পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা শ্রীরামচন্দ্ৰ ভঞ্জ দেও ঐযোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি ইং ১৮৮৯ সাল । সে বৎসর গ্রীষ্মের ছুটির পর আমি দ্বিতীয় বার কটক কলেজে গেছি। দেখি, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে এক সৌম্যমূর্তি শাদা-পেনটুলেন-চাপকানপর এক ছাত্র আমার ব্যাখ্যান শুনছে । এ-পাশে সে-পাশে ?ि नाझे, शैज़ ७ श्हि । दशकः ¢क ? পরে শুনলাম ময়ূরভঞ্জের ভাবী রাজা শ্রীরামচন্দ্ৰ ভঞ্জ দেও ! রাজপুত্রই বটে। সুকুমার মুখ আভিজাতের অভিমানে মণ্ডিত হয়েছে। মৃদুভাষী, অল্পভী, বিনীত, নম্র । কেবল আমি নই, কলেজের অন্য শিক্ষকেরাও তার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। যিনি দু-তিন বছর পরে ময়ূরভঞ্জের রাঙ হবেন, তার সঙ্গে ভাব করতে পারলে একটা-লা-একট, ভাল চাকরি জুটবে। তার সহপাঠীদের মনে এ চিন্তু আসা স্বাভাবিক। কিন্তু দেখতাম ব্যাখ্যানের অবকাশে শ্রীরাম ঘরের বাইরে এক আগুদগাছের তলায় দাড়িয়েছেন, সেই দু-তিনটি সহপাঠীর সঙ্গে কথা কইছেন, অন্য কোন ছাত্রকে দেখতে পেতাম না। হয়ত তারা কাছে যেতে সঙ্কুচিত হত। আলাপ-বিমুখের কছে কেহ যায় না । ওড়িষ্যার বড় নদী, মহানদী। কটকের সাত-আট মাইল পশ্চিম-দক্ষিণে এর এক শাখা বেরিয়েছে । এষ্ট শাখার নাম, কাঠফুড়ি। দক্ষিণে কাঠফুড়ি, উত্তরে মহানদী। এই দুই নদীর মধ্যে ত্রিকোণ ভূমিতে কটক । কলেজ কাঠজুড়ির নিকটে। আমার ও কলেজের অন্য শিক্ষকদের বাসা কলেজের কাছে ছিল। মহানদীর দিকে, কলেজ হতে প্রায় দুই মাইল দূরে, একটা গ্রামের নাম তুলসীপুর। সেখানে একটা কুঠতে শ্রীরাম থাকতেন। গোবিন্দবাবু ঠার গৃহ-শিক্ষক ছিলেন। তিনি স্ত্রীরামকে পুত্রবৎ চোখে চাখে রাখতেন। তার শিক্ষায় গুণেও শ্রীরামের স্বভাব ধুর হয়েছিল। তিনি বেশভূষায় আড়ম্বর আসতে দেন নি। কলেজের বাইরে শ্রীরামের সঙ্গে দেথা হ’ত না । এক দিন শুনলাম ঐরামকে বিলাত পাঠাবার কথা হচ্ছে । দৈবাৎ সেদিন ঘরের বাইরে তার সঙ্গে দেখা হয়। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইংরেজীতে, "আপনার বিলাত যাবার'কথা শুনছি। প্রজার বিরক্ত হবে না ? তিনি উত্তর করোছিলেন, "বিরক্ত হবার কারণ দেখি না। যদি কেহ হয়, বিলাত হ’তে ফিরে এলে সে কারণ পাবে না ’ বুঝলাম, বালক বটে, বয়স আঠার বছর, কিন্তু দৃঢ়চিত্ত ও পরিণামদর্শী। পয়তাল্লিশ বৎসর পূবে, বিশেষতঃ ওড়িযায়, সমুদ্রযাত্রা করলে ভাতি-নাশের শঙ্কা ছিল । কিন্তু শ্রীরামচন্দ্রের বিলাত যাওয়া হয় নাই। ইং১৮৯৩ সালে এফ-এ পাস হ’য়ে কলেজে বি-এ পড়তেও আসতে পারেন নি। দুই বৎসর পরে তাকে রাজ্যভার নিতে হব, এখন রাজকম শিখতে হবে, কলেজে পড়তে আসভে গেলে সে শিক্ষা হবে না। ময়ূরভঞ্জের রাজধানী বারিপদ । তিনি সেখানে থেকে ইং১৮৯০ সালে জুন মাসে আমাকে এক পত্র লেখেন । এই আমাকে তার প্রথম পত্র। তিনি লেখেন, তিনি বাড়ী বসে বি-এ পরীক্ষার জন্ত পড়বার সংকল্প করেছেন, বিজ্ঞান শাখা পড়বেন। ভূতবিদ ( Physics ) শিখতে কি কি যন্ত্র কিনতে হবে, তার একটা তালিকা চান। তঁর এই সংকল্পে আমি আনন্দিত হয়েছিলাম, এবং যন্ত্ৰ-মূল্যপুস্তকে চিহ্নিত করে তালিকা পাঠিয়েছিলাম। " দিন পনর পরে তিনি দ্বিতীয় পত্রে জানতে চান, আমি ੇ কাছে যেতে পারব কিনা । নানা কারণে আমি সম্মত হ’তে পারিনি । কটক কলেজে তখন মোহিনীমোহন ধর, এম-এ, বি-এল, গণিত-বিদ্যার ‘লেকচারার’ ছিলেন। তার চাকরি বেশী দিন হয় নি । রাজা তাকে পত্র লেখেন, এবং মোহিনীবাবু কলেজের কম ছেড়ে দিয়ে রাজার কাছে চলো যান। অক্টোবর মাসে রাজা আমাকে লেখেন, তিনি কতক