পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○の墜 মুনমা গম্ভীর হইয়া বলিল, “মা, আমি কি তোমাকে বলি নি পণ দিয়ে আমি কোন ছেলেকে ৰিয়ে করব না ? তোমরা এ-বিয়ের আয়োজন ক’রো না ।” মা বলিলেন, “পাগল'মী করিস না । পণ কেন ? তেরি বাপ যদি দিতে পারেন, দেবেন না কেন ? সুনমাণ বলিল—ইচ্ছা ক’রে কি তোমরা এত টাকা দিচ্ছ? আর তোমরা হয়ত দিতে পার, যার ঘরে পাঁচটি মেয়ে, সে কি ক’রে প্রত্যেক মেয়ের জন্তে এত টাকা দেবে? ন-দিতে পারলে সে ভাল পাত্র পাবে না ? তুমি কি বলতে চাও বরপক্ষ টাকা দাবি করেন নি ? মা বলিলেন—তোমার অত ঘেঁজের দরকার কি ? বিয়ের কনে, চুপ ক’রে থাকবে । অত বড় ভাল নয়। সুনন্দ রাগ করিয়া সেদিন ঘরে দরজা বন্ধ করিয়া রছিল, থেলিতে গেল না । ইন্দুবাবু বার-বার ডাকিয়াও মেয়েকে ঘর হইত বহির করিতে পারিলেন না। অসুখ হইয়ছে, অজুহাত দিয়া বন্ধুবান্ধবের হাত হইতে নিস্কৃতি পাইলেন । পরদিন ইন্দুবাবু সুনন্দাকে অনেক বুঝাইলেন । নন্দ শাস্ত ধীর ভাবে উত্তর করিল, “তোমরা যা ভাল বোঝ তাই কর, আমি তারি আপত্তি করব না ।” ইদুবাবু মেয়ের হুমতি হইয়াছে বুঝিয় নিশ্চিন্ত হইলেন । ( → ) রেঙ্গুনের বন্ধুবান্ধবের পরামর্শে “শশী নিয়োগ হলে" দুই দি নর জন্ত পঞ্চাশ টাকা ভীড়া দিয়া বিবাহের স্থান ঠিক হইয়াছে। ইদুবাবু মফস্বলের বাসিন্দা, কাজেই রেমুন শহরে পরিচিত বন্ধুবান্ধব খুব কমই ছিল । কিন্তু বরপক্ষীয়রাই চার শত বরযাত্রীর অভ্যর্থনীর আয়োজন করিতে আদেশ করিয়াছেন। সুনন্দার স্কুলের সহপাঠিনী দুই তিনটি বিবাহিত মেয়ে নিমন্ত্রিত হইয়া আসিয়ছিল । তাঁহাদের সহিত বহুকাল পরে সুননার সাক্ষাৎ হওয়ায় সে খুব আনন্দিত হইল। তাহারা সুনন্দাকে সাজাইতে মহা ব্যস্ত। সুনীতা বলিল, “হা, রে ভুই না বলুতিস, যে-ছেলে পণ চাইব, তাকে কখনও বিয়ে &প্রবামীতে ఏన98S করবি না, এখন ষে রাজী হলি ? ছেলেটিকে খুব পছন্দ বুঝি ?” মুনমা বলিল—কে বলেছে পণ নেবে ? সুনীত বলিল—উনি ত বলছিলেন, সুধীন্দ্র বাবু নাকি বিলেত যাবার টক না-পেলে বিয়েই করবেন না, বলেছিলেন । তোর বাবা নগদ দু-হাজার টাকা, গয়না, বিয়ের দিন দেবেন আর দু-বছর মাসে মাসে তিন-শ টাকা ক’রে বিলেতের পড়ার খরচ পাঠাবেন, এই কড়ারে নাকি ছেলে রঞ্জিী হয়েছে। কি জানি ভ ই, সত্যি কি মিথ্য ! নীরজা বলিল—এ আর আশ্চর্য কি ? আজিকলি পাস-করা শিক্ষিত ছেলেদেরই ত ইকিটা বেশী । মনে করেন, পাস ক’রে যেন সকলের মাথা কিনে নিয়েছেন । আমরা যেন মুখু মেয়ে, আমাদের জন্তে টাকার দাবি তৰু মানায়, তোদের মতন পাস-করা মেয়ের জঙ্গেও টাকা চাইতে লজ্জা করে ন! ওদের ? সুনন্দার মুথ লজ্জায়, অপমানে রাঙা হইয়া উঠিল । তাহার মনে হইতে লাগিল, সে কি নিৰ্ব্ব,দ্ধিতা করিয়াছে, কেন সে পিতার নিকটে সম্মতি দিল ? বাবা বলিলেন, সব ঠিক হইয়াছে, তারিখ পর্যন্ত । মায়ের কাছে কিছু বলিতে যাওয়া অসম্ভব। কেন সে পিতাকে নিজের অসম্মতি জোর করিয়া বলিতে পারিল না ? সুধীন্দ্রকে তাহার ভাল লাগিয়ছিল সত্য, কিন্তু সে ত সুনন্দকে ভালবাসিয়া বা পছন্দ করিয়া বিবাহ করিতেছে না । সে বিলাত যাইবার টাকা চায়। যদি সুনন্দার বাবা অর্থ দিতে সমর্থ না-হইতেন তবে কি সে সুনন্দাকে বিবাহ করিত ? অর্থের মুল্যে আজ সে নিজেকে বিক্রয় করিতেছে ? কোথায় গেল তাহার আদর্শ, কোথায় গেল তাহার শিক্ষা ? যতই সে চিন্তা কয়িতে লাগিল, ততই ভাহীর দুঃখে, অপমানে, ক্রোধে দেহ মন উত্তপ্ত হইয়া উঠিল । সাজ-সজ্জা ছিড়িয়া ফেলিতে ইচ্ছা হইল। কেবল মনে হইতে লাগিল, এখনও কি কোন উপায় নাই ? বন্ধুরা তাহার মুখের ভাব দেখিয়া বুঝিতে পারিল তাহার মনে কোন সংগ্রাম চলিতেছে। অরুণা বলিল— কেন ভাই, তোরা ওসব কথা এখন তুললি ? দ্যাথ ত ওর মনটা কি রকম বিমর্ষ হয়ে গেল ? মেয়েদের কত রকম