পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Str জগতের অন্য কোনও রাষ্ট্র জাপানের প্রতিষ্ঠিত 'মাকৃষ্ণায়" স্বতন্তু রাষ্ট্র বলে স্বীকার করে নি । ওয়াশিংটনের চতুঃশক্তি-প্রশান্তমহাসাগরিক-চুক্তি কথ আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, জাপান ও ফ্রান্স প্রশান্তমহাসাগরে পরস্পরের স্বার্থের মর্য্যাদা রক্ষা ক’রে চলবে স্থির হয়, এবং এই নূতন চুক্তির সঙ্গে সঙ্গেই ১৯৩২ সন থেকে যে ইঙ্গ-জাপান মিত্রত চলে আসছিল ত রদ করা হয়। আমেরিক এই চুক্তির ফলে আগের চেয়ে নিরাপদ হয় বটে, কিন্তু বৃটেন এই নুতন ব্যবস্থায় প্রশাস্তমহাসাগরে তার শক্তিবৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে এবং বৈঠকের দু-বছর পরেই সিঙ্গাপুরে তার নৌবাহিনীর নুতন ঘাটি নির্মাণ আরম্ভ করে। এই ঘাটি প্রধানতঃ ভারতবর্ষ ও অষ্ট্রেলিয়াকে রক্ষ করবার জন্য তৈরী হয়েছে । চীনদেশে জাপানের কার্য্যাবলী দ্বার প্রমাণিত হয়েছে যে, বৃটেনর এই ভয় বা অবিশ্বাস অমূলক নয়। পক্ষান্তর, জাপান কিন্তু এই নূতন ঘাটি রচনাকে সুনজরে দেখত পারে নি । এষ্ট আয়োজন যে তাঁর সঙ্গে ভবিযৎ সংগ্রামের সরঞ্জাম, একথা নিয়ে জাপান। সাংবাদিকরা প্রৰণসী SS3S কোন শক্তির না থাকে তাহলে যতই কেন না আপোষ বা চুক্তি হোক কোনটিতেই কোন ফল হবে না | সাংঘাইতে যখন বিনা দোয়ে হাজার হাজার চীনের জীবন জাপানী গোল-বারুদে শেষ হল এবঃ তারপর যখন জাপান চীনরাষ্ট্রের দুর্বলতায় সুবিধা নিয়ে তার এক বিশাল ভূখণ্ড দখল করল তখন বিশ্বরাষ্ট্রসঙ্গের চুক্তি, নব-শক্তিসন্ধি ও কেলগ-বিয়। প্যাক্ট সকলই উবিয়ে গেল । বিশ্বরাষ্ট্রসলের লিটন্‌ কমিটির নির্দেশ ও অন্তা রাষ্ট্রের চীনের পক্ষ সমর্থন তার পছন্দ না হওয়ার সে এই সজা ত্যাগ করল । যদি বিশ্বরাষ্ট্রসজ্যের নির্দেশ বা কেলগ-ত্রিয় প্যাক্টেরই এই পরিণতি হয় তাহলে লগুন নৌ-চুক্তিরই বা কতটুকু সার্থকতা থাকতে পারে ? আরও মনে রাখতে হবে ধে, যদি বা বড় বড় রণতরীর কামান ও টনেজ নিৰ্দ্ধারিত ও সীমাবদ্ধ করা সস্তুযপর হয় তথাপি ভবিষ্যৎ যুদ্ধের ভয়ঙ্করত বা তার আশঙ্ক কিছুমাত্র কমবে না । কারণ যুদ্ধের উপকরণ শুধু এইগুলিই নয়। এরোপ্লেন ও বিনাপ্ত গ্যাসের ক্ষমত এদের চেয়ে অনেক বেশী । সাধায়ণ এরোপ্লেন কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধের উপযাগী করিয়া লওয়া যায়। বিষাক্ত গ{স আধুনিক সামুদ্রিক বিমানপোত । ইহার বিস্তারিত তাদের দেশে প্রভূত আন্দোলন করেছেন। বর্তমানে জাপান ওয়াশিংটন ও লণ্ডন চুক্তি অনুযায়ী আমেরিক ও বৃটেনের নৌবাহিনীর মাত্র তিনপঞ্চমাংশ রাখতে পারে। জাপানের নৌবিজ্ঞানবিশারদগশ কয়েক বছর আগে ৰলেছিলেন তাদের দেশের শক্তি আর একটু বৰ্দ্ধিত করলেই তা বহিরাক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার পক্ষ যথেষ্ট হবে। এখন কিন্তু জাপান দাবি করছে—বৃটেন ও আমেরিকার সঙ্গে তার সমত চাই ! জাপানের এই নুতন দাবির অন্তর্নিহিত কারণ, জাপন মার্কিলকে যেমন এতদিন ভবিষ্যতের শত্রু ব’লে মনে করে এসেছে, বৃটেনকেও বৰ্ত্তমানে সেইরূপ একটি শক্ৰ মনে করে । যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন ও জাপানের শক্তি ওয়াশিংটন চুক্তি মতে ৫৫৫৩ এই অনুপাতে ধাৰ্য্য হয়েছে, মধ্যপ্রশান্তমহাসাগর কেন্ত্রে এদের শক্তি ৪:২৪৩ অঙ্কে ফেলা যায় । অধিকন্তু জাপান আমেরিক ও সিঙ্গাপুর থেকে প্রায় তিন হাজার মাইল দূরে এবং এতদূর থেকে তাকে আক্রমণ করা সহজ নয়। তা ছাড়া বৃটেন ও আমেরিকার স্বাৰ্থ জগন্ধ্যাপী এবং তা স্বক্ষণাবেক্ষণের জন্য তাদের বৃহত্তর নৌবাহিনী প্রয়োজন। অতএব ইহা নিশ্চয় বলা যেতে পারে যে, জাপানের দাবি মেমে নিতে বৃটেন কিংবা আমেরিকা কেহই রাজি হবে না । এ কথা মনে রাখা প্রয়োজন যে, শাস্তিরক্ষার সাধু ইচ্ছা যদি পক্ষদ্বয় সাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মেয়েদের জন্ত সুগন্ধি দ্রব্যাদি, মোটরের তেল অথবা রোগীদের জন্ত ওষুধ তৈরীর কারখানায় প্রস্তুত ক’য়ে অনায়াসে লুকিয়ে রাখা যায় । তারপর এ কথাও ঠিক যে, সন্ধিসত্ত্বগুলি লঙ্ঘন না করেও প্রভূত অর্থব্যয়ে যে-রকম যুদ্ধাপকরণ নিৰ্ম্মাণ করা যায় তা এই প্রকার সন্ধির মূল কুঠারঘাত করে। জাৰ্ম্মানীর পকেট রণতরীগুলি এর জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। ভাসাইয়ে সন্ধির যুদ্ধসম্পৰ্কীয় ধারাগুলি কঠোরভয় ক’রে মিত্ৰশক্তিবর্গের দৃঢ়বিশ্বাস হয়েছিল যে, জার্মানীর যুদ্ধ করবার ক্ষমত একেবারে বিনষ্ট হল। কিন্তু ইদানীং জাৰ্ম্মানী গবেষণা ও অর্থব্যয় ক’রে যে যুদ্ধসম্ভার রচনা করেছে তার ভয় জাৰ্ম্মানীর প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলি আঞ্জ উদ্বিগ্ন । : এইসব কারণে আগামী বছরের নৌ-সম্মেলনের কার্য্যকারিত মৃন্ম সঙ্গেহ করা অযৌক্তিক নয় । কিন্তু আগামী বছরের নৌ-বৈ বসবে কি-না সেই বিষয়েও যথেষ্ট সন্দেহ পোষণ করা যেতে পারে : জাপাম যে তার নৌবহরে ইংলণ্ড ও আমেরিকার সঙ্গে সমতার দাবি করেছে জগতের শাস্তির ওপর তার ফলাফল উপেক্ষ করা যায় না। একথা মান রাখা দরকার ষে, একমাত্র জাৰ্ম্মানীর অসম্মতিতে কিছুকলি আগে নিরস্ত্রীকরণ-সম্মেলন যে সমস্তায় পড়েছেন সে সমস্তার আজও সমাধান হয় নি । o