পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミ.の যন্ত্র কিনেছেন, এবং মোহিনীবাবুকে বারিপদায় নিয়ে গেছেন। তিনি এর কাছে গণিত ও ভূতবিদ্যা পড়বেন, আইন শিখবেন, এবং বিচারপদ্ধতি জেনে নিবেন । রাজার শিক্ষণ সমাপনের পর মোহিনীবাবু ময়ূরভঞ্জের দেওয়ান (প্রধান বিচারপতি) হ’য়ে বারিপদায় বৃ’য়ে গেছলেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় রাজাকে অনুমতি দিলেন না, তার বি-এ পরীক্ষা দেওয়া হ’ল না। কিন্তু বাড়ীতে পাঠ্য বিষয় শিখেছিলেন। একবার রাজা দুঃখ করে আমায় লিখেছিলেন, র্তার অধিকাংশ সময় রাজকার্বে বাচ্ছে, পড়ার সময় হচ্ছে না। নিসর্গে ও রাষ্ট্রে ওড়িয্যর দুই ভাগ ব্ৰাহ্মণী, বৈতরিণী, মহানদী ও মহানদীর শাখার পলি ও বালি দ্বারা বালেশ্বর, কটক, ও পুরী, এই তিন জেলার উৎপত্তি হয়েছে । এই তিন জেলা ওড়িষ্যার পূর্বভাগ, পরে সমুদ্র । পশ্চিম ভাগ উন্নতানত, পর্বতময়, অরণ্যময় ওড়িষ্যার তিন ভাগের দুই ভাগ এই রূপ। পূর্বকালে সমুদয় ওড়িষ্যা খণ্ড খণ্ড রাজ্যে বিভক্ত ছিল। মোগলের পূর্ব দিকের সমস্থলী স্বীয় অধিকারে এনেছিল। এই হেতু এই ভাগের নাম মোগলবনী হয়েছিল । ব্রিটিশের ইং ১৮০৩ সালে মোগলবন্দী দখল করেন । বিষমস্থলীর রাজারা অল্পস্বল্প কর স্বীকারে ব্রিটিশের সহিত সন্ধি করেন । রাজার এক এক গড়ে থাকতেন । গড়, যৎসামান্ত গিরিদুর্গ। গড়ই তাদের রাজধানী। যত রাজ্য, তত গড় । এই কারণে করদরাজ্যগুলির নাম গড়জাত (গড়সমুহ )। ব্রিটিশের এই সকল রাজ্যের নাম ওড়িষ্যার গড়জাতমহল অথবা zooga, ( Tributary Mahals ) Cotfot I *Co off o'o foota) (Feudatory States) নাম হয়েছে। ইংরেজ দপ্তরে নাম যাই হক, সাধারণে গড়জাত জানে, গড়ের রাজা স্বীকার করে । এককালে ১৮টি গড় বা রাজ্য ছিল । অধিকাংশ ছোট ছোট। ময়ূরভঞ্জ ও কেঙঝর (ঙ উচ্চারণে ওঁ ) সর্বাপেক্ষ বড়। দুই রাজ্যেরই আদি প্রতিষ্ঠাতা তঞ্জ-বংশ । দুয়েরই লাঞ্ছন ময়ুর। ব্রিটিশের সহিত সন্ধির পর রাজাদের রাজ্যশাসন ক্ষমতা খর্ব হয়েছে । যখন করদরাজ্য নাম ছিল, ভখন ওড়িষ্যাবিভাগের অর্থাৎ বালেশ্বর কটক পুরীর কমিশনার সাহেব "প্রবাসী; ఏ98S! গড়জাতের অধ্যক্ষ (Superintendent ) ছিলেন । সমস্ত রাজ্য নাম হবার সঙ্গে এক পৃথক অধ্যক্ষ ( Political Agent ) নিযুক্ত হয়েছেন । শ্রীরামচন্দ্রের সময় ময়ুরভঞ্জ ও অন্তান্ত গড়ের ব্রিটিশ অধ্যক্ষ, ওড়িষ্যার কমিশনার ছিলেন। স্ত্রীরামচন্দ্র তার পিতার জ্যেষ্ঠপুত্র। তিনি ময়ূরভঞ্জরাজ্যাধিকারী, তিনিই রাজা । ইং ১৮৯২ সালে তিনি রাজপদে প্রতিষ্ঠিত হন । রাজা তাঁর পৈতৃক পদবী । ইং ১৯০৩ সালে ব্রিটিশ গবমেণ্ট তাকে মহারাজ উপাধি দিয়েছিলেন। সেটা উপাধি, তন্দ্বারা তার পদবৃদ্ধি হয় নি। R কটক কলেজে পৃথক বিজ্ঞানশীল ছিল না । এই অভাবহেতু কষ্টের সীমা ছিল না । শ্রীরামচন্দ্র দেখে গেছলেন । এজার ( S. Ager ) নামে এক সাহেব প্রিন্‌সিপাল ছিলেন। তাকে বলা বলে দেখিয়ে দেখিয়ে কষ্টে ফেলেও গবমেণ্টের কাছে চিঠি লেখt.ত পারি নি। তিনি টাকা চাইতে ভীত হ’তেন। কলেজের ছাত্র এখন রাজা হয়েছেন, তার কাছে টাকা চাইতে লজ্জা কি ? তাড়াতাড়ি একটা বিজ্ঞানশালার চিত্র লিখে নিৰ্মাণব্যয় ১৮,০০০ নিরূপিত হ’ল । রাজ্যকে প্রথিলামাত্র তিনি টাকা দিতে সন্মত হ’লেন। অবং প্রিনসিপাল পত্র লিখেছিলেন। সরকারী ইঞ্জিনিয়ার সে-টাকায় গৃহনিমণি করিয়ে দিলেন। তথনকার পক্ষে সে গৃহ যথেষ্ট হয়েছিল । রাজা হবার পাঁচ-সাত বৎসর পরে শ্রীরামচন্দ্র কটক এসেছিলেন । তিনি এসেছেন জানলে দেখা করতে যেতাম । জানলাম তারই নিমন্ত্রণে, রাত্রে ভোজনের নিমন্ত্রণ। সেবারে তিনি মহানদীর তীরে একটা কুঠতে ছিলেন, আমাদের পাড় হ’তে দেড় মাইল দূরে। তখন নীলকণ্ঠ মজুমদার কলেজের প্রিনৃসিপাল । তিনিও নিমন্ত্রিত হয়েছিলেন । র্তার বেরতে দেরি হ’ল, ঘোড়ার গাড়ীর অশ্বযুগলও যেতে দেরি করলে। প্রায় রান্ত্রি ৯টার সময় কুঠতে পছছিলাম। দেখি, একটা বড় ঘরে গালিচা পাতা, কটকের গণ্যমান্য পদস্থ বিশ-পচিশ জন বসেছেন, রাজা ধরের মাঝে, আর সতি-আটজন তাকে ঘিরে বলেছেন । সে ব্যুহ ভেদ করা আমার কঠিন, তারও কঠিন। রাজা