পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ৬ কীৰ্ত্তিনারায়ণ ՀգՏ, kS BBB BBB BBB BBBBB BB BB BBB BBB BBBB BBBB BB BBBB ছায়ামুৰ্ত্তি । করিতে সাহস পায় নাই । ঘোড়ার কাধের উপর ছেট লাল সিং আঙ্গিনা পার হইয়া অন্তহিত হইলে ভৈরব রায় রকের উপর পায়চারি করিতে আরম্ভ করিতেন— ঠকঠক ঠকঠক করিয়া হাতীর দাতের খড়মের শব্দ হইতে থাকিত । বৈঠকখানা দালানের সেই রকের উপরে যেখানে দুই ঝাড় জুই অজস্র ফুল ফুটিয়া শাদা হইয়া থাকিত ও বড় বড় পদ্মকরবীর গাছ দুইটিতে গুচ্ছ গুচ্ছ লাল ফুল ফুটিয়া থাকিত সেইখানে একখানি শ্বেতপাথরের জলচৌকির উপর বসিয়া ভৈরব রায় পৌত্র কীৰ্ত্তিনারায়ণের শিক্ষাবিধান করিতেন । ক্ষুদ্র বালক মাথায় প্রকাণ্ড এক পাগড়ী বধিয়া বা-হাতে ছোট একখানি ঢাল ও ডান হাতে তরবারি লইয়া কুঞ্জদেহ বৃদ্ধ লাল সিংহের সঙ্গে তরবারি খেলিত--কখনও বা কল্পিত প্রতিদ্বন্দ্বীকে সম্মুখে রাখিয়া একাই খেলিত বা কল্পিত পলায়মান আততায়ীর পশ্চাদ্ধাবন করিয়া বর্শ ছুড়িত। লাল সিংহের শিক্ষার গুণে ক্ষুদ্র বালক ইতিমধ্যেই ওস্তাদ লাঠিয়াল হইয়া উঠিয়াছিল । মালর্কোচ দিয়া কাপড় পরিয়া ছোট লাঠিখান হাতে লুইয়া ডাক ছাড়িয়া লাফাইয়া লাফাইয়া সে যখন লাঠি ঘুরাইত, বন-বন শব্দ করিয়া বিদ্যুতের মত তাহার হাতে লাঠি ঘুরিতে থাকিত, দেখিয়া ভৈরব রায়ের দুই চোখ উজ্জ্বল হইয়া উঠিত । পৌত্রকে অশ্বারোহণ-বিদ্যা শিক্ষা দিতেন ভৈরব রায় স্বয়ং । একটি দেfর্তাtশলা তেজী শাদা রঙের ঘোড়ায় জিন কসিয়া মুসলমান সহিস আঙ্গিনার একপ্রাস্তে তাহার লাগাম ধরিয়া দাড়াইয়া থাকিত । প্রভুপুত্র কাছে আসিলে সে লাগাম ছাড়িয়া দিয়া হেঁট হইত, তাহার আনত পিঠের উপর পা রাখিয়া লাফাইয়া বালককে ঘোড়ায় চড়িতে হইত। পিঠে সোয়ার চাপিলেই ঘোড়াটি পাগলের মত পিছনের দুই পা শূন্তে ছুড়িতে আরম্ভ করিত, দেহ বাকাইয়া আলোলিত করিয়া আরোহীকে বাড়িয়া ফেলিয়া দিতে চেষ্টা করিত। - প্রথম দিন ঘোড়ায় চড়িয়া বালক ভয়ে কাদিয়া ফেলিয়াছিল। কিন্তু অদূরে দণ্ডায়মান পিতামহের চোখের হইয়া প্রাণপণে তাহার কেশর আঁকড়াইয় সে পড়িয়াছিল। দ্বিতীয় দিনে ঘোড়া লাফাইতে সুরু করিলে সে লাগাম টানিয়া সিধা বসিয়া রহিল । দশ মিনিট কাল লাফালাফি করিবার পর ক্ষুদ্র সোয়ারটিকে লইয়া সদর ফটক পার হইয়া ঘোড়াট উৰ্দ্ধশ্বাসে ছুটিতে লাগিল । ছুটিতে ছুটিতে সে কেবল চেষ্টা করিতে লাগিল কোন্‌ ফাকে পথ ছাড়িয়া পথিপাশ্বের আগাছার জঙ্গলের মধ্যে প্রবেশ করিতে পারে । কথনও বা এমন ভাবে বড় বড় গাছ ঘেষিয়া ছুটিতে লাগিল যে প্রতিমুহূৰ্ত্তে বালকের পা গাছের কাণ্ডে বাধিয়া ছড়িয়া যাইবার, উন্টাইয় তাহার ঘোড়া হইতে পড়িয়া যাইবার আশঙ্কা হইল। বালক লাগাম দাতে কামড়াইয়। ধরিয়া চাবুকের উন্ট দিক দিয়া দুই হাতে তাহার ঘাড়ে ও পাশে আঘাত করিয়া তাহীকে পথে চালাইতে চেষ্টা করিতে লাগিল । কয়েক দিন এইভাবে চলিবার পর ঘোড়। বুঝিতে পারিল যে তাহার সোয়ারটি ক্ষুদ্র হইলেও ভয় পাইবার পাত্র নহে। ক্রমে সে ঠাণ্ডা হইয়া আসিল । এইভাবে কীৰ্ত্তিনারায়ণের পদোপরোগী শিক্ষাদীক্ষ চলিতে লাগিল । কীৰ্ত্তিনারায়ণের বয়স যখন আঠারো বছর পুরিল তখন এক দিন পিতামহ তাঁহাকে কাছে ডাকিলেন, নতমস্তকে পিতামহের সম্মুখে দাড়াইলে তিনি আদেশ করিলেন কালীদহে স্নান করিয়া পূজার কাপড় পরিয়া তাহার নিকটে আসিতে হইবে। কালীদহে স্নান করিবার আদেশ পাইয়। কীৰ্ত্তিনারায়ণ একবার বিস্মিত ভাবে চোখ তুলিলেন, পরক্ষণেই নতমস্তকে অন্দরের দিকে চলিয়া গেলেন । পৌত্রকে স্নান করিবার আদেশ দিয়া ভৈরব রায় রকে পায়চারি করিতে লাগিলেন—ঠকঠক ঠকঠক করিয়া হাতীর রাতের খড়মের শব্দ হইতে লাগিল । ঘন ঘন সে শব্দ শুনিয়া মনে হইল বৃদ্ধ ভৈরব রায় আজ যেন একটু উত্তেজিত ও অন্তমনস্ক । কীৰ্ত্তিনারায়ণ কালীদহে স্নান করিতে নামিলেন। কালীদহের কাকচক্ষুবৎ স্বচ্ছ, স্থির জলে নামিয়া ডুব দিতেই র্তাহার মনে হইল কত বিক্ষুদ্ধ সমুদ্রের তরঙ্গমালা একটির