পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bzacial আর একদিকে সন্ন্যাসীর ত্যাগের আদর্শ, অনাসক্তির আদর্শ –এই উভয়ের মধ্যে সংগ্রাম চলিতেছে। নরনারীর অস্তরে এই আদিম যৌনপ্রবৃত্তি সাগরের মত তরঙ্গিত হইতেছে। এই সাগরের আক্রমণকে প্রতিহত করিবার জন্য মানুষ নীতির কত বাধই না বাধিয়াছে ! কিন্তু সহসা সাগরে দোল লাগে ; বঁধ ভাঙিয়া উচ্ছ্বসিত তরঙ্গরাশি সমস্ত একাকার করিয়া দেয়। কোন নিষ্ঠুর দেবতা আমাদিগকে পাগল করিয়া বিনাশের পথে ঠেলিয়া দেয় তাহা আমরা জানি না । শুধু জানি, অতি কঠোর সন্ন্যাসীরও আজন্মের সাধন কখনও কখনও এক্ট তরঙ্গবেগ সহ করিতে পারে না ; উৰ্ব্বশীর চটুল নয়ন উদ্ধরেতা সন্ন্যাসীর মনকে প্রলুব্ধ করে ; উমরে সৌন্দয্যরাশি সৰ্ব্বত্যাগী শঙ্করের তপস্তা ভাঙিয়৷ দেয় } ধে-ইচ্ছাকে আমরা মনের মধ্যে স্থান দিতে চাহি না সেই ইচ্ছাকে আমরা দূরে ঠেকাইয়া রাখিতে চাই । অনভিপ্রেত চিন্তাকে চেতনার ক্ষেত্র হইতে দূরে রাখিবার এই প্রযত্বই ‘Repression’ অথবা ‘অবদমন’ বলিয়া অভিহিত 5邪 ! যে-পেয়াদ অনভিপ্রেত ইচ্ছাগুলিকে দূরে ঠেলিয় দেয়, চেতনার ক্ষেত্রে অথবা চিত্তের থাসকামরায় তাহাদিগকে প্রবেশ করিতে দেয় না, তাহার নাম Censor অথবা প্রহরী। আমরা ইহাকে বিবেক ও বলিতে পারি । জমিদারের কাছারিবাটি ও থাসকামরার মত যে-দুইটি প্রকোষ্ঠ আমাদের মনের মধ্যে বিদ্যমান, যে প্রকোষ্ঠ দুইটির একটির নাম সংজ্ঞান (the conscious ) go off; aro agsta ( the sub-conscious) সেই প্রকোষ্ঠ ছুটির মধ্যবৰ্ত্তী দ্বারদেশে প্রহরীর মত দাড়াইয়া আছে সেন্সর । প্রহরীর অনুমোদন ব্যতীত কোন ইচ্ছা চেতনার ক্ষেত্রে প্রবেশ করিতে পারে না । মহাদেলের তপস্তাক্ষেত্রের প্রাস্তে সে নন্দীর মত বেত্র উচাইয় দাড়াইয়া আছে । তাহাকে ফাকি দেওয়া কঠিন । কোন চিন্তা চেতনার ক্ষেত্রে আলিবার উপক্রম করিতেছে দেখিলেই দ্বারী জিজ্ঞাসা করে, হু কাম্স crossa (Who comes there ) f যদি ইচ্ছাটি আমাদের নীতিধৰ্ম্মের অনুমোদিত হয় প্রহরী তাহাকে চেতনার ক্ষেত্রে আসিবার অনুমতি দান করে । যদি ইচ্ছাটি আমাদের নীতিধৰ্ম্মের অনুমোদিত না হয় তবে প্রহরীর কাছে উহা বন্ধু ( friend ) নহে, শত্র ( foe ) । প্রহরী ধাক্কা দিয় তাহাকে দূরে সরাইয়া দেয় । প্রহরী যে-সকল ইচ্ছাকে চেতনার রাজ্য হইতে নিৰ্ব্বাসিত করে তাহাদের সবগুলিই যে সেই আজ্ঞ নতশিরে মানিম্ন! ইয়া প্রস্থান করে এমন নহে । অনেক ইচ্ছা আমাদিগকে জড়াইয় থাকে যাহাদিগকে আমরা নীতিপথে বাধা বলিয়া জানি। তাহাদিগকে আমরা যে ছাড়াইয়া যাইতে চাহি না এমন নহে, কিন্তু ছাড়াইতে গেলেই কোথায় যেন ব্যথা মলোরাজ্যের কাহিনী ১২৭ পাই। তাহাদিগকে আমরা শত্রু বলিয়া জানি ; তবুও তাহাদিগকে প্রাণপণে আদর করিতে ইচ্ছা করে। প্রহরী তাহাদিগকে চেতনার ক্ষেত্রে কখনই আসিতে দিবে না— কিন্তু তাহারা যে আমার মৰ্ম্মের মূলে বালা লইয়াছে ! তাহাদিগকে নিৰ্ব্বাসন দিতে আমার মন যে কিছুতেই চাঙ্গে না ! উপায় কি ? উপায় ছদ্মবেশ ৷ যে-সকল প্রবৃত্তিকে নীতিধৰ্ম্মবিগহিত বলিয়া প্রহরী চেতনার ক্ষেত্রে আসিতে দেয় না অথচ যাহারা আমার একান্তই প্রিয় তাহাদিগকে ছদ্মবেশ পরাইয়া তবে চেতনার ক্ষেত্রে আনিতে হয় । নিজের সঙ্গে এমনি করিয়া আমরা কতই না লুকোচুরি থেলিয়া খাকি। আমরা ডুবিয়া ডুবিয়া জল খাই, ভাবের ঘরে চুরি করি । রোম রলার একখানি উপন্যাসের নাম মায়ামন্ত্রমুগ্ধ <sĩ-5ĩì ( Soul Enchaute.ỉ ) I s# Vẽ°iÐtč## R##i এনেট তরুণ চিত্রকর ফ্রাঞ্জকে ভালবাসিয়াছে । নায়িক চিত্রকরটির মাতার বয়সী ; নায়িকার নিজেরও একটি পুত্র আছে । এইস্থলে সোজাসুজি প্রেমিকার মত ভালবাসিতে নায়িকার সংস্কারে বাধে । যে ছেলের বয়সী, যাহার সঙ্গে বয়সের এত ব্যবধান তাহাকে সোজাঙ্কজি প্রেমিকের আসন দান করিতে সংস্কারে যখন বাধে তখন উপায় কি ? প্রহরী মনের দ্বারপ্রাস্তে দাড়াইয় বলিতেছে, হুসিয়ার | চিত্রকরের চিন্তা মনে স্থান দিতে পরিবে না। তাহাকে ভালবাসা অন্যায়। নারীর মন কাদিয়া বলিতেছে—সে না থাকিলে জীবন শূন্ত হইয়া যায়। সে যে প্রাণের প্রাণ ! নিরুপায় হইয় নামিক নিষ্করুণ প্রহরীকে ফাকি দিল । সে প্রহরীকে বলিল, আমি উহাকে ছেলের মত ভালবাসি । এই ভালবাসার মধ্যে কামগন্ধ নাই। প্রহরী চিত্রকরের চিস্তাকে নারীর চেতন ক্ষেত্রে তখন আসিতে দিল । রমণী আপনাকে ফাকি দিল, প্রহরীকে ফাকি দিল--কিন্তু সত্যকে ফাকি দিতে পারিল না । সে অলক্ষ্যে হাসিল এবং সময় আসিলে নারীকে বুঝাইয়া দিল, মায়ের ভালবাসার মুখোসপরা প্রবৃত্তির মধ্যে লুকাইয়াছিল কামনা-পুরুবের জন্য নারীর চিরন্তন দুৰ্ব্বার কামনা । এমনি করিয়া তুষার শুভ্র নিষ্কলঙ্ক ভালবাসার মুখোস পরিয়া কামনা আসিম আমাদের চিত্তকে অধিকার করে । আমরা অস্তরে অস্তরে জানি, যাহাকে ভগ্নী বলিক্ষ্মী কাছে রাখিবার চেষ্টা করিতেছি তাহাকে ঠিক ভগ্নীর মত দেখি না, যাহাকে ভাই বলিয়া আদর করিতেছি তাহার প্রতি ভালবাসা আপনার সহোদরের প্রতি ভালবাসার ঠিক অনুরূপ নহে। তবুও এ-কথা বন্ধুর কাছে দূরে থাকুক, নিজের কাছেও সহজে স্বীকার করি না। স্বীকার করিতে আমরা লজ্জিত হই, আমাদের সংস্কারে বাধে। পাছে বিবেকের দংশনে উৎপীড়িত হইয়া তাহাদিগকে ছাড়িতে হয় তাই নিজেকে