পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ বিবিধ প্রসঙ্গ—স্বরাজ্য-দলের পুনরুজ্জীবন >83, স্বরাজ্য লাভে সম্মতি না দিলে চলিবে না, তখন ব্রিটিশ জাভি মস্তিত্ব বা তদ্রুপ কোন চাকরী গ্রহণ করেন, তাহা হইলে সম্মতি দিবে, তাহার আগে নম্ন । তাহা গহির্ত হইবে । এই জন্য, কি ব্যবস্থাপক সভায়, কি ব্যবস্থাপক সভার বাহিরে এরূপ কাজ করিতে হইবে যাহাতে ব্রিটিশ গবয়েণ্ট ও ব্রিটিশ জাতির উপর অপ্রতিরোধনীয় চাপ পড়ে। দেশকালপাত্ৰ বুঝিয়া প্রত্যেক জাতিকে এই প্রকার স্বরাজ্যসংগ্রাম চালাইতে হয় । ভারতবর্ষ ও ব্রিটেনের মধ্যে রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক থাকিতে হইলে তাহা কিরূপ হওয়া উচিত, তাহ প্রদর্শন ও নির্দেশ করিবার জন্য ভারতীয়দিগকে এখনও অনেক বক্তৃতা, আলোচনা ও তর্কবিতর্ক করিতে হইবে, অনেক প্রবন্ধ, পুস্তিকা ও পুস্তক লিখিতে হইবে। যাহা কিছু বলা বা লেখা হইবে, তাহ যুক্তিসঙ্গত, ন্যায়সঙ্গত, সত্যসঙ্গত, মানবিকতাসঙ্গত হওয়৷ আবশ্যক । এই প্রকার উক্তির ও লেখার একটা প্রভাব অন্যান্য জাতির আদর্শানুসারী মানুষদের মত আদর্শানুসারী ইংরেজরাও অনুভব করিবে। কিন্তু তাহদের সংখ্যা কম । সমগ্র ইংরেজ জাতি-ব৷ অন্য কোন জাতি—যদি কথন আদর্শাহুসারী হয়, তাহ দূর ভবিষ্যতের কথা। আমরা তত দিন অপেক্ষা করিতে পারি না, অপেক্ষা করা উচিত নয়। এই জন্য অন্যবিধ চাপ প্রয়োগ আবশ্যক। এই চাপ ভারতীয় ঘটনা, ভারতের বাহিরের ঘটনা, বা উভয়বিধ ঘটনার দ্বারা প্রযুক্ত হইতে পারে। সম্ভবপর যত রকম চাপ আছে, তাহার মধ্যে যাহা দৈহিক ও আস্ত্রিক বলপ্রয়োগসাপেক্ষ, তাহা ভারতীয়দিগকে কায্যের ও অভিপ্রামের বাহিরে রাখিতে হইবে । মহাত্মা গান্ধীর মত যাহারা অহিংসাকে পরম ধৰ্ম্ম মনে করেন, তাহার যে-যে কারণে দৈহিক ও আস্ত্রিক বল পরিহারের পক্ষে, অন্য অনেকে সেই সেই কারণে বিশ্বাসবান না হইতে পারেন। কিন্তু তাহাদের মধ্যেও প্রধান নেতৃস্থানীয়েরা মনে করেন ও বলিয়াছেন, যে, ভারতবর্ষের স্বরাজ্য-সংগ্রাম দৈহিক ও আন্ত্রিক বলপ্রয়োগ ব্যতিরেকে অথচ সমষ্টিগত ভাষে চালাইতে হইবে। আমরা এই মত ঠিক মনে করি। যে-সব কংগ্রেসওয়ালা কৌন্সিলে ঢুকিবেন, তাহারা কি করিবেন না-করিবেন, সে বিষয়ে আমরা বিস্তারিত কিছু বলিতে চাই না। কিন্তু একথা নিশ্চম, যে, তাহারা যদি কেন্সিল প্রবেশের বিরুদ্ধেও ভাবিবার কথা আছে। ব্যবস্থাপক সভায় বক্তৃতা, প্রশ্ন, প্রস্তাব-পেশ ইত্যাদি করিলেই দেশের প্রতি সব কৰ্ত্তব্য করা হইল, অনেকের পক্ষে এরূপ মনে করিয়া মনকে প্রবোধ দিবার খুব সম্ভাবনা আছে। সমস্ত ব। অধিকাংশ কংগ্রেসওয়ালা যদি এই ভ্রমের বশবৰ্ত্তী হন, তাহা দেশের পক্ষে ক্ষতিকর হইবে। এখন ভারতবর্ষের কন্সটিটিউশুন যেরূপ আছে, তাহাতে ভারতীয় বা প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক সভায় কংগ্রেস দল প্রবল হইলে দেশের পক্ষে অনিষ্টকর আইন প্রণয়নে বাধা দিতে পারেন এবং সেরূপ বাধা জন্মিলে লাটসাহেবদের ছয়মাসস্থায়ী অডিন্যান্স জারী করা ভিন্ন উপায় নাই । কিন্তু শ্বেত পথে ভারতের মূল শাসনবিধির যে বর্ণনা পাওয়া যায়, ভবিষ্যং কন্সটিটিউশুন সেইরূপ হইলে ব্যবস্থাপক সভায় কোন আইন প্রণয়নে বাধা জন্মিলেও গবন্মের্ণীকে অল্পকালস্থায়ী অর্ডিন্যান্সের আশ্রয় লইতে হইবে না, বড়লাট ও প্রাদেশিক লাটরা ইচ্ছা করিলেই গবর্ণর-জেনার্যালের আইন ও গবর্ণরের আইন নামক আইনসকল করিতে পরিবেন, সেগুলা ব্যবস্থাপক সভার সাহায্যে প্রণীত আইনের সমান বলবৎ ও স্থায়ী হইবে। কিন্তু ভবিষ্যৎ কন্সটিটিউশ্যন এরূপ হইলেও একটা কাজ কংগ্রেসপক্ষীয় সদস্যেরা করিতে পারিবেন।--তাহারা লাটদিগকে নিজের নিজের আইন বানাইতে বাধ্য করিম ইহাই কার্যতঃ ঘোষণা করিতে বাধা করিতে পারিবেন, যে, র্তাহার লোকমতের বিরুদ্ধে দেশশাসন করিতেছেন। কিন্তু কংগ্রেসপক্ষীয় সদস্যের ভবিষ্যৎ কন্সটিটিউগুন অনুসারে ইহাও করিতে পারিবেন কি না, সে-বিষয়ে বিশেষ সন্দেহ আছে। সমগ্রভারতীয় ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপক সভায় দেশীয় রাজাদের মনোনীত সদস্যদিগকে এবং অতুগৃহীত মুসলমান, “অবনত” হিন্দু ও ইউরোপীয় ও ইউরেশীয় প্রভৃতিকে যত আসন দিবার প্রস্তাব হইয়াছে, তাহাতে স্বাধীনচেত নিৰ্ব্বাচিত সদস্যদের পক্ষে নিজেদের দলে ভোট দিবার জন্য অধিক সদস্য পাওয়া অসম্ভব, অস্ততঃ দুঃসাধ্য, হইবে। সুতরাং গবশ্নেণ্ট ইচ্ছা করিলে নিজের আবগুক