পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ অপরূপ জীব। এইখানে কাবুল থেকে আগত অনেকগুলি মালবাহী বাস দেখা গেল, একটি থেকে আমরা কাবুলী খরমুজ বা সর্দা কিনলমি খুব সস্তায় । সর্দার সুমিষ্ট অস্বিাদ র্যারা জানেন তাদের অধিক বলা নিম্প্রয়োজন । লাতিকেfটাল থেকে বাস চলল ভারতের সীমান্তের অভিমুখে । এখান থেকে পথের উৎরাই আরম্ভ হয় । ঈষৎ বক্রগতিতে গিরিপথ পাহাড়ের গা বেয়ে নীচের দিকে যেন গড়িয়ে চলেছে। শীঘ্রই লাণ্ডিপনি সেনানিবাস দেখা গেল— এটি আপাতত: পরিতাক্ত হয়েছে । লাগুিথান থেকে আরও ক্র শখ ম:র পর বাস্ টেরিপান্‌ নামক পল্লীতে এসে দাঁড়াল এইটিই ব্রিটিশ ভারতের সীমানা ! পথের উপর প্রকাণ্ড ফটক—তাঁর এক দিকে সশস্ত্র ব্রিটিশ খাদাদার-প্রহরী, অপর দিকে দুটি আফগান সৈনিক – মাথায় তাদের লোহর হেলমেট্‌, যদিও পরনের পোশাক দেখে শ্রদ্ধা হ’ল না, তা এমনই শ্রীহীন ও দরিদ্র্যব্যঞ্জক । কাবুল-বাজ্যের দৈত্য ও থাইবার-পথে রেল বিশৃঙ্খলা ধেন তাদের আকারে ও পরিচ্ছদে সম্পূর্ণ প্রতি ফলিত । আকৃতিতেও তার মোটেই বলিষ্ঠ বা দীঘ নয় । ক্ষীশ্লকুতি বাঙালীকে সামরিক সাজে যেরূপ দেখায় অনেকটা সেইমত তাদের বোধ হচ্ছিল । আমাদের দলের কয়েক জন তাদের ফোটো তুলতে চাইলেন, কিন্তু তারা ইঙ্গিতে অসম্মতি জানালে ; বন্ধুবর শ্রীশৈলেন দাশগুপ্ত ও মিষ্টার এফ. টি. রয় কিন্তু কৌশলে তাদের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। ব্রিটিশ খাসাদারপ্রহরী কিন্তু বেশ সপ্রতিভ ও অমায়িক লোক, আফগান সৈনিকদের মত অস্বাভাবিক রকম গম্ভীর নয়। সে সম্মিত ভাবে আমাদের সহিত আলাপ করলে, ও আমাদের সহিত খাইবার-সীমান্তে &SS শৈলশিখরে ছোট ছোট সেনানিবাস ছবি তোলাতে সংগ্রহে সম্মত হ’ল । ফটকের পাশে আমাদের একটি গ্রপ ফোটো তোলা হ’ল ৷ ফটকের এক পাশে একটি ইস্তহার দেখা গেল—সেটি বাংলায় অনুব করলে এইরূপ দাঁড়ায় – “ভারতের সীমান্ত– পাসপোর্টের নিয়ম না মেনে যাত্ৰীগণের এই নোটিশবোর্ড অতিক্রম করা নিষিদ্ধ ” ফটকের দক্ষিণ দিকে একটি উচু টিলা আছে, সেখানে ধানিক ক্ষণ বিশ্রাম ও সর্দাগুলির সদ্ব্যবহার করা গেল । দূরে চোখে পড়ে জালালাবাদ ও কাবুলগামী মোটর-বাস একটির পর একটি আসছে বা যাচ্ছে । কাবুল সরকারের পেট্রেলিবাহী বাস অনেকগুলি চোখে পড়ল, কারণ শুনলাম প্রত্যহ পেশোয়ার থেকে পেট্রোল কাবুলে পাঠানো হয় । টোরথানু পাহাড়ের মাঝে উপত্যকাবিশেষ। এইখানে এক পাশে ভারতবর্ষের সীমানা, অপর দিকে কাবুল-রাজ্যের অীরস্থ । স্থানমাহাত্ম্য এমনই যে মনের ভিতর একটা অপূৰ্ব্ব বিস্ময় ও আনন্দের ভিড় লেগেছিল। নিজের দেশকে এমন ভাবে এর পূৰ্ব্বে কখনও অনুভব করি নি— যেমন সেদিন দেশের সীমানায় এসে করতে পেরেছিলাম । সেই নির্জন নিস্তব্ধ স্থানে সকলেই কেমন যেন আনুমন) হয়ে পড়েছিলাম, হঠাৎ কানে এল বাস্-চালকের চীৎকার, —“বাবু দেরি করবেন না, জামরুদের ফটক বন্ধ হয়ে যাবে ”