পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ বিপরীত tلاسی আজও তাই কাস্তিকে কাদিতে দেখিয় লতা অস্থির হইয়া উঠিল, কোনোমতে তাহাকে শান্ত করিবার জন্য তাহার প্রাণ ছট্‌ফট্‌ করিতে লাগিল । সত্যই যদি আত্মহত্যা করিয়া বসে ? অতবড় মূর্থের পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়। উমার উপরেও তাহার রাগ হইতে লাগিল । জানিয়া শুনিয়া সে দাদাকে অত আস্কার দিল কেন ? স্থির থাকিতে না পারিয়া লত উঠিয়া বাবার কাছে গিয় উপস্থিত হইল। বলিল, “বাবা, দাদার কাণ্ড শোন । তুমি ত কিছু দেখবে না এ-দিকে সে যে কি-না করছে ! রামহরি ভীত ত্রস্তভাবে বলিলেন, “কি করেছে সে মা ?” লতা সব কথা খুলিয়। বলিল । রামহরি চিন্তিতভাবে মাথায় হাত বুলাইতে বুলাইতে বলিলেন, “তাই ত কাল বিয়ে ? এর মধ্যে কিই বা করা যায় ?” লতা বলিল, “সময় থাকলেই বা কি করতে ? ওরা অমন ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেবে কেন ?” রামহরি বলিলেন, “তা বুঝিয়ে বললে কি হয় বলা যায় না। আমার লাইফইনস্কারেন্সের হাজার কয়েক টাকা পাওনা আছে, আর তোমার মা থাকতে দেশের সেই জমিট কিনেছিলেন। এর ভিতর কিছু টাকা তোমার জন্যে—” লতা বাধা দিয়া বলিল, “আমার জন্যে তোমার কিছু রাখতে হবে ন৷ বাবা, আমি ক’রে খেতে পারব । যা আছে সব দিয়েও তোমার হাবা ছেলেকে বাচাতে পার ত দেখ ।” রাঞ্জরি বলিলেন, “তা হলে আমি যাব না-কি একবার বিনয়ের কাছে ?” লতা একটু থামিয়া বলিল, “তিনি ত বড় অস্থস্থ, উমার মায়ের কাছে বলতে পারলে হয়। সঙ্গে স্থাচ্ছি । লতা প্রস্তুত হইবার জন্য উপরে ছুটিল । দাদার ঘরের দরজায় একটা ধাক্কা দিয়া বলিয়া গেল, “আমরা উমাদের এখানে যাচ্ছি, একটু ঠাণ্ডা হও।” : উমার মা তাহদের দেখিয়াই মুখ গষ্ঠীর করিলেন। " রামহরি বিনয়ের কাছে গিয়া বসিলেন। লতা বলিল, "আপনি দোজবরে পাত্রে দিচ্ছেন ত, সেও খুব ভাল নয় ; না হয় দাদার সঙ্গেই দিন । তার অন্ততঃ বয়স কম, আর কোনো বধাট নেই। খাবার পরবার মত ব্যবস্থা হয়েই যাবে।

3

চল, আমিও তোমার . উমার মা বলিলেন, " কি ব্যবস্থা ? ছেলে কি কোনো দিনও কিছু রোজগার করবে ?” লত বলিল, “ত হয়ত করবে না, কিন্তু বাবার জমিজম টাকাকড়ি কিছু আছে, তাতে সাধারণভাবে একটা সংসার চলতে পারবে ।” উমার মা খানিক চুপ করিয়া রহিলেন, তাহার পর বলিলেন,—“তবে বাছ আসল কথা বলি, মেম্বেকে শুধু খাওয়ালে ত হবে না, আমাদের সকলেরই একরকম ভার নিতে হবে । আমার বিনয়ের যদি ভগবান স্বাস্থ্য ভাল রাখতেন তা হ’লে কি আর উমাকে আমি বুড়ে বরে দিই ? আমন সুন্দর মেয়ে আমার । কাস্তির সঙ্গে বেশ মানাত, কিন্তু যেমন অদৃষ্ট । এ পাত্রর কিছু টাকাকড়ি আছে, তাই ভরসা আমাদের ফেলবে না ।” লতা গম্ভীর হইয়া গেল । “উমা কই ?” উমার মা বলিলেন, “ছাদে আছে বুঝি।” লতা ধীরে ধীরে ছাদে গিম্ন উপস্থিত হইল । তাহাকে দেখিবা মাত্রই উমা মুখে আঁচল গু জিয়া কাদিয়া ফেলিল । লতা একটুক্ষণ তাহার দিকে তাকাইয়া থাকিয়া বলিল, “তোমরা আছ ভাল। কাদলেই সব সমস্তার সমাধান হয়ে যায় । আমার কোনো দিন কাদবারও স্ববিধে হ’ল না ।” বলিয়া আবার নীচে নামিয়া গেল । উমার মা তাহাকে নামিতে দেখিয়া বলিলেন, “উমি নেই ছাদে ? তবে গেল কোথা, এই সন্ধো বেলা ?” লতা বলিল, “উপরেই আছে, বসে বসে র্কাদছে।” উমার মা মানমুখে বলিলেন, “কি আর করব মা, পোড়া অদেষ্ট ।” লতা বলিল, “দেখুন, এক কাজ করলে হয়, আপনি যদি রাজী হন। তা হ’লে সকলেরই স্ববিধে হয়।” উমার মা ব্যগ্রভাবে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি ?” “আপনি যদি উমাকে আমাদের বাড়িতে দেন, আর আমাকে ঘরে নেন। ৰি-এতেও আমি ফাষ্ট্ৰই হব। টাকাকড়ির দুর্ভাবনা আপনাকে আর কিছু ভাবতে হবে না ।” উমার মা তাহার দিকে ই করিয়া চাহিয়া রহিলেন, তাহার পর চোখ মুছিতে মুছিতে বলিলেন, “সে ভাগ্যি কি আর খানিক বাদে জিজ্ঞাস করিল,