পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రిగ్కి ఎని83 ঙ্কের করিতে লাগিল। তরুণ ভূত্য বালক বলিলেও চলে । ভয়ে সে বিবর্ণ হইয়া গিয়াছে । জবাব দিতে কথা জড়াইয়া যাইতেছে। অপরাধীর কুষ্ঠিত ভাব। নিশ্চিত সন্দেহে অশোক তাহাকে দুই চড় বসাইয়া দিতেই ইন্দ্রাণী ছুটিয়া আসিল,—আহা দোষী কিনা তার ঠিক নেই,—আগে থেকে মার-ধোর ক’রে না ।” ইন্দ্রাণীর মনে অন্ত সন্দেহ জাগিতেছিল । অশোক ভূত্যকে ছাড়িল বটে, কিন্তু রাগ কমে নাই তখনও । বলিল, ঘড়ি আমি আজই বার করতে চাই । অত দামী ঘড়ি-চোরকে আমি পালাতে সুবিধা দিচ্ছি না । বাড়ির লোকজনের সামনে ঘড়ি উড়ে গেল? ঠাকুর কোথায় ? ইন্দ্রাণী কুষ্ঠিত মুথে উত্তর দিল, সে আসে নি ত। তার যাবার পরেও ঘড়ি দেখেছি আমি । বলিয়া ইন্দ্রাণী আলনা হইতে স্বামীর গায়ের চাদরথানি টানিয়া পাশের দরজা দিয়া হঠাৎ কোথায় বাহির হইয় গেল । শচীর কাজেও সেদিন বিশৃঙ্খলা লাগিয়াছে। অনিল ফিরিয়া আসিল, রান্না তখন মোটে সুরু হইয়াছে। অনিল বার-বার তাড়া দিয়া রান্নাঘরের পাশেই ঘুরিতেছিল । শচী ঝোল নামাইয়া ভাত চড়াইয়াছে, এমন সময় তাহদের বিস্মিত করিয়া ইন্দ্রাণী আসিয়া দাড়াইল । অনভ্যস্ত বেশে চাদর জড়াইয়া সে আসিয়াছে—সঙ্গে চাকরও নাই । উভয়ে বিস্ময়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাহার দিকে চাহিতেই ইন্দ্রাণী বলিল— অনিল বাবু, আপনি একটু বাইরে যান, শচীর কাছে আমার দরকার ” অনিল বহিরে গেলে সে শচীকে জিজ্ঞাসা করিল, নটু কোথায় ভাই ? তাকেই আমার বডড দরকার । শচী বলিল, সে ত এসেই বেড়াতে গেছে । একটি দিনও বাড়ি থাকে না, আর এর মধ্যে কি ক’রে যে দলবল জুটিয়েছে। কি কাজ ভাই, বল না कांभांग्न ! ইস্রাণী বারেক ইতস্ততঃ করিয়া বলিল, ও'র সোনার ঘড়িটা সেই থেকে পাওয়া যাচ্ছেম । জানত তাই কি সৌখীন লোক, ঘড়ি ছাড়া এক দণ্ড থাকেন না। সেই নটু যেখানে ছবি দেখছিল সেইখানে ঘড়িটা ছিল কি না । কিছু মনে ক’রে না ভাই,—ছেলেমানুষ ভুলে যদি হাতে নিয়েই থাকে। শচী থরথর করিয়া কঁাপিতেছিল । সে শুষ্ক কণ্ঠে কোন মতে শুধু বলিল—নটু ? —ই ভাই,—নটু ছাড়া আর কেউ সে ঘরে যায়নি। একবার ঘড়িটা তাকে নড়িতে দেখেছিলাম। ঘড়িট । যদি এনেই থাকে চুপি চুপি আমায় ফিরিয়ে দিও ভাই কেউ জানতে পাবে না। ইন্দ্রাণী যেমন আসিয়াছিল তেমনি দ্রুতপদে ফিরিল । অনিল শোবার ঘরে দাড়াইয়া ছিল । গর্হিত জানিয়াও সে আড়াল হইতে ইন্দ্রাণীর কথা শুনিয়াছে ! ইন্দ্রাণী চলিয়৷ ঘাইতেই সে শচীকে দু-একটি কথা জিজ্ঞাসা করিয়া পথে বাহির হইয়া গেল । তার চোথে মুখে জালা ধরিয়াছে যেন । শরীরও কঁাপিতেছে । যদি মিথ্যা হয়—ভদ্রতার মুথোসকে চিনিয়া রাখিল এবার । ঘণ্টা দুই পরে অনিল ফিরিল। নটুর হাত তাহার বজমুষ্টিতে আবদ্ধ। চক্ষের পলকে শচী ব্যাপারটা সত্য বলিয়া বুঝিতে পারিল । ভাত দুটি নামাইয়া সেই যে কথন শচী ভূয়ে বসিয়াছে আর উঠে নাই। জল দিতে আসে যে লোকটি সে-ই শচীকে অপ্রকৃতিস্থ বুঝিয়া করুণায় একটি আলো জ্বালাইয়া গিয়াছে । অনিলের মুখ যেন ফাটিয়া পড়িতে বাকী। গরিব সে, কিন্তু সততার সন্মান যে তাঁর জীবনের সম্পদের ভিত্তি । এই জন্তই না সে সকলের প্রিয়পাত্র । কিন্তু সে বিশ্বাস দূরে থাক, লোকে বলিবে চোর পরিবার। এই জায়গায় কেমন করিয়া সে আর থাকিবে, মুখ দেখাইবে ? শচী নিঃসাড় হইয়া বসিয়া ছিল । অনিল তাহাকে শুনাইল কি করিয়া নটু ঘড়িটাকে পাথরে কিয়া চুরমার করিয়াছে । ভাবিয়াছিল কেহ চিনিতে পরিবে না কিন্তু নামের অক্ষরগুলি যে ডালার পিছনে খোদা তা অর বুদ্ধিমানের নজরে পড়ে নাই । ভাঙা ঘড়ি বলিয়া কৰ্ম্মকারকে বিক্রি করিয়া বন্ধুবৰ্গ লইয়া মেঠাই খাওয়া হইতেছিল। ভাগ্যে অনিল সে সময় যায় নইলে কুড়ি টাকার মধ্যে পোনের টাকা ফিরিয়া পাওয়া যাইত না । কত কষ্টে কৰ্ম্মকারকে ভয় দেখাইয়া ঘড়ি আদায় করিয়াছে। এত লাঞ্ছনাও অনিলের পাওনা ছিলঃ অশোকের বাড়িতে তাহার অবশিষ্টটুকু পুর্ণ হইয়াছে। যদিও অশোক তাহার চিরাচরিত