ্ট হইবে তাহার মাপ বা মূল্য ঠিক আছে এবং ভবিষ্যতেও ঠিক থাকিব । ষোল গিরীর মাপে গজ হিসাব করিয়া পাইকারী দরে কলিকাতা হইতে কাপড় কিনিয়া আনিলাম পল্লীর হাটে খুচরা বিক্রয় করিয়া লাভবান হইব । কিন্তু মাল পৌছিবার সঙ্গে সঙ্গে গজের মাপ যদি ষোল গিরার স্থলে বত্রিশ গিরা নির্দিষ্ট হইয়া যায়, তাহা হইলে লাভের ঘরে আমাকে নিশ্চয়ই সর্ষেফুল দেখিতে হয় । যে অর্থকে মধ্যস্থ রাখিয়া আমরা বেচাকেনার কাজ করি, লাভ ক্ষতি নির্ণয় করি, তাহার মূল্যই যদি পরিবর্তনশীল হয়, তাহা হইলে আমাদিগকে নিতান্ত নিরুপায় হহয়! বলিতে হয়, “বল্ মা তারা, দঁাড়াই কোথা ?” অর্থ খলিতে আধুনিক যুগে আমরা শুধু রৌপ্য বা স্বর্ণমুদ্রা বুঝিব না ; কারেন্সি নোট, চেক, ড্রাফুটু, বিল, মার ধার করিবার মর্যাদা ( যাহাকে ইংরেজীতে ক্রেডিট বলা হয় ) এই সবই আজি অর্থপর্যায়ভুক্ত। আমার হাতে টাকা নাই, কিন্তু বাজারে মৰ্য্যাদা ( Credit ) আছে । আমি লক্ষ টাকার মলি ধারে ক্রয় করিতে পারি এথানে অর্থের প্রয়োজন আমি নিজ প্রতিপত্তির দ্বারা মিটাইয়া লইতে সমর্থ হইতেছি । লক্ষ টাকা পুজি লইয়। দু-চার লক্ষ টাকার কারবার হরদম চলিয়াছে বর্তমান দুনিয়ায় । তাই অর্থশাস্ত্র ক্রেডিটও আজ টাকার মর্য্যাদা লাভ করিয়াছে। এই ক্রেডিটের পরিমাপ করা চলে না । এই সব কারণ দেশবিশেষের বা দুনিয়ার অর্থের পরিমাণ একেবারেই স্থির রাখিতে পারা যাইতেছে না। শুধু ধাতব মুদ্রা ও গবর্ণমেণ্ট-প্রচলিত নেট ভিন্ন অর্থর প্রয়োজন অন্ত কোন ভাবে মিটাইবার উপায় না থাকিলে এবং বহির্জগতের সহিত ব বসা-বাণিজ্যাদি সকলপ্রকার সম্বন্ধ বিছিন্ন করিয়া ফেলিত পরিলে, কোন দেশের অর্থের পরিমাণ হয়ত অনেকট স্থির রাখিতে পারা যাইত । কিন্তু বিশ্বের হাট আজ ঘরের দুয়ারে আসিয়া দাড়াইয়াছে। আমাদের কাছে তাহার দিবার ও নিবার আহবান আসিয়া পৌছিয়াছে । তাহার মুল্য যেমন পাইতেছি তেমনি দিতেছি । এই সব আন্তর্জাতিক লেনদেনার fভতর দিয়া দেশের অর্থভাণ্ডার অবিরত বড়িতেছে কমিতেছে । সঙ্গে সঙ্গে জিনিষের মুল্যও স্থির থাকিতেছে না। আর একটু পরিষ্কার করিয়া বুঝিবার চেষ্টা করা যাক। ধরা যাক, বাজারে পাচটি রোহিত মৎস্য আসিয়াছে ; এবং সমবেত ক্রেতাদের পকেটে মোট পচিশটি টাকা আছে। এ অবস্থায় একটি মাছের দর ৫। টাকার বেশী হইবার উপায় নাই । মৎস্য-ব্যবসায়ীকে অগত্য এই মুল্যেই তাহার মাছ বিক্রয় করিতে হইবে। কিন্তু ২৫ টাকার স্থলে যদি হাটের ক্রেতাদের নিকট ৩০ টাকা থাকিত তাহা হইলে ৬ টাকা দরও মাছগুলি বিক্রয় হইতে পারিত। পক্ষত্তরে ক্রেতাদের নিকট ২০ টাকার বেশী না থাকিলে বিক্রেতাকে ৪ টাকা মুলোই মাছগুলি ৰখা