পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ অভিযান 8* ইচ্ছায় নিৰ্ব্বিঘ্নে কাটাইতে পারিলেই...কিরীটি দরজায় করাঘাত করিল। প্রশ্ন আসিল,—কে ? —আজ্ঞে আমি এই--- দরজা খুলিয়া একটি সৌম্যদর্শন বৃদ্ধ কিরীটিকে দেখিয়া যেন একটু হক্‌চকাইয়া গেলেন। কিরীটি কি বলিয়া পরিচয় সুরু করিবে, মনে মনে তাহারই মুসাবিদা করিতেছে । সঙ্গে সঙ্গে নানা প্রকার দুৰ্নিবার দুশ্চিন্তাও ! —কি দাহ্ল সাহেব, চিনিয়া ফেলিলে না কি ? দোহাই বাবা, তোমার নাৎজামায়ের দিবা, চিনিতে পারিও না যেন । তাহা হইলে আমাতে আর আমি থাকিব না । বৃদ্ধ তুমি, কেন এই সব চেনাচেনির ঋঞ্চাটে যাইতে চাও? দু-দিন ভালট-মন্ট, একটু-আধটু হাসি-তামাশা, এর বেশ আশা ত আমার নাই। প্রকাশ্লো হাসিয়া বলিল—আমায় চিনতে. হেঃ, আমি অশ্ব দাদাসাহেব লাফাইয়া উঠিলেন—অীরে এস ভায়া এস । দোষ নিয়ো না ভীয়া । আমি ত তোমায় দেখি নি 5 | যাক, বাচা গেল । মৃদু হাসিতে হাসিতে কিরীটি বলিল,--না দেখলে কি কেউ কারুকে চিনতে পারে ? আমিও ত চিন্তাম না । হাজার জায়গায় জিজ্ঞেস করতে কবৃতে••• কিরীটি সাদরে অভার্থিত হইল । সন্দেশ রসগোল্লা, ক্ষীর, পায়েস, পরমান্ন কিছুর অভাব হইল না । পায়ে খড়ম, হাতে হকী,—কৈলাস চাটুজ্জে তদীয় গৃহিণীর নিকট উপস্থিত হইলেন ; ই গা ? —কি গ1 ? —নাৎজামায়ের ত খুবই খাতির সুরু করলে, কলকাতার সব ছোড়াগুলোই তোমার নাতজামাই নাকি ? —তার মানে ? —মানে অতি সহজ। আমরা কেউই ত অশ্বিনীকে Iচনি নে। এখন এই শালাই যে জোচ্চ,রি করে আসে নি ওই বা কে বললে ? ললিতা তোমায় লিখেছিল না, সত্যি দিদিমণি, কপালের উপর কাটা দাগটুকু না থাকলে তোমার কথামতই মেনে নিতাম তোমার নাৎজামাইটি ময়ূর-ছাড়া কাৰ্ত্তিক ?" বিস্ময়ে মাথা তুলিয়া কৈলাস-গৃহিণী কছিলেন,—ইn তা ত লিখেছিল ? —কিন্তু এ-শালীর কপাল একেবারে সমতল । কোথাও কাটাকুটি নেই, তবে লাঠালাঠি আছে কিনা কে জানে ? –তাই নাকি গা ? —তাই ত মনে হচ্ছে। তবে অশ্বিনীর বিশেষ বন্ধুটন্ধু কেউ হবে বোধ হয়। যাক তুমি যেন এখন থেকে ওর বেখাতির কিছু ক'রো-টরো না । আগে ভাল ক’রে দেখি । বৃদ্ধের কৰ্ম্মভোগ!—অদ্ধ মাইল দূরে ষ্টেশনে গিয়া *তার’ করিলেন – “অশ্বিনী মুখার্জি, স্প্রিং হোষ্টেল, রাজাবাজার, কলিকাতা, ললিত বিপন্ন, শীঘ্র এর্স —কৈলাস, রাজগাওঁ ৷” সন্ধার প্রাক্কালে বেচারা অশ্বিনী শুল্কমুথে রাজগাও ষ্টেশনে অবতরণ করিল। ক্ষুদ্র ষ্টেশন। মাত্র চারি-পাচটি যাত্রী ট্রেন হইতে নামিল । তাহদের মধ্যে অশ্বিনীকেই কেবল ভদ্রবেশপরিহিত দেখিয়া দাদামহাশয় অগ্রসর হইলেন। অশ্বিনীর দুশ্চিস্তাক্লিষ্ট মুখখানি দেখিয়া দাদামহাশয় বুঝিলেন, তাহার সংশয় অমূলক নহে। মনে মনে বলিলেন,—বহুৎ আচ্ছা, তুমি আসিতেছ বুক চাপড়াইতে চাপড়াইতে ; আর এদিকে এক জন আমার বাড়িতে বসিয়া লুচি চিবাইতেছে ! অশ্বিনীর বুকের মধ্যে তখন তুফান চলিতেছে। ঐ যে বৃদ্ধটি আগাইয়া আসিতেছেন, নিশ্চয়ই কোন আত্মীয় । ‘বিপন্না’ ! কি বিপদ ? অসুখ ? তবে কি ললিতা একেবারে-র 1 তাই পুৰ্ব্বাহ্নেই একটু সাত্মনা দিতে ইনি.তাহা হইলে সে কিন্তু এক পাও ষ্টেশন হইতে নড়িবে না । ললিতা, কিসের জন্ত এই জংলা দেশে আসিয়া বিঘোরে প্রাণটা খোয়াইলে ? অশ্বিনীর অজ্ঞাতসারে দুই ফোটা অশ্র তাহার গও বাছিয়া পড়িল । দাদামহাশয় অগ্রস্তুত ! গাছে না-উঠিতেই এক কঁদি ! শালার চক্ষে একেবারে বান ডাকিয় গেল । এদিকে যখন ললিতাসর্থী ঘণ্টাথানেক পরে সদলবলে