পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুকুন্তন সমস্ত মন পূর্ণ হইয়া উঠিল। প্রতিভর চোখে সে একবার স্বামীর দিকে একবার ঘুমন্ত ছেলে-মেয়ের পানে চাহিল। একটু আগে মেয়েকে অন্তায় করিয়া অমন মারার জন্ত স্বামীর উপর তাহার মনে যত অভিমান যত ক্লেশ সঞ্চিত হইয়াছিল, যত অশ্রুবাম্প ঘনীভূত হইয়া উঠিয়াছিল, সমস্ত কাটিয়া গেল। বাণীর সুরের মায়ায় তাহার একটানা ক্লাস্তিকর জীবনের উপর হইতে এক নিমেষে যেন সকল আবরণ খসিয়া পড়িল । ছেলে অসুস্থ হইলে, রাগ অভিমান করিলে সব সময়ে ত তাহার মেজাজ ভাল থাকে না, তখন মায়ের উপর অযথা পীড়ন করে। মাকে কষ্ট দেয় । কিন্তু তাই বলিয়া মা কি ছেলের উপর রাগ করিম থাকিতে পারেন ? মাতার সেই বিশাল ধৈর্য্যপূর্ণ অন্তর লইয়া সুমন তাহার স্বামীর সমস্ত কঠোর সংস্কৃত শিক্ষণ ও জীবিকা g8° ব্যবহার ক্ষমা করিয়া ফেলিল। মনে মনে কছিল, ‘বাইরের নানা অপমান নানা ধাক্কা ওঁকে সইতে হয় । তাইতেই আমাদের সঙ্গে মাঝে মাঝে এমন ব্যবহার ক’রে ফেলেন । না-হয় মানলুম আমার ছোট সংসারে অনেক দৈন্ত অনেক অভাবঅনটন। কিন্তু আমার মত এমন করে ভালবাসবার সুযোগ পেয়েছিল ক'জনে, আর এত বেশী ক'রে তা ফিরে পেয়েছিলই বা কে I’ কয়েকটা বাড়ির পরে ধনধনিয়াদের মন্ত বড় ত্রিতলের ছাদে তখন রামখেলাওন বঁাশীতে কানাড়ার সুর ধরিয়াছিল। আকাশের তারা অতন্দ্র হইয়া চাহিয়াছিল, আর নিভৃত জ্যোৎস্না ক্ষণে ক্ষণে মৰ্ম্মরিত হইয়া, উঠতেছিল। ংস্কৃত-শিক্ষা ও জীবিকা ঐবৈদ্যনাথ কাব্য-পুরাণতীর্থ সংস্কৃত ভাষা একদিন ভারতের জাতীয় ভাষা ছিল । আঙ্ক হিন্দী ভাষাকে যে-স্থানে প্রতিষ্ঠিত করিবার প্রচেষ্ট। চলিতেছে-ভাব-সম্পদে ও ভাষার চমৎকারিতীয় সংস্কৃত ভাষা কোন আদিম যুগে আপনিই সে-স্থান অধিকার করিয়াছিল । জগতের বিভিন্ন জাতি এই ভাষার দর্শন সাহিত্য জ্যোতিষ প্রভৃতি শাস্ত্রগ্রন্থ পাঠ করিয়া আনন্দে বিভোর। এই সংস্কৃত ভাষার অন্তরালে আমাদের পূর্বপুরুষগণের যে অমুল্য দান আত্মগোপন করিয়া রহিয়াছে তাহার সন্ধান লওয়া কৰ্ত্তব্য । আমাদের ক্রিয়াকলাপ ভজন-পূজন প্রায় সমস্ত বিষয়ই সংস্কৃত ভাষার সাহায্যে হইয়া থাকে । আজও আমরা জ্ঞানে অজ্ঞানে উৎসবে ব্যসমে সেই সংস্কৃত তাধারই সেবা করিয়া আসিতেছি । বিবাহ জীবনের শ্রেষ্ঠ সংস্কার। তাহাত্তেও আমরা সংস্কৃত ভাষায় মন্ত্রপাঠ করিয়াই দম্পত্যজীবন লাভ কন্ধির সংসারপথে প্রৰিষ্ট হইতেছি । আমাদের চরম সংস্কার শ্রাদ্ধ তৰ্পণ—তাহাও দেবভাষার সাহায্যেই চলে । জাতীয় জীবনের মূলভিত্তি জাতীয় সাহিত্য । আজ অবঙ্গ রবীন্দ্র-শরৎ-সেবিত বঙ্গভাষা বাঙালীর জাতীয় সাহিত্যের দাবি রাখে। ভারতের কিন্তু নয়। একদিন এই সংস্কৃত ভাষা সে-স্থান পূরণ করিয়াছিল । সংস্কৃত আলোচনা শিথিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সারা ভারতের - জাতীয় জীবনের মূলভিত্তি দুৰ্ব্বল হইয়া পড়িয়াছে। ভারতের হিন্দু সমাজের বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগণের সাধারণ ভাষা ছিল সংস্কৃত। রাষ্ট্র বাণিজ্য প্রভৃতির কার্যকলাপের সংস্কৃত ভাষাই ছিল একমাত্র যোগসুত্র। আজ অবশ্ন রাজভাষা ইংরেজী লেস্থান অধিকার করিয়াছে । ভারতীয় সভ্যতার গৌরব বেদ বোস্ত তন্ত্র পুরাণ স্থতি দর্শন সাহিত্য সমস্তই সংস্কৃত ভাষায় নিবন্ধ । যে-জাতি নিজের বিশেষত্ব বিসর্জন দিয়া অপরের