পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وهاج تN সাবতীয় অপবিত্র পদার্থের কোনটিই অপচয় করে না, সমস্তই মুল্যবান সারে পরিণত করিয়া কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার করে। তাহারা কি ভাবে জীবজন্তুর মলমূত্র সংরক্ষণ করে তাহা জানিলে আশ্চৰ্য্য হইতে হয়। কুইটি গ্রামের মধ্যে যে অপ্রশস্ত স্থান থাকে, তাহার মাঝে মাঝে মাটি টাচিয় লইয়া ইহার এক-একটি অগভীর খাত প্রস্তুত করে । সেই খাতের দুই ধারে সাধারণ ঘাস-জঙ্গল জন্মাইয়া বেড়া দেয়। পথিকেরা যখন উহার নিকটবৰ্ত্তী পথ দিয়া উট গাধা প্রভৃতি জন্তু-জানোয়ার লইয়া যায়, তখন ঐ সকল খাতের মধ্যে জন্তু-জানোয়ারগুলিকে ছাড়িয়া দেয় । তখন ঐ পশুগুলি ঐ খাতে মলমুত্র ত্যাগ করে। পরে ঐ মলমুত্রমিশ্রিত মাটি খতি হইতে উঠাইয়। সাররূপে ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে । ইহা হইতে দেখা যায় যে, দেশের সৰ্ব্বসাধারণেই দেশের কৃষি-কার্য্যের উন্নতির জন্ত পরস্পর সহায়তা করে । কৃষি-কার্য্যের উন্নতির জন্ত তাহদের চেষ্টার কথা বাস্তবিকই অদ্ভূত ! চীনের কৃষকদের ঘরের মেঝে কঁচি, সেই জন্ত মেঝের মাটিতে যবক্ষারজান সঞ্চিত হয় । মাঝে মাঝে তাহারা মেঝের তিন ইঞ্চি পরিমাণ মাটি চাচিয়া সাররূপে ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে। কি অদ্ভুত জাতি । কি ভাবে নিজেদের পরিশ্রম ও বুদ্ধির দ্বারা জমির উৰ্ব্বরতাশক্তি রক্ষা করিয়া আসিতেছে ! চীন দেশের কৃষি-কার্য্যের প্রধান গোপন কথা এই যে, চীনের ক্ল্য করা কৃষি-কার্য্যের দ্বারা কি ভাবে তাহীদের এই জনবহুল দেশের অন্নসংস্থান করিতে পারে, তাহা অতি কঠোর ভাবে শিথিয়াছে । সেই শিক্ষা আর কিছুই নাহ, প্রত্যেকটি জিনিষ বাহা থাস্তে, জালানি কাষ্ঠে অথবা সাররূপে পরিণত করিতে পীরা যায় তাহার অপচয় না করিয়া কাজে লাগাইবার জন্ত অসীম পরিশ্রম করিতে কখনই নারাজ হয় না । কৃষি-কার্য্যের জন্ত কৃষকদিগকে যেমন অধিক পরিশ্রম করিতে হয়, ঘর-সংসারের কাজ করিবার জন্তও তাঁহাদিগকে সেইরূপ কঠোর পরিশ্রম করিতে হয় । উত্তর-চীনে বড় বড় গাছপালা নাই বলিলেই চলে। সেই জন্ত তাহাঁদের জালানি কাঠের অভাব খুব বেশী । কয়লা কিংবা কাঠকয়ল। কিনিয়া ব্যবহার করা তাহীদের ক্ষমতায় কুলীয় না । ఏరా8ు অতি পরিশ্রমের সহিত তাহাদিগকে জালানি কাঠ সংগ্ৰহ করিতে হয় । তাহারা দেওধান-জাতীয় গাছের শক্ত সাত আট ফুট লম্বা কাণ্ডগুলি বেড়ার জন্ত এবং ঘরের চালের চাউনীর জন্ত ব্যবহার করে । আবার এই সকল গাছের শিকড় ও ফলের খোসাগুলি শুকাইয়া রান্নার কাজে লাগায় । তাহারণ ভুট্টাগাছের কাণ্ড ও পাতা ছোট ছোট করিয়া কাটিয়া গরুকে খাওয়ায় । চীনের কৃষকেরা শয়ন-গৃহ গরম রাখিবার জন্ত ঘরের মধ্যে র্কাচ উনান প্রস্তুত করে । এ উনানের চিমনীর ইটও কঁচা । এই চিমনীগুলি সাধারণতঃ চারি বৎসর পরে ফাটিয়া যায়। সেই সময় ঝুলসমেত চিমনীর ইটগুলি গুড়া করিয়া ক্ষেত্রে ব্যবহার করে । উনানের ছাইও সারহিসাবে জমিতে দেয় । ভুট্টা ও মটর গাছের কাণ্ড ও শিকড় ইত্যাদি জ্বালানি রূপে এই উনানে পোড়ন হয় । সেই জন্ত তাহার এই সকল শস্য কাটিয়া আনে না, শিকড়সমেত টানিয়া তুলিয়া আনে। ইহা হইতেও বুঝা যায় যে, চীনের কৃষকের কোন জিনিষ অপচয় করে না । জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের জন্ত কৃষকদের স্ত্রীলোকেরা ও বালক বালিকাগণ পুরুষদিগকে যথেষ্ট সাহায্য করে । তাহারা নীল রঙের মুনীর মুনার ঢিলা পোষাক পরিয়া অতি আনন্দের সহিত পাহাড়-পৰ্ব্বত ও রাস্তাঘাট হইতে ভুট্টা ও মটর গাছের fশকড় কাণ্ড ইত্যাদি সংগ্ৰহ করিয়া আনে । চীন দেশের কৃষকদের খাদ্য প্রধানতঃ নিরামিষ । তাহারণ মাংস অতি অল্প পরিমাণে খায় ; দুধ মোটেই খায় না ; গম ও ভুট্ট হইতে প্রস্তুত ময়দা বা পিঠfই তাহীদের প্রধান খাদ্য । ইহার সঙ্গে মিলেটু-জাতীয় শস্ত সিদ্ধ করিয় ভাতের মত থায় । এই খাদ্যের সহিত সব জী চাটনী ইত্যাদি ব্যবহার করে, কিন্তু লবণ খায় না । এই সাদাসিধে-ধরণের খাদ্য খাইয়াও তাহদের স্বাস্থ্য অতুলনীয়। স্ত্রীলোকগণ সুন্দরী ও স্বাস্থ্যবর্তী, বালক-বালিকাগণ পুষ্টকায়, লাবণ্যময় এবং সৰ্ব্বদাই ক্রীড়াসক্ত । চীন দেশের কৃষকদিগের মত তাহীদের স্ত্রীলোকেরাও কষ্টসহিষ্ণু । স্ত্রীলোকের বাজারে গিয়া খাদ্যদ্রব্যাদি ও গৃহস্থালীর অন্তান্ত জিনিষ কিনিয়া আনে । তাহার হালিমুখে খাল ও নদীতে কাপড়-চোপড় কাচে, র্যাত চালাইয়া