পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ অপচয়-নিবারণে রসায়ন-বিদ্যণ 翁>° শহরের আবর্জনার সুব্যবস্থ করা মিউনিসিপালিটির একটা বড় সমস্যা—স্বাস্থ্যের দিক দিয়াও বটে, সৌন্দর্যের দিক দিয়াও বটে। আমাদের দেশের শহরগুলিতে পোড়ো জায়গায় আবর্জনারাশি গুপীকৃত করিয়া রাখাই সনাতন প্রথা । উৎকট দুর্গন্ধে এগুলি চারিদিকের বাতাস দুযিত করে । মুষিককুল আসিয়া ইহার মধ্যে উপনিবেশ স্থাপন করে । কিন্তু পাশ্চাত্য দেশে এই সকল অবর্জন হইতে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় নানাবিধ মুল্যবান দ্রব্য প্রস্তুত হয় । শিশি-বোতলগুলি পরিস্তুত করিয়া ব্যবহৃত হয়, ভাঙা কঁচ দ্রবীভূত করিয়া নূতন জিনিয তৈয়ারী হয়। ছেড়া কাপড়ের টুকরা হইতে কাগজ প্রস্তুত হয়। অব্যবহার্য লৌহখণ্ড হইতে হীরকণ (Ferrous Sulphate ) তৈয়ারী হয় । কালি প্রস্তুত করিতে ইহার চাহিদা । ছিন্ন পাদুকা চুণাঞ্চত হইয়া জমির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি করে । টিনের টুকরা হইত ক্লোরেন-সংযোগ 'টন ক্লোরাইড প্রসূত হয়। কলে ইহার প্রয়োজন । অবশিষ্ট দ্রব্য পোড়:ইয়। যে তাপ পাওয়া কাপড়ের যায় তাহা বৈদ্যুতিক শক্তিতে পরিণত হইয়া কল চালয়, শহর আ লাকিত করে । যে ভস্ম পড়িয়া থাকে তাহা দিয়া প্রস্তুত কন্‌ক্রিট ( concrete ) গৃহনিৰ্ম্মণকৰ্য্যে ব্যবহৃত হয় । যে অংশ ধূলিতে পরিণত হয় তাহারও নিস্তার নাই—বৈদ্যুতিক উপায়ে তাহ একত্র করিয়া শুষ্ক ফসফরিক এসিড এবং সোরীর সহিত মিশ্রিত হইয়া জমির সার হয় । আমেরিকায় এই সকল আবির্জন হইতে প্রচুর স্নেহ-পদার্থ (fut and grease) BxH rei za i সাবান তৈয়ারী করিতে ইহা লাগে । হালিফাক্স শহরে কসাইখানার রক্ত হইতে ব্লাড সির’ম ( blood serum ) প্রস্তুত হইয়া থাকে। রসায়ন-বিদারি কৃপায় আবর্জনাও মিউনিসিপালিটির একটা আয়ের পন্থা হইয়াছে। বার্মিংহাম শহরে আবর্জন হইতে বাধিক আয় প্রায় ৫৩,০০০ পাউও— গ্লাসগো নগরের আয় আনুমানিক ৪০,০০,• • • পাউণ্ড । আশ্চর্য্যের বিযয়, এশিয়ার বৃহত্তম শহর কলিকাতায়ও (যে কর্পোরেশনের আয় আসাম প্রদেশের চেয়ে বেশী ) বিপুল আবর্জনারাশি আদি ও সনাতন প্রথায় স্থানে স্থানে পুঞ্জীভূত হইয়া এখনও নগরের শোভা বৰ্দ্ধন করে । ૭૨--હt রক্ত, জম্মিান বৈজ্ঞানিক লিবিগ ( Liebig ) বলিয়ছিলেন— যে-দেশ যত সাবান ব্যবহার করে সে-দেশ তত সভ্য । সভ্যতার বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে সাবাuনর চাহিদা অসম্ভব রকম বড়িয়া গিয়াছে । নানা প্রকার প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ তৈল হইতে কষ্টিক সেড সংযোগে সাবান প্রস্তুত হয়। এই সকল তৈলের অ্যতম প্রধান উপাদান—গ্লিসারিন । সাবান তৈয়ারী ব্যাপারে ইহা কোনই কাজে লাগে না । আগেকার দিনে সাবানের টুকুর লইয়া গেলে জলের সহিত মিশিয়া এই গ্লিসারিন ন দময় স্থান লাভ করিত। নোবেল সাহে বর ডিনামাইট আবিষ্কারের পর হইতে গ্লিসারিনের চাহিদ বড়িয়া গেল । তাহারই ফলে আজকাল সব নর কারখানা হইত গ্লিসারিন উদ্ধার করা হয় । সারা পৃথিবীতে গড়ে ও তি-বছর ৮০,০০০ টন গ্লিসারিন উৎ স্ন হয় । গত মহাযুদ্ধের আগে ইহার শেয বিন্দু আদিত সাবনের কারখানা হইতে । বর্তমানে এই প্রতিযোগিতার দিনে সাবানের কারখানার উন্নতি অনেকটা নিভর করে এই গ্লিসরিন উদ্ধারের উপর। বস্তুতঃ, গ্লিসারিন হঠতে সাবান-তৈয়ারী খরচ উঠিয়া যায়-সাবান থাকে লাভের অঙ্কে । কলিকতীয় অনেক সাবানের কারখানা হইয়াছে, কিন্তু কোনও কারখানায় গ্লিসারিন উদ্ধার করে বলিয়া অবগত নহি । সালফিউরিক এসিড-সংযোগে কাপড় কাচিবার সোডা প্রস্তুত করিত প্রভূত পরিমাণে হাইড্রোক্লোরিক এসিড গ্যাস উখিত হইয়। আগেকার দিনে চতুপার্শ্বস্থ অধিবাসী-দর স্বাস্থ্য হানি করিত—ঘর-বাড়ি ও গাছপালা নষ্ট করিত। এজষ্ঠ ১৮৬৬ খ্ৰীষ্টাব্দে ব্রিটিশ পালেমেণ্ট কর্তৃক আইন (Alkali Act)fবধিবদ্ধ হইল–হাইড্রোক্লোরিক এসিড গ্যাস বাতাসে ছাড়িয়া দিলে আইনতঃ দণ্ড পাইতে হইবে । তখন সোডার কারখানা সংথ্যায় কম ছিল— লাভ হইত প্রচুর । হাইড্রো ক্লারিক এসিড উদ্ধার করিবার প্রয়োজনীয়তা কারখানার মালিকগণ অনুভব করিত না। কিন্তু জগতের বৃহত্তম সেডার কারখানা—ব্রুণারমও এণ্ড কোং নুতন উপায়ে সস্তায় সোডা প্রস্তুত করিতে আরম্ভ করিয়া দিল । পুরাতন কারখানাগুলির অবস্থা শোচনীয় হইয়া উঠিত হাইড্রোক্লোরিক এসিড উদ্ধার করিতে না