পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাত্তিক দৃষ্টি-প্রদীপ ১১ - বাংলা দেশের সমস্ত লোককে যদি উত্তমূর্ণ ও অধমৰ্ণ এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়, তাহা হইলে দেখা যাইবে, উত্তমর্থশ্রেণীর বেশীর ভাগই হিন্দু আর অধমৰ্ণ শ্রেণীর বেশীর ভাগই মুসলমান। শুধু তাই নয় ; খাজানার পাওনাদার ও দেনাদারের মধ্যেও ঠিক এইরূপ সাম্প্রদায়িক বিভাগ রহিয়াছে । খাজান দেয় বেশীর ভাগই মুসলমান—পায় বেশীর ভাগই হিন্দু; কারণ জমিদার বেশীর ভাগই হিন্দু। ইহা বড়ই দুর্ভাগ্য। কেননা, এই ক্ষেত্রে নৈতিক আদর্শের পরিবর্তনের ফলে শুধু যে সমাজে অর্থনৈতিক সম্পর্কই পরিবত্তিত হইবে, এমন নয় ; সাম্প্রদায়িক সম্পর্কটাও ইহার ফলে জটিল ইয়া পড়িবে এবং সম্প্রদায়গুলির পদমর্যাদাও পূৰ্ব্ববৎ দু:কিবে না । এতকাল ধনী ও মজুরদের ভিতর বে কলহ চলিতেছিল, তার ভিতর দেনা-পাওনা সম্পর্কের আদর্শের একটা পরিবর্তনও লক্ষিত হইত। তার পর বিগত শতাব্দীতে সোসিয়ালিজম, কমুনালিজম প্রভৃতি যেসব মতবাদ থিবীতে প্রচলিত হইয়াছে, তাতেও সমাজের অর্থ-বিভাগ প্রভৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের নৈতিক আদর্শের আমুল সংস্কারও অভিপ্রেত। সমাজে শ্রেণীবিশেষ বা ব্যক্তিবিশেষের অধিকার লোকের কৰ্ত্তব্য-বোধের উপর প্রতিষ্ঠিত ; এই কৰ্ত্তবা-বোধের পরিবর্তন না ঘটাইলে তাদের অধিকার খৰ্ব্ব বা নষ্ট হয় না। এইজন্তই বৰ্ত্তমান কুশিয়ায় ধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে এত বড় অভিযান চলিতেছে। ধৰ্ম্ম একপ্রকার কর্তব্যবোধের প্রশ্রয় দেয় ; সেই কৰ্ত্তব্যবোধের উপর আবার শ্রেণী-বিশেষের অধিকার নির্ভর করে । সুতরাং ঐ সব শ্রেণীর অধিকার যদি নষ্ট করিতে হয়, তবে ঐ কৰ্ত্তবা-বোধও দূর করিতে হইবে এবং তারই জন্ত, উহার প্রশ্রয়দাতা ধৰ্ম্মেরও উচ্ছেদ প্রয়োজন । S. { আজ যে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে এবং অন্তত্র ঋণ অস্বীকার সমীচীন মনে করা হইতেছে, তাহাতে আপাততঃ অর্থনৈতিক *, যুক্তিরই প্রয়োগ দেখা গেলেও ভিতরে ভিতরে উহার ফলে মানুষের নৈতিক আদর্শের এবং তার কর্তব্য-বোধেরও প্রভূত পরিবর্তন সাধিত হইবে, এবং তার ফলে সমাজের একটা বিরাট পরিবর্তন অবশুম্ভাবী । সমস্ত জগতে উহার ফল কিরূপ দাড়াইবে স্পষ্ট কল্পনা করা কঠিন ; কিন্তু বাংলা দেশে উহার আগুফল যাহা হইবে, তাহা বঙ্গবাসীর, বিশেষতঃ ধনশালী হিন্দুসমাজের, প্রণিধানযোগ্য । দৃষ্টি-প্রদীপ জীবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় সপ্তম পরিচ্ছেদ - ‘V 's সন্ধ্যার সময় আটঘর পৌছে দেখি সত্যিই মায়ের অসুখ । আমাদের ঘরখানায় মেজের ওপর পাত বিছানায় মা শুয়ে । অন্ধকারে আমার চিনতে না পেরে ক্ষণস্বরে বললেন—কে ওখানে-হারু ? তারপর আমার দেখে কেঁদে উঠে বললেন—কে জিতু, মায় বাব আয়, এতদিন পরে মাকে মনে পড়লে তোয় ? স্থায় এই বালিশের কাছে আয়-ওম, একি হয়ে গিয়েচিস্ । ls রোগ, কাল চেহারা—ওর সত্যিই বলততো ! মা একটি ঘরে গুয়ে—জনপ্রাণী কেউ কাছে নেই। সন্ধা হব-হব, ঘরে একটা আলো পৰ্য্যস্ত কেউ জালে নি । এমনিই বাড়ি বটে ; কেন, এত ছেলে মেয়ে বেী বাড়িতে, এক জন কাছে থাকতে নেই ? অথচ পরের দোষ দি{ে লাভ কি, আমিই কোথায় ছিলুম এতদিন ? . . বললাম—ম, দাদা কোথায় ? সীতা আসে নি? মা নিঃশবো কাঁদতে লাগলেন । বললেন-ওৱা কেউ চিঠি দেয় না, বলে বলে আজ বুঝি হারু একখান পর দিয়েচে সীতাকে { -ক'দিন অসুখ হয়েচে তোমার মা ? : ওরা. কেউ দেখে না? জ্যাঠাইন, কাকিমার আসে মা ? ? –ভুবনের মা মাৰে মাঝে আসে। এই কেঙ্গে