পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাতিক মাটি কোথা হ’তে এসেছে, তাতে কি আছে, জেনে রাখলাম । ১২টার সময় রাজা এলেন । তার সঙ্গে আবার সব দেখতে লাগলাম। নানা প্রকার বস্ত্র, লোহার অস্ত্রশস্ত্র, পিতলকাসার তৈজসপত্র · ইত্যাদি ছিল । ময়ুরভঞ্জ হ’তেও এসেছিল । আমরা এক একটি দেখি গুণপণার প্রশংসা করি । এক একটা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমাদের, বিশেষতঃ বাঙ্গালীর, বর্তমান চোখে সব সুন্দর নয়, কিন্তু কত কালের উদ্যমে ও সাধনে কলার তেমন উৎকর্ষ হয়েছে ! আমি রাজীকে এক একটা দেখাই, আর বলি, ‘রাজ, এই যে কলা, একি লুপ্ত হবে ? এইবে কৌশল, এক একটু নূতন পথে চালিয়ে দিবার কেহ নাই কি ?’ দ্রব্যগুলি রাজার কাছে নূতন ছিল না, কিন্তু তিনি গুণপণ ভেবে দেখেন fন । পরে সেই চার হাড়ীর কাছে এলাম। একটু কৌতুক ক’রে রাজাকে বললাম, রাজা, গড়জাতী বুদ্ধি দেখেছেন, মাটি পাঠিয়েছে ? রাজাও দেখলেন মাটি । একটা হাড়ী তুলে বললেন, ‘ভারী ঠেকছে, মাটিতে কিছু থাকবে ।’ ‘এক হাড়ী মাটি, ভারী ত হবেই। কিছু মাটি নিয়ে দেখালাম, সোনার আঁধ চিকচিক ক’রছে । কেরানী কাছে দাড়িয়ে ছিল, "বল ত কোথা হ’তে এসেছে " এই দু-হাড়ী ময়ূরভঞ্জ হ’তে, এই ছ-ইঞ্জিী অমুক গড় হ’তে।” সোনা ও ময়ূরভঞ্জের নাম শুনে রাজার আগ্রহ হ’ল, জায়গার নাম গুনে বিশ্বাস হ’ল । তাই ত, সেখানে সোনা পাওয়া যায়, আমি জানতাম না ’ ‘কে জানবে ? ময়ুরভঞ্জ রাজ্য আপনার । আমার মনে ক’রলেও আপনার ক্ষতি হবে না ’ রাজা অবশু মম বুঝলেন । এর প্রায় পাঁচ-ছয় মাস পূর্ব হ’তে আমি কুম্ভকলা জানতে বসেছিলাম। আমি তখন বাসায় কুম্ভকার । এই কাজের নিমিত্ত একটা পাথর খুজছিলাম। পাথরটা ইংরেজীতে ফেলুলপার (felapar), বোধ হয় সংস্কৃত নাম চপল । কটকের নিকটের পাহাড়ে পেলাম না । তালচেরের রাজাকে (বর্তমান রাজা ), কেঞ্চকুরের মহারাজা ও ময়ূরভঞ্জের রাজা শ্রীরামচঞ্জকে প্রার্থনাপন্ন লিখলাম, তাদের রাজ্যে যত রকম পাথর আছে অনুগ্রহ কর্যে এক এক টুকরা পাঠিয়ে দিবেন। সংক্ষেপে বহলক্ষণ দিয়েছিলাম । তথাপি এই বুদ্ধি করতে হয়েছিল। কারণ, থাকলে দেী রাজা রামচন্দ্র ভঞ্জ দেও ఫ్చిN নাম থাকবে, সে নাম আমি জানি না, সকলে বহিলক্ষণ বুঝবে না, নমুনা পাঠালে খাটি কিলাস (crystal ) খুজবে, না পেলে ‘নাই’ ব’লবে । ইং ১৯০১ সালের মাচ মাসে পত্র লিখি । তিন চীর মাস মধ্যে তালচের ও কেউঝর পাথরের অনেক টুকরা পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু একটাও চপল নয় । রাজা শ্রীরামচন্দ্র আমার পত্র পেয়েই লিখলেন, তিনি এক ভূবিদ্যাবিৎ দ্বারা ময়ূরভঞ্জের কিয়দংশ পর্যবেক্ষণ করিয়েছেন, কিন্তু কাজ ভাল হয় নাই, স্থগিত রাখতে হয়েছে, অবসর পেলেই আবার করবেন। আরও ক্লিখলেন, র্তার এক শিলা-সংগ্ৰহ আছে, আমার দেখবার তরে.তিনি সেটি পাঠাতে পারেন, কিন্তু দিতে পারবেন না । আমি পত্র পেয়ে অহাদিত হ’লম, শিলা-সংগ্ৰছ পাঠিয়ে দিতে লিখলাম। রাজা লিখলেন, তাই ত । খুজে পাচ্ছি না । কোথায় গেল, কেউ বলতে পারছে না। মোহিনীবাবু জানতে পারেন, তাকে লিখবেন।’ মোহিনীবাবুকে লিখলাম, তিনি শিলা-সংগ্রহ দেখেন নি, পাথর-টাথর চিনেন। না । তিনি অরণ্য-বিভাগের এক কমচারীকে পরোয়ন। পাঠালেন, আমার যখন যে পাথর দরকার হবে, তিনি, পাঠিয়ে দিবেন । অগতা আমাকে একে পত্র লিখতে হ’ল, কিন্তু ছ-মাস পরে ইনি সেরখানেক ওজনের স্ফটিকের, একটা কিলাস পাঠিয়ে দিলেন । আমি হতাশ হয়ে আক্ষেপ কর্যে রাজাকে লিখলাম, ‘রাজা, আপনার রাজ্যে কোথায় কি আছে, কেহ জানে না, চিনে না ।” সে বৎসর বোধ হয় এপ্রিল মাসে, টি-চৌধুরী নামে এক, ভদ্রলোক আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। কথায় বুঝলাম, রাজা একেই শিলা-সংগ্রহে নিযুক্ত করেছিলেন। এর লম্বা লম্বা কথা শুনে আমার শ্রদ্ধা হ’ল না। ইনি সীসার আকর, গেলিনা’র (Galena) কিলাস দেখালেন, ময়ূরভঞ্জে পেয়েছেন। আমার বিশ্বাস হ’ল না। রাজা মুর্থ নহেন যে এই আবিষ্কারের মুল্য বুঝতে পারেন নাই । চৌধুরী-মশায়ের ইচ্ছা আমি রাজাকে পত্র লিখি, ইনি যোগ্য লোক, একে রাখলেই উদেণ্ড সিদ্ধ হবে। আমি অখণ্ড লিখলাম না । সে সময়ে আমি বালেশ্বরের রাজা বৈকুণ্ঠনাথ দে ৰছাছুরের নিকট হতে পোয়াটাক ভারী একটা কাল-পাথর.