পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফান্তন ছোটনাগপুরে সাহিত্যসেবার উপাদান তবে ইতিহাস-পাঠে জানা যায় যে, দিল্লী-সম্রাট মুবারক শাহের প্রধান মন্ত্রী মলিক সৰ্ব্বর ১৩৯৪ খ্ৰীষ্টাব্দে “তুলতানটফ-শার্ক” ( পূৰ্ব্বদেশের রাজা) উপাধি অবলম্বন করিয়া সমটিকে অবজ্ঞা করিয়া জৌনপুরে স্বাধীন রাজ্য স্থাপন করেন এবং পশ্চিমে অযোধ্য হইতে কোইল পর্যন্ত এবং পূৰ্ব্বে ত্রিহুত ও মগধ পৰ্য্যস্ত আপন রাজ্য বিস্তার করেন। এ বংশের তৃতীয় রাজা শামসুদ্দীন ইব্রাহিম বঙ্গদেশ আক্রমণ করেন এবং বঙ্গভূপতির প্রধান সমস্ত রাজা গণেশের পুত্র জয়মল্লকে মুসলমানধৰ্ম্মে দীক্ষিত করেন, কিন্তু দল্লীশ্বরের সৈন্যদল জৌনপুর আক্রমণ করিতে আসিতেছেন এই সংবাদ পাইয়া স্বরাজ্যে প্রত্যাগমন করেন। ইব্রাহিমের পৌত্র হুসেন উড়িষ্য আক্রমণ করেন ও উড়িষ্যার রাজার নিকট হইতে বহু অর্থ আদায় করিয়া স্বরাজ্যে প্রত্যাগমন করেন। কিন্তু পরে সমাট বুহমূল লোদী কর্তৃক স্বরাজ্য হইতে বিতাড়িত হইয়া বঙ্গদেশে পলায়ন করেন ও শামসুদ্দীন ইউসুফ শাহের আশ্রয়ে ১৫০০ খ্ৰীষ্টাব্দ পর্য্যস্ত বাস করেন। যদিও শাকা-রাজাদের ছোটনাগপুর-অধিকারের কোনও উল্লেখ পাওয়া যায় না, তথাপি মনে হয় বঙ্গদেশে এবং উড়িষ্যা-অভিযান উপলক্ষে ছোটন:পুরে শাকী-রাজাদের প্রভাব বিস্তার হইয়াছিল। তৎপূৰ্ব্বে ১৩৬০ খ্ৰীষ্টাব্দে সমাট ফিরোজ শাহ উড়িয্যা-অভিযান হইতে প্রত্যাগমনকালীন ঝাড়খণ্ড বা ছোটনাগপুরের পথে আসিয়াছিলেন এবং তাহার সৈন্যদল পথ হারাইয়া ছয় মাস কাল ছোটনাগপুরের জঙ্গলে ঘুরিয়া বেড়ায়। শের শাহের সময় হইতে ছোটনাগপুরের জঙ্গলের হাতী ও শঙ্খ নদীর হীরা মুসলমান রাজাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে । ১৫৮৫ খ্ৰীষ্টাব্দে সম্রাট আকবর শাহের প্রেরিত সৈন্তদল ছোটনাগপুরের তৎকালীন নাগবংশী রাজাকে পরাস্ত করে । আর ঐ রাজা মোগল সম্রাটকে বাৎসরিক কর দিতে স্বীকৃত হন। তথন রাজাদের রাজধানী ছিল বর্তমান খুন্থর পরগণাস্থ খুধুর গ্রামে। সেই জষ্ঠ এই প্রদেশ মোগল সম্রাটের সরকারে খোখরা' নামে অভিহিত হয়। আইন-ই-আকবরীতে দেখিতে পাই, থোথুরা’ প্রদেশ :েগল-সমৃ:জ্যে “মোথেরাজি” তালুক রূপে সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। গ্লাডউইন সাহেব তঁহীর "আইন-ই-আকবরী’র ৩৫৫ } পড়াগ্রামে পাথরে নিৰ্ম্মিত দেউল oxton & Grant's Fifth Report y the Heremies of the East India CompanyCŞ "মোখেরাজি’ শব্দের অনুবাদ করা হইয়াছে ‘unattached' অর্থাৎ অসংলগ্ন । খোখরার রাজী স্বেচ্ছায় বোধ হয় এই কর কখনও দেন নাই ; মধ্যে মধ্যে ফৌজ প্রেরণ করিয়া এই কর আদায় করা হইত এবং ১৬১৬ খ্ৰীষ্টাব্দে হে টনাগপুর বা থোথুরার রাজা দুৰ্জ্জন শাল বন্দী হইয়া গোয়ালিয়র-দুর্গে কারারুদ্ধ হন ও বাৎসরিক ছয় সহস্র টাকা কর দ্যিার কড়ারে কারামুক্ত হন । তিনি স্বরাজ্যে ফিরিয়া কিছু দিন পরে খোখরা হইতে ডোএস নগরে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন। কথিত আছে, গোয়ালিয়র-দুর্গে অবস্থানকালে খোধূরীর রাজা ঝুটা হীরা ও আসল হীরার প্রভেদ দেখাইয়া দিয়া বাদশাহকে খুশী করেন এবং তাহার অনুরোধে তাহার কয়েকটি সহ-বন্দী হিন্দুরাজাও কারামুক্ত হন। পরে ঐ হিন্দুরাজগণ রাজা দুৰ্জ্জন শালের সঙ্গে সাক্ষাৎকারমানসে নাগবংশী-রাজার রাজধানীতে রাজার অনুপযোগী সামান্ত