পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

रॊग्यं, —তা জানি মা, এক্ষুনি যেতে ব’লল । —এক্ষুনি যেতে পারব না, ব’লগে যা। ওকে ফুধ {াইয়ে গুইরে রেখে আরও দুটো-একটা কাজ আছে সব সরে তবে ধাবোধন। আর তুই ও-ঘরে অত যাস নি, ঋলি ? যা, শুধু এই কথাটা ব’ল এসে গুয়ে পড়গে । মীরা আসিয়া বাবাকে বলিল শুনিয়া ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলিয়া দিবাকর মাধুরীর অপেক্ষায় চুপ করিয়া বসিয়া রছিল । আধঘণ্টা থানেক পরে মাধুরী দরজার গোড়ায় আসিয়া দাড়াইল । ঘরে না-ঢুকিয়া ওথান হইতেই জিজ্ঞাসা করিল—ডাকৃছিলে কেন ? মাধুরীর দিকে তাকাইয়া দিবাকর কহিল—ভিতরে এস | —বল। এখান থেকেই শুনছি । দিবাকরের চোখ দুইটি একটু নত হইয়া আসিল । ধীরে ধীরে বলিল-দ্যখি, ইস্কুল থেকে তিন মাসের ছুটি পেয়েছি। তোমার বাবা ব’ল:ছন এই তিন মাস বাড়িতে গিয়ে কাটাতে। তা জনই ত, আমার আর কেউই নেই। বাড়িতে শুধু একটা ডিটে পড়ে আছে। এত দিন বনজঙ্গলেই ছেয় যেত, তা যায় নি শুধু গ্রামের এক বিধবা ঠাকুরুণ আমাদের ভিটের ওপরে দুধানা ঘর তুলে বাস করছেন সেই জন্তে । আমি ভেবেছিলাম যে তোমাদের নিয়েই ধাই, সেই স্বর্ণ-দিদির ঘরেই এই তিনটে মাস গিয়ে থাকব। তিনি বুড়ে মানুষ, অতি ভাল মানুষও । ছোটবেলা থেকেই আমাকে বড় স্নেহ করতেন ।--তা তোমার বাবার এতে অমত। তুমি কি বল ? --ত বাবার অমত হ’লে আমি কেমন ক’রে কোন কথা বলি ? আমার যাওয়া হয় না । —অধিষ্ঠি তুমি ঘা ভাবছ, তোমাদের তেমন কোন অসুবিধা হবে না। আমরা স্বতন্ত্র ভাবেই থাকুব, স্বর্ণ-দিদির সাহায্যও খানিকট পাওয়া যাবে। তাছাড়া সেদিন মীরা বলছিল, বাড়ি কেমন তার দেখতে ইচ্ছে করে। কোনো দিন দেখে নি গু ! একটু অসহিষ্ণু হইয়া মধু বলিল-আচ্ছ, সে বাড়ি লেখা হৰেখ৭ -“ড ভূমি ভেম্বর সেই স্বর্ণনিদির কাছেই ○空すご too్స এই তিনট মাস থেকে এলগে না ? মিথ্যে আমাদের নিয়ে আর টানাটানি করছ কেন ? হাঙ্গামা নিশ্চয়ই হবে } নিজেদের বাড়ি নেই, ঘর নেই-তার পরে জfবার প্রায় চিরদিনই দেশ ছাড়া ! —ন, না তুমি যা ভাবছ— —ঠকই ভাবছি আমি । বাবার পরামর্শই ভাল । কব রেজের কাজ থেকে ওষুধপত্তর নিয়ে চলে যাও— কাপড়ের আঁচল দিয়া মাধুরী মুখটা একবার মুছিষ্ট। ফেলিল । - দিবাকর ঘরের মেঝের দিকে মুখ নীচু করিয়া তাকাইয়া মাঝে মাঝে দু-একবার কাশিতেছিল। ধীরে ধীরে বলিল— এই জঠেই তোমায় ডেকেছিলুম, আর কোন কিছু নয় । অ'ছা, তাই-ই করব । ও-ঘরে ছেলেট আবার কঁদিয়া উঠিয়াছে, মাধুরী এক-পা দু-পা করিয়া করিয়া চলিয়া গেল । বহুকাল পরে গ্রামের ভিতরে প্রবেশ করিত করিতে একটি নুতন অনুভূতিতে দিবাকরের মন ভরিয়া উঠিল । তাহারও পরিবর্তন হইয়াছে, গ্রামেরও পরিবর্তন হইয়াছে, কিন্তু এত দিন পরেও বেন পরস্পর পরম্পরকে চিনিতে পারিতেছে । এই গ্রামে সে অনধিকার প্রবেশ করিতেছে, এমন কথা তাহার মনে হইল না, বরং কত যুগ আগেকার শৈশব-স্মৃতিগুলিই অন্তরে এক-এক করিয়া জাগিয়া উঠিত থাকিল । দিবাকর হালদার-বাড়ি ছাড়াইয় গেল ; নবীন দাসের পানাপুকুর পার হইয়া মা ভবতারিণীর মন্দির । বহুদিন পূৰ্ব্বই মণির হঠতে ইট খুলিয়া খুলিয়া পড়িতেছিল, এখন তাহার আরও জরাঙ্গীর্ণ অবস্থা । মন্দিরের মাথার উপর দিয়া একটি বিশাল বটগাছ ফুড়িয়া বাহির হইয়াছে } দিবাকর মা-ভবতারিণীর উদ্দেশে দুই হাত জোড় করিয়া প্ৰণাম করিল। এখনই কাহারও সঙ্গে দেখা হয়, ইহা দিবাকর চাহিতেছিল না । চুপে চুপে যখাসম্ভব এক-একটি বাড়ির পিছন দিয়, যেসব পথে বেশী লোকজন সৰ্ব্বদা চলাচল করে না এমন পথ ধরিয়া নিজের বাড়ির দিকে চলিতেছিল ।