পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Nつ。ミ আসিয়া জুটিয়াছিলেন । নবদুর্গার প্রতি প্রশ্নটা মাসী শুনিতে পাইয়াছিলেন, তিনিও প্রায় সঙ্গে সঙ্গে চীৎকার করিয়া উঠিলেন, “তোকে কিছুই দিয়ে যায় নি নাকি ? ওমা কি হবে গো । যার জন্তে আমন সোনার পিরক্তিমে বুড়ো ঘাটের মড়ার হাতে দেওয়া হ’ল, সেই আশাতেই শেষে ছাই পড়ল ? ওমা, তুই তবে দাড়াবি কোথায় গণ ?” নবদুর্গ মাথা ছেট করিয়া চুপ করিয়া রছিলেন । এমন সময় চীৎকারপরায়ণ শিশুপুত্রকে কোলে করিয়া রাজলক্ষ্মীর স্বামী আসিয়া ঘরে ঢুকিল, বলিল, “দিবি আডা মারছ, ছেলেটা সে গলা শুকিয়ে মরল ?” রাজলক্ষ্মী ঝঙ্কার দিয়া উঠিল, “বেশ করছি আড়া দিচ্ছি, কারুর খেয়ে ত আড্ডা দিই নি ? তুমি না বইতে পার ফেলে দিয়ে এস ঘরে ।” তাহার স্বামী আহত ভাবে শাশুড়ীর দিকে মুখ ফিরাইয়া বলিল, “দেখলে মা, একে ভাল বলুলে মন্দ হয় ।” শাশুড়ীরও মেজাজ ভাল নাই দেখা গেল । তিনি বলিলেন, “তা বাছা, সবে দু-দণ্ড একটু চুপ ক’রে বসেছে, এমন সময় ও চিলকে আবার নিয়ে আসা কেন ? মানুষের হাড়ে কতই সয় ?” বলিয়া তিনি অষ্ঠ ঘরে চলিয়া গেলেন । রাজলক্ষ্মীও উঠিয়া পড়িয়া বকবক করিতে করিতে স্বামীর পিছন পিছন চলিয়া গেল । একলা হইবামাত্র সব শাড়ীগুলিকে নিৰ্দ্দয়ভাবে তালগোল পাকাইয়া নবদুর্গ ট্রাঙ্কের ভিতর ঠাসিয়া দিলেন। সেগুলির প্রতি র্তাহার আর বিন্দুমাত্রও মমতা ছিল না। কি কুক্ষণেই তিনি রাজলক্ষ্মীকে কাপড় দিতে গিয়াছিলেন । রাত্রে আজ শুধু ফল ও মিষ্টি জুটিল । লুচি বা ক্ষীরের চিহ্নও দেখা গেল না । পরদিন সকালে উঠিতেই মাসীমা বলিলেন, “আঞ্জ তারার শরীরটা ভাল নেই । চীন ক’রে এসে রাল্পীর জোগাড়টা কর না একটু ?” নবদুর্গ গম্ভীর মুখে স্নান করিতে চলিয় গেলেন । রান্না বেশ ভাল করিয়াই করিলেন, তবে খাওয়াতে র্তাহার রুচি চলিয়া গেল। মাদী-মা বুলিলেন, “খেলি না কেন কিছু ? পোড়া অদৃষ্টে একবারের বেশী ত জুটবেনা?” s৫থবামী 88 ఏ98ు নবদুর্গ বলিলেন, “হোক গে মসীমা, শরীর ভঃ নেই ।” মৗসীমা বলিলেন, “বিধবা মানুষের আর ভাল থাক, থাকি কি ? তবে দে-কটা দিন জগতে আছি, পেটে দুটো না দিলে ত চলবে না ? তোর আবার কাজকৰ্ম্ম মোটে অভোস নেই, জামাই দিয়েও যায় নি কিছু, কি ক'rর ঘে দিন কাটাবি তাই ভাবছি।” নবদুর্গ একটু থামিয়া বলিলেন, “বেঁচে থাকলে দিন কেটেই বাবে । খেটে খাব, কত লোকে ত থাচ্ছে ?” মসীমা উৎসাহিত হইয়া বলিলেন, “তা বইকি বাছ, কত লোকেই ত খাচ্ছে ? এই দেখ না তারাকে ? আমার সব কাজ ক’রে দেয়, দিব্যি খেতি-পরতে পায় ।” রাত্রে গুইয়া গুইয়া নবদুর্গা ভাবিতে লাগিলেন, বসিয়া খাওয়াকে এত কাম্য তিনি মনে করিয়ছিলেন কেন ? এই রকম সাত-জুয়ারে ঝ"ট খাইয়া ফিরিয়া হইবে কি ? কিন্তু কি কাজই বা তিনি করিতে জানেন ? বসিয়া কর্তৃত্ব করা ভিন্ন আর কিছু ত শেখেন নাই ? রাধুনীগিরি করিতে কি মন উঠবে ? কাশী চলিয়া যাইবেন কি ? সেখানেও কত নিঃস্ব বিধবার ব্যবস্থা হইতেছে । মাকড়ী, ফুল কাঁটাগুলি বেচিলে স্বচ্ছন্দে যাইতে পারেন। রাজলক্ষ্মীর স্বামীকে বলিলে সে নিশ্চয়ই লইয়া যাইবে । সকালে উঠতেই আবার কাজের ফরমাশ অসিয়া জুটিল। মালী বলিলেন, “ঠাকুরঘরের কাজটা তুই নে না ? তারা একলা পেরে ওঠে না ?” নবদুর্গ হঠাৎ বলিয়া বসিলেন, “দু-দিনের জন্তে ভার নিয়েই বা কি হবে ? আমি ত আর চিরকাল থাকfছ নে ?” মাপী অপ্রসন্ন মুখে বলিলেন, “তা থাকলেই বা ? কোথাও এক জায়গায় ত থাকবি ? আমার ঘরে থাকায় অপমান নেই কিছু।” নবদুর্গ বলিলেন, “কাশী গেলে কেমন হয় ?” মসীমা বলিলেন, “কাশীতে ভারি মুখ তা মনে কোরো না । দশ জনের মধ্যে থাকা অীর কচকচি শোন} সে এক জালাতন । বুড়ীগুলো জালিয়ে মারে । তার চেয়ে দাসীবৃত্তিও ভাল ।” ঠাকুরবরে গিয়া নবদুর্গ করজোড়ে ভিক্ষা করিক্তে