পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఫిహ్రి দারিলভট্ট বলেন যে, ব্যাধি দুই প্রকার—অনিষ্ট আহার জন্য আর অধৰ্ম্মজন্য। আয়ুৰ্ব্বেদের দ্বারা প্রথম জাতীয় ব্যাধির নিবৃত্তি হয় এবং আথৰ্ব্বণ প্রয়োগের দ্বারা দ্বিতীয় জাতীয় ব্যাধির নিবৃত্তি হয় । চরক নিজেও প্রায়শ্চিভকে ভেষজ বলিয়া ধরিয়াছেন । আয়ুৰ্ব্বেদ অষ্টাঙ্গে বিভক্ত। শল্য ( শক্সচিকিৎসা ), শালাক্য ( শিরোরোগ-চিকিৎসা ), কায়ুচিকিংস, ভূতবিদ্যা, কৌমার ভৃত্য ( শিশুচিকিৎসা ), অগদতন্ত্র ( বিষচিকিৎসা ), রসায়ন ( শরীরে তারুণ্য আনয়নের বিধি ) এবং বাজীকরণ (ইন্দ্রিয় সামর্থ্য বৃদ্ধি) । সুশ্রুত বলেন যে পূৰ্ব্বকালে আয়ুৰ্ব্বেদের মধ্যে এই আট প্রকার বিভাগ পৃথক পৃথক্ করিয়া নিদিষ্ট ছিল না । ঋগ্বেদ প্রতিশাধ্যের মধ্যে মুভিষজ নামক প্রাচীন আয়ুৰ্ব্বেদ গ্রস্থের উল্লেখ পাওয়া যায়, মহাভারতের মধ্যেও আয়ুৰ্ব্বেদ অষ্টাঙ্গ বলিয়। বর্ণিত হইয়াছে এবং বায়ু পিত্ত শ্লেষ্মারও উল্লেখ আছে । অথৰ্ব্ববেদের মধ্যেও তিন জাতীয় রোগের কথা উল্লিখিত আছে । সঞ্চারী রোগ, সিক্তা রোগ ও শুষ্ক রোগ—এই তিন প্রকার রোগই বোধ হয় পরে বায়ুপিত্তকফাত্মক বলিয়া অভিহিত হইয়াছে । অথৰ্ব্ববেদ পড়িলে দেখা যায় যে, সে সময়েও শত শত চিকিৎসক ছিলেন এবং সহস্ৰ সহস্ৰ ঔষধ পৃথিবীতে প্রচার ছিল । শতং হস্য ভিষজ: সহস্রম্‌ উক্ত বীরুধঃ—অথ, ২৯৩ । সেকালে দুই উপায়ে রোগের চিকিৎসা চলিত । মন্ত্র ও কবচধারণাদি এবং ঔষধ প্রয়োগ । এই দুই প্রকারের চিকিৎসাই আমাদের দেশে এখনও পর্য্যস্ত চলিয়া আসিয়াছে । চরক ও সুশ্রুত উভয়েই আয়ুৰ্ব্বেদ অথৰ্ব্ববেদের সহিত সংশ্লিষ্ট এইরূপ লিথিয়াছেন। চরক লিখিতেছেন, তত্র ভিবজ পৃষ্টেন এবং চতুর্ণামৃ ঋকৃপামযজুবথর্ববেদানাম আত্মনোহখৰ্ব্ববেদে ভক্তিরাদেশু । বেদোহাথৰ্ব্বণ: স্বস্তয়নকলিমঙ্গল হোমনিয়ম্প্রায়শ্চিত্তোপবাসমন্ত্রাদিপরিগ্রহাং চিকিৎসাং প্রাহ। উভয়েই বলেন যাহাদ্বার। আয়ু পাওয়া যায় বা যাহাতে আয়ুর বিচার আছে তাহাকে আয়ুৰ্ব্বেদ বলে এবং আয়ুৰ্ব্বেদের প্রয়োজন ব্যাধিপরিমোক্ষ ও স্বাস্থ্যের পরিরক্ষণ । কিন্তু এই উভয় পদ্ধতির সম্প্রদায় বিভিন্নরূপ ছিল বলিয়াই মনে হয়। আয়ুৰ্ব্বেদের উৎপত্তি বর্ণনা করিতে গিয়া সুশ্রী চ যেরূপ বর্ণনা করিয়াছেন, কাশীরাজ দিবোদাস ধন্বন্তরি প্রভৃতির S383 উল্লেখ করিয়াছেন, চরকে সেইরূপ দেখিতে পাই না । আবার স্বশ্ৰতে অষ্টাঙ্গ চিকিৎসার মধ্যে শলাকেই প্রধান অঙ্গ বলিয়া বর্ণনা করা হইয়াছে ( এতদ্ধি অঙ্গপ্রথমং প্রাগভিঘাতন্ত্রণসং রোহাৎ যজ্ঞশিরঃসন্ধানাচ্চ ) । স্বশ্ৰুত পড়িলে দেখা যায় যে, ইহাতে শস্ত্রচিকিৎসা ও বিষচিকিৎসাই প্রধান স্থান অধিকার করিয়াছে, অথচ চরকে কায়ুচিকিৎসাহ প্রধান । স্থশুতে অস্থিসংখ্যা-গণনার সহিত চরকের অস্থিসংখ্যা-গণনার সামঞ্জস্থ নাই । সুশ্রতের মতে অস্থিসংখ্যা ৩০০, চরকের মতে ৩৬০ । চরক ও সুশ্রতের সহিত অথৰ্ব্ববেদ ও শতপথব্রাহ্মণের তুলন। করিলে দেখা যায় যে, অস্থিসংখ্যা-গণনায় চরকের সহিত ইহাদের সঙ্গতি আছে, স্বশ্বতের সহিত নাই । সুশ্ৰুত নিজেও বলিয়াছেন যে বেদবাদীদের মতে অস্থিসংখ্যা ৩৬০ ঈহ! ছাড়া যেরূপ সাখ্যাদি সিদ্ধাস্তের উপর ভিত্তি করিয়া চরক র্তাহার গ্রন্থ লিখিয়াছেন, সুশ্রত সেরূপ করেন নাই । সুশ্রীতের সাঙ্খা, ঈশ্বররুষ্ণের সাম্প্র্যকারিকার সাস্থ্য এবং চরকোত্ত সাস্থ্য হইতে অনেক পরিমাণে বিভিন্ন । ইহা ছাড়া, চরকে ধ সমবায় সামান্য বিশেষ প্রভৃতির উল্লেখ আছে, সুশ্রীতে সেরূপ নাই। এই সমস্ত দেখিয়া মনে হয় যে, সুশ্রীতের সম্প্রদায় চরকের সম্প্রদায় হইতে বিভিন্ন। চরককে যদি আত্ৰেয় সম্প্রদাষ বল যায়, তবে সুশ্রুতকে ধন্বন্তরিসম্প্রদায় বলা যাইতে পারে । এই দুইটি সম্প্রদায় ছাড়া চিকিৎসাশাস্ত্রের আরও বিভিন্ন সম্প্রদায় প্রচলিত ছিল বলিয়াই মনে হয় । চরক বিমানস্থানে বলিয়াছেন---“বিবিধানি ভিষজানি প্রচরস্তি লোকে ।” যদিও অথর্ববেদে শুষ্ক, সিক্ত ও সঞ্চারী এই তিন প্রকার ব্যাধির উল্লেথ দেখা যায়, তথাপি অনেক স্থলেই অথৰ্ব্ববেদের রোগনিদান, ভূতবিদ্যার সহিত প্রায় এক পৰ্য্যায়ভুক্ত বলা যাইতে পারে । অথৰ্ব্ববেদের বহুস্থত্ততেই অরাতি, পিশাচ,রক্ষঃঅত্রিন, কথ, প্রভৃতি বিভিন্ন জাতীয় ভূতবর্গের আক্রমণে নানাবিধ ব্যাধির উৎপত্তি হইয়াছে, এইরূপ বর্ণিত হইয়াছে। এই সমস্ত বিভিন্ন রোগের উৎপাদক বলিয়। ষে-সমস্ত প্রাণীর কথা উল্লিখিত হইয়াছে তাহাদের কতকগুলির নাম দিতেছি – যাতুধান, কিমদিন, পিশাচ, পিশাচী, অর্মীব, দমাবিন, রক্ষঃ, মগুণ্ডী, অঞ্জিংশ, বৎসক, পলাল, অনুপলাল, শর্ক, কোক, মলিমুচ, পলীজক, বত্ৰীবাস, অশ্রেীষ, বিক্ষগ্রীব, প্রমালিন ইত্যাদি। এই সমস্ত পিশাচ-জাতীয় প্রাণীরা দেহের