পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ তিনি এই প্রতিষ্ঠানের একটি কৰ্ম্মচারীকে স্থদুর গুজরাটে প্রেরণ করেন ও প্রত্যেকটি মেয়ের প্রতি ভাল ব্যবহার হইতেছে কি-না এবং তাহার স্বখে আছে কি-না ইহা জানিয়া আসিবার আদেশ দেন। তাহারা সাদরে পরিবারে গৃহীত হইয়াছে এবং আনন্দে ঘরসংসার করিতেছে এই সংবাদ পাইয়। তবে তিনি নিশ্চিন্ত হন । রাজেন্দ্রনাথ বাঙালীর কৰ্ম্মপ্রচেষ্টাকে একটি নূতন ধারা দিয়াছেন । নিজের জীবন দ্বারা দেখাইয়াছেন যে, অতি মুক্তি Ե*6: সামান্ত অবস্থা হইতেও চরিত্রবলে অদ্ভুত কৰ্ম্মশক্তি দ্বারা উন্নতির উচ্চ শিখরে আরোহণ করা যায়। তিনি জীবনে অনেক অর্থ উপার্জন করিয়াছেন সভ্য, কিন্তু তাহা হইতেও একটি বড় জিনিষ অর্জন করিয়াছেন, দেশবাসীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। পরামুখাপেক্ষী হুইয়া গবৰ্ণমেণ্টের চাকুরির জন্য বসিয়া থাকিলে আর চলিবে না। স্বাধীন ব্যবসা ও কৰ্ম্মশক্তি দ্বারা বাঙালীকে আবার বড় হইতে হইবে । মুক্তি শ্ৰীআশালত দেবী বোনুবৃত্ত :--নিৰ্ম্মলার বাবা চন্দ্রনাথ বাবু আজকালকার অনেক উচ্চশিক্ষিত স্বাধীনচিস্তাশীলের মত আচারব্যবহার এবং চালচলনে ব্রাহ্মধৰ্ম্মের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন যদিচ প্রকাশ্বে কোনদিন দীক্ষা লন নাই । শাহার স্ত্রী পল্লীগ্রামের মেয়ে, অল্পবয়সে বিবাহ হইয়াছিল। স্বামী এবং *ার ভাবনা, বেদন, আশা-আকাঙ্ক্ষার মাঝে ছিল আকাশপাতাল ব্যবধান । সেটা যে কেবল চন্দ্রনাথের ব্রাহ্মধৰ্ম্মের প্রতি অনুরক্তির কারণ তাহাই নয় । তিনি ছিলেন স্বভাবতঃই জ্ঞানলোকের মানুষ । সংসারের প্রয়োজন এবং তাগিদের চাপে তাহার প্রকৃতিকে খৰ্ব্ব করিয়া চলা—এ তাহার ধীষ্ঠে আদেী সহিত না । বস্তুতঃ আইডিয়া এবং আইডিয়ালের জগতে পুরুষ যেমন চিরনিঃসঙ্গ, তিনিও ছিলেন তাহাই । তা এজস্য তাহার স্ত্রীর কোন রোষ ক্ষোভ ছিল না ; যদিবা ছিল বহিরে প্রকাশ পাইত না । তিনি পল্লীগ্রামের মেয়ে, জীবনের সমস্ত অভাব অপুর্ণতাকেই নিয়তির মত মানিয়া লইতে শিখিয়াছিলেন । এমনি করিয়া একধারে তাহার স্ত্রী স্বশীল ছেলেপুলে ঘরসংসার লইয়। নিমগ্ন হইয়া থাকিতেন, অন্যধারে চন্দ্রকান্ত ভাবরাজ্যের নেশায় ভরপুর হইয়া থাকিতেন। এমন করিয়া অনেক দিন কাটিয়াছিল। কিন্তু চন্দ্রকাস্তের সবচেয়ে ছোট মেয়ে নিৰ্ম্মল যখন হইতে হইয়াছে, তখন হইতে প্রকৃতিতে তাহার পরিবর্তন দেখা দিয়াছে। উদাসীন পুরুষের যে দিকটা ছিল শুষ্ক, স্নেহাতুর, অনেকদিন পরে আজ তাঁহাই এই শুভ্র স্বন্দর স্বকুমার শিশুকস্তাটিকে কেন্দ্র করিয়া বিমথিত হইয়া উঠিল। চন্দ্রকান্ত নিৰ্ম্মলাকে শিশুকাল হইতে শিক্ষায় দীক্ষায় সৰ্ব্বতোভাবে নিজেকে দিয়া বেষ্টন ফরিয়া পরিলেন । এমন করিয়া নিৰ্ম্মলা ক্রমে সতের বৎসরের হইয়াছে, এখন সে বেথুন কলেজের প্রথম বাধিক শ্রেণীতে পড়ে, কিন্তু কেবলমাত্র পিতার সঙ্গ এবং সাহচর্য্যে আশৈশব অভ্যস্ত হওয়ার কলে তাহার প্রকৃতিতে রহিয়া গেছে একটা অপূর্ণত । নবযৌবনের প্রত্যন্তপ্রদেশে পা দিলে স্তরণীর মনে যে-সকল কথা যেমন করিয়া টিম্বয় হয়, মনে যেটুকু ভাবের নায়, যেটুকু আবেশ বাস্পসঞ্চিত হইতে থাকে নিৰ্ম্মলার তাহ হয় নাই । BBD DBD BBEHHBB DB BBBD BiB BBB BBBB BB মননশীলতার একটা আভাস তাহার চরিত্রে লাগিয়াছিল এবং তাই তাহার প্রকৃতিতে একটা অনাসক্তির ভাব ছিল, যাহা ঠিক স্ত্রী-সুলভ নয়। এমনি করিয়া বাকী সংসারের প্রতি উদাসীন থাকিয়াও পিতা এবং কন্যার মাঝে একটি স্বমধুর স্নেহসম্পর্ক গড়িয়া উঠিয়াছিল। একদিন কলেজ যাইবার আগে চন্দ্রকাস্তের ঘরে যামিনীর সঙ্গে নিৰ্ম্মলার একটুখানি আলাপের মত এবং সামান্ত দুই চারিটা কথা হইল । হয়ত তাহার মধ্যে বৈশিষ্ঠ্য কিছুই ছিল না । যামিনীর মত এমন কত ছাত্র কত লোকই তাহার বাহিরের ঘরে তাহার সহিত বিশ্বব্যাপারের যাবতীয় বস্তু লইয়া তর্ক করিতে আসিত এবং সকলের সহিতেই নিৰ্ম্মলাকে তিনি পরিচত করিয়া দিতেন । 8 নিৰ্ম্মলা বাবার কাছে রাজ্যের বই পড়িয়াছে । নব্য রাশিয়ার অসমসাহসিক উদ্যম হইতে সুরু করিয়া বার্গসে এবং সোপেনহাওয়ারের দার্শনিক মতামত পৰ্য্যস্ত সমস্ত বিষয়েই সে কিছু কিছু জানে। কিন্তু আশৈশব বাবার কাছে মানুষ হইয়া তাহার এমন স্বভাব হইয়া গিয়াছিল, ষে, বইয়ের আলমারীতে ঠাস তাহদের এই বাইরের ঘরের বাহিরে যে আর একটা জগৎ আছে, যে-জগতে সমস্তই স্থায়শাস্ত্রের নিয়ম অনুসারে চলে ন৷ এবং যেখানে স্থখদুঃখ কামনা-আকর্ষণের ঘাত-প্রতিঘাত অহরহ চলিতেছে, তাহ সে অনুভবই করিত না। সে জগৎ হইতে সে অনেকটাই বাহিরে রহিয়া গিয়াছিল। নিৰ্ম্মলদের সংসারের এই বাহিরের ঘরটিতে সংসারের ভাবনা-চিস্ত দুঃখ