পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাতিক রাজমহলের মালপাহাড়িয়া ধৰ্ম্ম BNご রাজনীতিতে গঠনবাদী ছিলেন এবং দুইবার যুক্ত-প্রদেশের প্রাদেশিক উদারনৈতিক সম্মিলনের সভাপতি হইয়া গঠনের দিকের প্রতিই বিশেষ জোর দিয়াছিলেন । ভারতবর্ষ তাহাকে রাজনৈতিক নেতা বলিয়া চিনে, কিন্তু তিনি যে গান রচনা করিয়া অমর হইয়াছেন এ-খবর বাংলার বাহিরে অবিদিত। লিবারাল-নেতা হইয়াও তাহার একটা বহুদৰ্শিত সাহস ও ত্যাগ ছিল বাহা পুরাতন নেতাশ্রেণীর মধ্যে বিরল । তিনি আপন ভুলিয়া দান করিতে জানিতেন । বাস্তবিক তাহার স্বাভাবিক, অভ্যাসগত দানবন্মের ব্যত্যয় পাছে ঘটে এইজষ্ঠ নীরোগ না-হওয়া সত্ত্বেও অর্থাপজ্জন তাহার মৃত্যুরও প্রধান কারণ বলিয়া মনে হয় । মৃত্যুর পর তিনি দে দানপত্র রাখিয়া গিয়াছেন তাহাতেও তাহার উদারতা, জাতীয়তা, ও নিঃস্বাৰ্থ দান প্রকাশ পাইয়াছে। এমন একটি সুরসিক অথচ বৈরাগী, ভাবুক অথচ কৰ্ম্মপ্রাণ, উদার অথচ সাহসী, ক্ষমতাশীল অথচ মৃদুকুমে লোক পৃথিবীতে বিরল। এই মূছকুসুম লোকটির অন্তর হইতে র্তাহার মৃত্যুর পর যে সুবাস ছড়াইয়া পড়িয়ছে, তাহা আমাদের প্রবাস-জ়ীবনকে ধন্ত করিবে। যিনি গন্ধ বিতরণ করিয়া গেলেন তাহার জীবনের যে সার্থকতাই এই অদাচিত, অকুরস্ত দানে । তিনি নিজেই গাহিয়াছেন ফুলটি ফোটে যবে, ভাবে কি কাল কি হবে: না হয় তাদের মত শুকিয়ে যাণি গন্ধ করি বিতরণ "

  • লক্ষেীবাসী বাঙালীর শোকসভায় সভাপতির অভিভাষণ ।

রাজমহলের মালপাহাড়িয়া ধৰ্ম্ম শ্রীশশাঙ্কশেখর সরকার সাওতাল-পরগণার রাজমহল পাহাড়ের বর্বর জাতিগুলির মধ্য মালপাহাড়িয়ার অপর জাতিগুলি অপেক্ষ কিছু সভ্য । ইহারা এককালে রাজমহল পাহাড়ের শিখরবাসী ‘মালে’ নামক দ্রাবিড়ভাষী জাতির অন্তর্গত ছিল । দৈহিক আকার, ধৰ্ম্ম, কৃষ্টি, প্রভৃতিতে এখন এই দুই জাতির মধ্যে বহু সাম্য আছে ; এমন কি দুই-এক জেলায় ইহাদের মধ্যে অস্তুবিবাহও চলিতে দেখিয়াছি। আদমশুমারীতে ইহাদিগকে বাঙালীর মধ্যে গণনা করা থাকে এবং ওয়েষ্টাৰ্ণ ডায়ালেক্ট অব বেঙ্গলি নামক এক ভাষার ভfী বলিয়া অভিহিত করা হইয়াছে, অথচ এখন ইহাদের মধ্যে অনেকে ইহীদের আদিম মালতো ভাষায় কথা বলে এবং ইহাদের বাংলা ভাষার মধ্যে বহু মালতো’ কথা আছে। মালপাহাড়িয়ারা এখন সমতলভূমিতে বাস করে এবং এই সমতল স্থানে বসবাস করার ফলে ইহারা অপরাপর নিয়শ্রেণীর হিন্দু বাঙালীর কৃষ্টিই গ্রহণ করিয়াছে। সাওতাল কিংবা মালেদের মত ইহাদের নিজস্ব গ্রাম অতি অল্পই আছে। বিভিন্ন গ্রামে জুসিয়া অপরাপর নিম্নশ্রেণীর হিন্দু বাঙালীর সহিত প্রতিবেশীর মত বসবাস করিতেছে । নিজস্ব গ্রাম হইলে গ্রামের মোড়ল স্বজাতির মধ্য হইতে নিৰ্ব্বাচিত হইতে পারে, কিন্তু মালপাহাড়িয়াদের এই স্বত্ব বহু গ্রামেই লুপ্ত হইয়াছে। জীবিকানিৰ্ব্বাহের জন্তই হউক, অথবা এক গ্রামে এইরূপ নবাগত জাতি যাহাতে গ্রামবাসিগণ অপেক্ষা অধিক বিস্তার লাভ না করে গ্রামবাসিগণের এই দ্বেয়ের ফলেই হউক, মালপাহাড়িয়ারা সাঁওতাল-পরগণা ব্যতীত বাংলা দেশের বহুস্থানে ছড়াইয়া পড়িয়াছে। বাংলা দেশে বিগত আদমসুমারীতে ১১,৭৮৯ মালপাহাড়িয়া পাওয়া গিয়াছে। মালপাহাড়িয়া ধৰ্ম্ম এখন ইহীদের আদিম ধৰ্ম্ম এবং হিন্দু ধৰ্ম্ম, উভয় ধৰ্ম্মেরই প্রভাব দেখিতে পাওয়া যায়। ঈষ্ট-ইণ্ডিয়ান রেলওয়ের লুপ লাইনের পাকুড় ষ্টেশন হইতে পশ্চিমে গোডড পৰ্য্যস্ত একটি মোটামুটি সরল রেখা অধুনা ‘মালে’ এবং মালপাহাড়িয়াদের বিভাগস্থল। এই সরল রেখাটির উত্তর হইতে গঙ্গার উপকূল পৰ্য্যস্ত সমস্ত অঞ্চলটি মালেদের বাস এবং এই রেখাটির