পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ই ই ই বিয়র জল পড়িলেই ঝাড়িয়া বড়িয় উঠবে, সুতরাং যখন ঘর-গোত্রে আটকায় না তখন কোন দিক হইতেই বেমানান হইবে না। আমি হসিয়া উঠিলাম। এই রকম উচ্চ হাসির প্রত্যুত্তর দেওয়া ছাড়া অমর গতাস্তুর ছিল না । অন্ন কথাটাকে অন্ত রকম আকার দিত চাহিল, “মা বলছেন, আপনার সঙ্গ অনেক ছেলর অলিপি, আপনার মত স্বদেশী ক'রে বেড়ায়, তাদের মধ্য থেকে একটা স্থপত্তির আমার মেয়ের জন্ত যোগাড় কর দিতে পারেন তো ।” ব্যাপার মন্দ রহস্যের নয়। যে-অনুর একদিন বেী হইয়া তর্জনী হেলাইয়া শাসন করার সম্ভাবনা ছিল, সেই অনুই দু-দিন বা.দ সৎ-শ্বাশুড়ী হই, বলিবে, “ও-টুকু দুধ ফেলে উ ো না বাবা,--” হাসি চাপিয়া রাখা খুবই কঠিন। কিন্তু অম্বর মনোভাব স্পষ্ট বুঝিলাম না, এবং আমার মত পুরুষের বোঝাও সাধ নয় । যাত্র'র সময় আসিয়াছে । আমি প্ৰণাম করিলাম । হরবিলাসবাৰু আশীৰ্ব্বাদ করিলেন, “বড় হও, দেশের মুখ উজ্জ্বল কর।” মমীমা আশীৰ্ব্বাদ করিলেন, “বেঁচে থাক ববী, সংসারী হয়ে মু খ ধরকল্প কর।” তার পর অনুরোধ করিলেন, “ত,বার সময় পেলে এসে ব.বা । এমনি ক’রে এসে তোমার ম:ম-মর্মীদের একটু খোজ নিয়ো বাবা।” এখানে কিছু পুরাতনের আবির্ভাব স্বাভাবিক এবং ইহার ফলে এই মুহূর্তের বতাস একটু করুণ রসে আদ্র হইয় উঠে । অনু বুঝি কাছেই ছিল । সে ইহীর মধ্য একটা লঘুতার ছন্দ আনিয়া দিয়া এই বিদায় ব্যাপারটাকে সহজ করিয়া দিল। একটু হালি. বলিল, “আপনার বিয়ের সময় কিন্তু আমাদের নিয়ে যাবেন, ফাকি দেবেন না।” হাসিয়া কহিলাম, “যদি করি তো নিশ্চই নিয়ে যাব।” “আবীর যদি—” শাসনের এই চপল ভঙ্গী আমার স্বচ্ছন্দত য় জড়ত ছড় ইয়া দিল । গরুর গাড়ী করিয়৷ যাত্রা । গরু ছুটিকে আমার জন্ত এতটা কষ্ট দিতে আমার বিধুমাত্র আগ্রহ ছিল না, কিন্তু সকলেরই সনিৰ্ব্বন্ধ অনুরোধ,—মনঃক্ষুণ্ণ হইবেন । তাই তাড়াতাড়ি অঙ্গর হইতে বাহির হইয়া যাইতেছি, অনু বাধা দিয়া বলিল, “একটু দাড়ান, তাড়াতাড়িতে ছাতাট ফেলে ধীবেন না ।” বলিয়া ছাতাটা আমার হাতে তুলিয়া দিল ; তার পর নতঙ্গায় হইয়া গলায় আঁচল জড়াইয়া আমকে একটি প্ৰণাম করিল উঠিয়া দঁাড়াইয় অনুচ্চ কণ্ঠে অনুরোধ জানাইল, “আবীর আসবেন কিন্তু—” বইয়ে পড়িয়াছি সময়-বিশেষে মানুষের কণ্ঠস্বরও কাপড়জামার মত ভিজা হয়। আমার কানে অমর কণ্ঠস্বর ঐ রকম ভিজা-ভিজাই ঠেকিল । শুধু তাই নয়, ঠিক সেই মুহূর্তেই অল্পর মুখখানি মুস্পষ্ট দেখিলাম। দীর্ঘ আয়ত চক্ষু, ঘন পত্রপক্ষ্ম, এবং তাঁহারই ত.ল কৃষ্ণ অাখি-তারা । গভীর কালে দৃষ্টি সেই দীর্ঘ পক্ষ্মের ছায়ায় চরম ক্লাস্তিতে যেন কেন সুদূরে হারাইয়া গিয়াছে। একটি উদ্দেশ্ব-বিহীন প্রতীক্ষা ওই তন্ত্ৰী ঋজু তনু বেষ্টন করিয়া কোন পরম বেদনার উগ্র তপস্তা করিতেছে । পুরুষের কঠিন মন কখন কি করিয়া লতিকাটির মত দুৰ্ব্বল হইয়া উঠে, মেয়েদের মতই ভাবাবেগের ভীরে কুইয়া পড়ে,—বলা ভারি কঠিন। তখন সে যাহা দেখে, যাহা শোনে, সবই ভুল, আগাগোড়া মিথ্যা । তাই আমিও দেখিয়ছিলাম, ঐ নারীটির চোখের কোলে জলের স্বচ্ছ কাজল-রেথ । তার চেয়েও কিছু বেশী দেখিয়ছিলাম, কোন জানালীর অন্তরালে দাড়াইয়া এখনও সেই জলভরা চোখ দুটি এই অস্তমিতপ্রায় রবির রক্তরশ্মিত গরুর গাড়ীর মন্থর গতি নিরীক্ষণ করিতেছে । মনকে এই বলিয়া ক্ষমা করিলাম, এই ক্ষণস্থায়ী ক্ষণের মায়ালীলায় তাহার অদ্ভুত কিছু দেখা মার্জনার যোগ্য। ব্যাপারটা শ্ৰীমতী মিভাননীকে বলা আমার উচিত হয় নাই । কিন্তু প্রেমে-পড়া মানুষ শুধু ভেড়াই হয় না, নারীর অধমও হয়, অর্থাৎ তাঁহার পেটে কোন কথাই লুকাল থাকে না। নিভাননী বলিল, “হরবিলাসবাবুকে নেমস্তয় চিঠি পাঠানো অত্যন্ত অল্পায় হয়েছে।” আমি বলিলাম, “তুমি ভুল করছ । হরবিলাসৰায়ু,