পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

:ere করিয়াছিলেন এবং রাত্রি প্রভাত হইবার সঙ্গে সঙ্গেই অতিপ্রত্যুষে তিনি সৰ্ব্বজ্ঞতালাভে কৃতকৃতাৰ্থ হইয়া সিদ্ধার্থ হইয়াছিলেন। তিনি যে কাৰ্য-কারণ-শৃঙ্খলা বা দ্বাদশ নিদান উপলব্ধি করিয়াছিলেন তাহ এইরূপ-জগতের লোকের জরা মরণ-দুঃখ ( শোক পরিদেবনাদি সহকারে ) জাতি ( জন্ম ) হইতে সমুদ্ভূত হয়, জাতি ভব ( হওয়ার ভাব ) হইতে, ভব উপাদান ( হওয়ার আসক্তি ) হইতে, উপাদান তৃষ্ণ ( আকাজক্ষ ) হইতে, তৃষ্ণ বেদন ( অনুভূতি ) হইতে, বেদনা স্পর্শ (বিষয়ের সহিত সংসর্গ বা সম্পর্ক ) হইতে, স্পর্শ ষড়ায়তন ( ইন্দ্রিম্বগ্রাম) হইতে, যড়ায়তন নামরূপ ( মানসিক ও বাহিক ব্যাপার বা বৃত্তি ইহার অপর নাম **E=&top of Niul wassis, “human body as an aggregate of physical and mental phenomona,' রূপ, বেদনা, সংজ্ঞ, সংস্কার ও বিজ্ঞান - এই পঞ্চস্বন্ধের সমষ্টিও ‘নামরূপ সংজ্ঞাম আখ্যাত ) হইতে, নামরূপ বিজ্ঞান ( অহংভাব, বিজ্ঞান ংস্কার (বাসনা, impressions ) হইতে, এবং সংস্কার অবিদ্যা হইতে সমুৎপন্ন হয়। বৌদ্ধশাস্ত্রে এই নিদানপরম্পরার নাম প্রতীত্য-সমুৎপাদ (পটিচ্চসমুল্লাদ ) । সুতরাং দুঃখবাদী ভারতীয় অন্যান্য দর্শনে যেমন অবিদ্যাকেই সৰ্ব্বদু:খের কারণ বলিয়া অভিহিত করা হয়, বৌদ্ধশাস্ত্রের মতে তদ্রুপ মামুষের অবিদ্যামূলক দুঃখস্কন্ধ সমুদিত হয়। মানুষ এই দুঃখ হইতে “নিঃসরণং ন জানাতি”– কেমন করিমু মুক্ত হইবে তাহ জানে না । এই শৃঙ্খলাতে উক্ত অবিদ্যা প্রভৃতি দ্বাদশ নিদানগুলির মধ্যে পূৰ্ব্ব-পূৰ্ব্বটির নিরোধে পর-পরটির নিরোধ হইলেই সৰ্ব্বদু:খহানি নিশ্চিত, বুদ্ধদেব ইহাও সকলকে জানাইয়াছিলেন। সম্বোধির ফলে তিনি আরও একটি মহাসত্য উপলব্ধি করিম্বাছিলেন, যথা— “ইদং দুঃখময়ং দুঃখ-সমুদ্রয়ো জগৎস্বাপ । অরং দুঃথ-নিরোধোহপি চেয়ং নিরোধগামিল ৷ প্রতিপদিতি বিজ্ঞার যথাভূতমৰুধ্যত ॥" প্রথম সত্য-সংসারে দুঃথ আছে, দ্বিতীয়–ছুঃখের কারণও আছে, তৃতীয়–ছঃখের অতিক্রম বা নিরোথও আছে এবং চতুর্থ—দুঃখের উপশমের আষ্টাঙ্গিক মাগন্ধপ উপায়ও আছে । পূৰ্ব্বোল্লিখিত মধ্যম পথ বা ‘মজ্জিম পটপদাই দুঃখবিনাশের প্রকৃষ্ট সাধন। মোট কথা, বৌদ্ধ প্রতীক্ত-সমুচ্‌পা হইত্তেও consciousness) & 5, ఏ ఇతిసె ইহাই অসুমিত হয় যে, অবিদ্যাই জরা, মরণ, পুনর্জন্মাদিরূপ রোগের বীজাণুসদৃশ । এই রোগের চিকিৎসার জন্ত প্রধান বৈদ্য বুদ্ধদেবও প্রতীকার বা ঔষধ আবিষ্কার করিয়াছিলেন। আমাদের শেষ প্রশ্ন এই—বৌঞ্চাতে কৰ্ম্মজনিত পুনর্জন্মট কাহার ও কেমন করিয়া ঘটিয়া থাকে ? হিন্দুশাস্ত্রে আত্মার অস্তিত্ব ও সেই আত্মারই পুনর্জন্ম ও জন্মান্তর পরিগ্রহ বা সংস্থতি স্বীকার করিয়া কৰ্ম্মবাদের অভু্যপগম লক্ষিত হয়। সেই জন্ত কৰ্ম্মকারীর সম্বন্ধেও বল হইয়াছে বে, ঈশ্বরে ফল সমৰ্পণ করিয়া কৰ্ম্ম করা বিধেয় । কিন্তু বৌদ্ধশাস্ত্রে আত্মা বা ঈশ্বর বিশেষ কোন স্থান লাভ করেন নাই। এই শাস্ত্র এক প্রকার অনাত্মবাদী শাস্ত্র। বৌদ্ধ নরপতি কণিক্ষের সমসাময়িক মহাকবি ও দার্শনিক অশ্বঘোষের রচিত ‘ৰুদ্ধচরিত’ নামক মহাকাব্যে প্রতীত্য-সমুৎপাদ ও তৎক্রমনিরোধের উপদেশ প্রসঙ্গে বুদ্ধদেব যে-ভাবে সংসারের কারণ ও মুক্তি বিষয়ে সমসাময়িক দার্শনিকগণের প্রচলিত মতভেদের থগুন করিয়াছিলেন, সে-সম্বন্ধে একটি বর্ণনা লিপিবদ্ধ দেখিতে পাওয়া যায় । কবি বর্ণনা করিতেছেন যে, বুদ্ধদেব বলিয়াছিলেন— চতুরার্যসত্য ও আষ্টাঙ্গিক মার্গই যে মুক্তিবিধায়ক তাহ না জানিম৷ “দৃষ্টি-বিপন্ন"বাদিগণ অভিমানবশতঃ স্ব-স্ব মত পোষণ ও প্রচার করিয়া সংস্থতি হইতে মুক্তিলাভ দূরে থাকুক, বরং সংসারবন্ধনের পথ অধিকতর পরিষ্কার করিতেছেন। এই বিপ্রবাদ সম্বন্ধে তিনি আরও বলিয়াছেন,-কোন কোন বাদীরা কেবল আত্মাকে একমাত্র অস্তি-বস্তু মনে করিয়া মননাদিদ্বারা তাহারই জ্ঞান ও তৎপুণ্যজনিত মুক্তির উপদেশ করিয়াছেন, অপর শ্রেণীর বাদীরা বলেন সবই ‘স্বাভাবিক' অর্থাৎ অকারণ-সম্ভূত, আবার অন্ত দলের বাদীরা বলেন সবই ঈশ্বরাধীন, কিন্তু তথ্যগুতের মতে এই মতগুলির প্রত্যেকটিই সংসার-সাধন-ধৰ্ম্ম । তিনি মনে করেন ষে, এই বাদিগণ সকলেই সংবৃত্তি-ধৰ্ম্মৰাণী, কেহই নিবৃত্তি-বিধান-বিং নহেন। তাই তিনি প্রতীজসমুৎপাদকে সংবৃত্তি-ধৰ্ম্ম-সাধন মনে করিয়া অহার নিরোধকেই নিবৃত্তি-পদ-সাধন বলিয়া প্রচারে প্রবৃত্ত হুইয়াছিলেন । র্তাহার মতে— “পঞ্চস্কন্ধময়ং দেহং পঞ্চভুক্তসমুদ্ভৱম্। শুল্যমৰীষ্মক্ষং সৰ্ব্ব প্ৰষ্ঠীত্যোৎপাদান)সম্ভবৰু।”