পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>>lso ৫ প্রবাসী;} SSD8S স্বশ্ৰতের শস্ত্রচিকিৎসা অন্ততঃ খ্ৰীঃ পূঃ ৮• •, ৯•• কি ১• • • হইতে চলিয়াছে এবং সে সময়েও বেদবাদীদের একটি স্বতন্ত্র চিকিৎসা ছিল। স্বশ্ৰুত প্রাম ১২•টি শস্ত্রযন্ত্রের কথা উল্লেখ করিয়াছেন। হারিতেও ১২টি যন্ত্রের উল্লেখ দেখা যায়। বাগ ভটে ৬০টি যন্ত্রের উল্লেখ দেখা যায় । ইহা ছাড়া পশুশাস্ত্রেও অন্যান্ত শস্ত্রোপচার যন্ত্রের উল্লেখ দেখা যায় । পালকাপ্য নামক হস্তায়ুৰ্ব্বেদে প্রাম পচিশটি স্বতন্ত্র যন্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। স্বশ্ৰুত পড়িলে দেখা যায় যে, সে সময়ে যে কেবল শবব্যবচ্ছেদ হইত তাহা নহে, শরীরের হস্তপদাদি বিভিন্ন স্থানে যে শস্ত্রোপচার হইত তাহা নহে, এমন কি উদরের মধ্যেও শস্ত্রোপচার চলিত এবং কঠিন শস্ত্রোপচারের দ্বারা উদরস্থ সস্তানকে প্রসব করান হইত। তাহ ছাড়া মাথার মধ্যেও শস্ত্রোপচার করিয়া অনেক দুরারোগ ব্যাধি দূর করা इहेड । নানা গ্রন্থে জীবক সম্বন্ধে ঘে-সমস্ত কাহিনী বিবুত আছে তাহাতে দেখা যায় যে তিনি অনেক স্থলেই মাথার করোটিক কৰ্ত্তন করিয়া মাথার মধ্যের ক্ষতস্থান হইতে ক্রিমি নিঃসারণ করাইয়া অনেক শিরঃপীড়া আরোগ্য করাইয়াছিলেন । রাজগৃহে তিনি যে একটি শস্ত্রোপচার করিয়াছিলেন তাহাতে দেখা যায় যে, একটি ধনীর স্ত্রীকে হস্তপদাদি বদ্ধ করিয়া তাহার উদরে শস্ত্রোপচার করিয়া উদরের অন্ত্রতন্ত্রগুলি বাহির করিয়া তাহার মধ্যে যে কতগুলি গ্রস্থি পাকাইয়া গিয়াছিল সেগুলি উন্মোচন করাইয়া পুনরাম সমস্ত অস্ত্রতন্ত্রকে যথাস্থানে নিবেশ করাইয়া সীবন করিয়া দেন। জীবক ভগবান বুদ্ধের সমসাময়িক ছিলেন এবং অনেক সময়ে তাহাকে নানা ফুরারোগ্য ব্যাধি হইতে নীরোগ করিয়াছিলেন। জীবক আত্ৰেয়ের শিষ্য ছিলেন । চরকও আত্ৰেয়-সম্প্রদায়ের লোক । চরক প্রধানতঃ কায়চিকিৎসক ছিলেন, সেইজন্য অনেক স্থানে ( যথা—উদরি ) শস্ত্রসাধ্য ব্যাধির কথা বর্ণনা করিতে গিয়৷ বলিয়াছেন যে, এই সমস্ত ব্যাধি শস্ত্রবিদেরা আরোগ্য করিতে পারেন । অতএব মনে হয় যে, ধন্বস্তুরি সম্প্রদায় ছাড়া আত্ৰেয় সম্প্রদায়ের মধ্যেও শস্ত্রোপচারের পদ্ধতি প্রচলিত ছিল । স্বপ্রতের মধ্যে চক্ষুর ছানি কাটিবার ষে পদ্ধতি ছিল আজও তাহা হইতে উংকৃষ্টতর ছানি কাটিবার পদ্ধতি আবিষ্কৃত হইয়াছে ৰুি ন সন্দেহ । সাধারণ মাতুরাল স্থাপনের পদ্ধতি বোধ হয় ভারতবর্ষেই সৰ্ব্বপ্রথম। অশোকের শিলালিপিতে দেখা যায় যে, সে সময়ে পশুদিগের ও মনুষ্যদিগের জন্য স্বতন্ত্র চিকিৎসালয় স্থাপিত হইয়াছিল এবং ভৈষজ্য উদ্যান স্থাপন করিয়া নানা দেশের দুষ্প্রাপ্য ওষধি সকল একত্র রোপিত হইত। সিংহলীয় লেখমালা হইতে জানা যায় যে খ্ৰীঃ পূঃ ৫ম শতাব্দীতেও এদেশে আতুরালয় বা হাসপাতাল ছিল। এই সমস্ত হাসপাতাল এবং গৃহীদের আতুরালম ও প্রসবগৃহ প্রভৃতির ব্যবহারের জন্য নানাবিধ উপকরণের ব্যবস্থা দেখা যায়। স্বশ্ৰুত চরক প্রভৃতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধানের অঙ্গ বলিয়া দস্তকাষ্ঠ, জিহবানিলেখন, ক্ষুর, কেশপ্রসাধনী বা চিরুণী, আদশ, পট্টবস্ত্র পরিধান, উষ্ণীষ, ছত্র,উপানহ বা ব্যজন ইত্যাদির উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। অপরিস্কৃত জল পরিষ্কার করিবার জন্য নানাপ্রকার ফিন্টারের ব্যবস্থা দেথা যায়। আতুরালয়ের জন্য চামচ, নিষ্ঠীবনপাত্র, মলপাত্র ( বেডপ্যান) মূত্রপাত্র ও পূজপাত্র প্রভৃতির ব্যবহার দেখা যাম । ঔষধাদি পানের জন্য রজত, মুবর্ণ, তাম্ৰ, মৃৎ বা গুক্তি পাত্র ব্যবহৃত হইত । আলেকজাণ্ডারের পূৰ্ব্বে গ্রীকদের সহিত ভারতীয়দের কিরূপ আদানপ্রদান চলিত তাঁহা বলা কঠিন, কিন্তু নিয়ার্কাস ( Nearchus) বলেন যে, গ্ৰীকবৈদ্যেরা হিন্দুদের চিকিৎসশাস্ত্র পাঠ করিয়াছিলেন । গ্রীকদের ভৈষজ্যগ্রন্থ পাঠ করিলে দেখা যায় যে, পদ্মবীজ, তিল, জটামাংস শৃঙ্গবের, মরীচি, এলাচি প্রভৃতি বহুবিধ ভারতীয় ঔষধ তাহারা ব্যবহার করিতেন । খৃষ্টীয় ৮ম শতাব্দীতে আরবেরা চরক স্বশুত ও মাধবনিদান অতুবাদ করেন, ইহা ছাড়া ভারতীয় সপবিদ্যা, বিববিদ্যা ও পশুচিকিৎসাও আরব ভাষায় অনুদিত হইয়াছিল, এবং অনেক সময়ে হিন্দু চিকিৎসকের আরব দেশে চিকিৎসার জন্ত নীত হইতেন। আরব দেশের চিকিৎসা-গ্রন্থে বহু ভারতীয় ঔষধের ব্যবহার দেখা যায়, যথা—দেবদারু, স্বগন্ধ মরীচ, সোণামুখী, স্ববর্ণখ, কুলীঙ্গল, গুগগুল, তিন্তিড়ী, ত্রিফল, হরীতকী, বিহু, চন্দন, নিম্ব, তাম্বুল, খদির, বিষমুষ্টি, কদলী, নাগয়ঙ্গ, মাতুলুঙ্গ, ইত্যাদি বর্তমানে ইউরোপে প্রচলিত ভৈষজ্যমধ্যেও বহু ভারতীয় ঔষধের ব্যবহার দেখা যায়, যথা— অতিবিষ, পলাণ্ডু, খদির, যবস, সপ্তপর্ণ, এল, উশীর দারুহুরিদ্র, পলাশ, সোণামুখী