পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

з о о এমন অবনতি হইয়াছিল যে, যখন শঙ্করাচাৰ্য্য ভগন্দর রোগে আক্রান্ত হইয়াছিলেন তখন এই রোগ অচিকিৎস্য বলিয়া পরিগণিত হইয়াছিল । কিন্তু চরকাদির সময়েও শস্ত্রবিদদিগের বিশেষ সমাদর ছিল এবং বাগ ভটাদির সময়েও শস্ত্রবিদ্যা যে একেবারে চলিত ছিল না, এ-কথা বলা যায় না। চরক পড়িলে দেখা যায় যে, অঙ্গির প্রভৃতি ঋষির ভরদ্বাজকে ইন্দ্রের নিকট প্রেরণ করেন এবং তিনি তাহার নিকটে হেতু লিঙ্গ ও ঔষধজ্ঞানাত্মক ত্রিস্বত্র শিক্ষা করেন । অন্তান্ত ঋষির ভরদ্বাজের নিকট হইতে ইহা শিক্ষা করেন । ভরদ্বাঞ্জের নিকট হইতে আত্ৰেয় পুনৰ্ব্বস্তু এই শাস্ত্র শিক্ষা করিয়া অগ্নিবেশ, ভেল, জতুকৰ্ণ, পরাশর, হরীত ও ক্ষারপাণি— এই ছয় শিষ্যকে ইহা শিক্ষা দেন । ইহাদের মধ্যে অগ্নিবেশক্ট সৰ্ব্বাপেক্ষ বুদ্ধিমান ছিলেন । সেইজন্য তিনিই প্রথম অগ্নিবেশসংহিতা প্রণয়ন করেন । তদনন্তর ভেল, পরাশর, জতুকণ প্রভূতিরাও স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র পুস্তক লিথিয়াছিলেন । এই পুনৰ্ব্বস্তু আত্ৰেয় ছাড়া কৃষ্ণাত্রেয় ও ভিক্ষু আত্ৰেয় নামে আ ও দু-জন আত্ৰেয়ের কথা পাওয়া যায়। জীবক কোন আত্ৰেয়ের শিষ্য ছিলেন তাহ নিশ্চয় করিয়া বল কঠিন । ইহা ছাড়া নাড়ীতত্ত্ববিধির প্রণেতা দত্তাত্রেয় নামে আর একজন আত্ৰেয় ছিলেন । চরক পড়িলে পুনৰ্ব্বস্ব আত্ৰেয়ের সমসাময়িক আরও অনেক ভিষকের নাম পাওয়া যায়, যথা—হিরণ্যকেশী বড়িশ, সাংকৃত্যায়ণ, শরলোম কাপ, কংকায়ুন কুমারশিরা, ভরদ্বাজ, রাজর্ষি, বামক, বাৰ্য্যোবিদ শৌনক, মৈত্রেয়, পৈল, শাকুস্তেয় ইত্যাদি । চরকের অনেক অধ্যায়ের লিখন-প্রণালীতে ইহা বোঝা যায় যে, এই সমস্ত ভিন্ন ভিন্ন চিকিৎসক একত্র সম্মিলিত হইয়৷ নানা রোগের বিষয় ও আয়ুৰ্ব্বেদের নান। সমস্ত পরস্পর আলোচনা করিয়া প্রত্যেকে স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র মত প্রকাশ করিতেন এবং পরিশেষে আত্ৰেয় যেন সভাপতিরূপে সেই সব মতের সামঞ্জস্ত করিয়া সমাধান করিতেন । এই সমস্ত স্থানগুলি দেখিলে অনেক সময়েই মনে হয় যে, চরকসংহিতাথানি যেন কোনও ভিষকসমিতির বক্তৃতাগুলির সারসংকলন । যে-সকল স্থলে মতদ্বৈধ ছিল না সে-সমস্ত স্থলে আত্ৰেয় ষেন নিজেই বলিয়া গিয়াছেন । অগ্নিবেশলিখিত তন্ত্র চরক পুনরায় প্রতিসংস্কার করিয়া তাহার গ্রন্থ প্রণয়ন করেন । এই অগ্নিবেশসংহিতা একাদশ শতাব্দীতে S383 চক্রপাণির সময় পৰ্য্যন্তও পাওয়া যাইত। যে কারণেই হউক চরকসুত্র, নিদান, বিমান, শারীর ও চিকিৎসস্থানে ১৬শ অধ্যায় পৰ্য্যস্ত লিখিয়া যান। চিকিৎসাস্থানের শেষ ১৭টি অধ্যায়ু এবং সিদ্ধিস্থান ও কল্পস্থান কাশ্মীরী ভিষক কপিলবলের পুত্র দৃঢ়বল খৃষ্টীয় নবম শতাব্দীতে আপূরণ করেন। দৃঢ়বল যে কেবলমাত্র আপূরণ করিয়াই ক্ষাস্ত ছিলেন তাহা নহে, অনেক সময়ে তিনি ভিন্ন ভিন্ন রোগাধ্যায়ের মধ্যেও কিছু কিছু পরিবর্তন করিয়াছিলেন, এরূপ মনে করিবার যথেষ্ট হেতু আছে । চক্রপাণি ও বিজয় রক্ষিত যখন কাশ্মীরপাঠ বলিয় সময়ে সময়ে নির্দেশ করিয়াছেন তখন এই দৃঢ়বলেরই প্রতিসংস্কারকে লক্ষ্য করিয়া তাহ বলিয়াছেন বলিয়া মনে হয় । মাধব সম্ভবতঃ দৃঢ়বলের পূর্কের লোক ছিলেন, কাজেই মাধব নবম শতাব্দীরও পূর্বের লোক । বৃদ্ধ বাগভট বোধ হয় ৭ম শতাব্দীর লোক ছিলেন, কারণ সপ্তম শতাব্দীতে ইৎসিন সমসাময়িক বলিয় তাহার নামোল্লেখ করিয়াছেন । চত্র-পশিদ ও একাদশ শতাব্দীর লোক ছিলেন এবং অরুণদত্ত ও বিজয় রক্ষিত উভয়েই ত্রয়োদশ শতাব্দীতে প্রায়ু ভূত হইয়াছিলেন । প্রাচীন কালে কাশী ও তক্ষশিল বিদ্যার প্রধান কেন্দ্র ছিল । আমরা পূৰ্ব্বেঙ্গ বলিয়াছি যে, শালিহোত্র গান্ধার-দেশীয় লোক ছিলেন । জীবক ও তক্ষশিলার লোক ছিলেন । চীনদেশীয় বিবরণ হইতে জানা যায় যে, চরক কণিষ্ক মহারাঞ্জের রাজবৈদ্য ছিলেন । কণিষ্ক খৃষ্ট্রীয় ১ম শতাব্দীর লোক এবং র্তাহার রাজধানী ছিল পুরুষপুর বা পেশোয়ার । চরক পড়িলে দেখা যায় বাহলীক-দেশীয় ভিযকরা আত্ৰেয় পুনৰ্ব্বস্তুর ভিধকৃ-পরিষদে সমবেত হইতেন । ইহা হইতে এরূপ অকুমান করা অসঙ্গত নহে যে, আত্ৰেয় পুনৰ্ব্বস্তু যেখানে বাস করিতেন, বা তাহার সমধৰ্ম্মী চিকিৎসকেরা যেখানে বাস করিতেন তাহ বাহুলীক দেশের নিকটবৰ্ত্তী স্থান ; কাজেই এরূপ মনে করা যাইতে পারে যে, তক্ষশিলার নিকটবর্তী কোনও স্থানে তাহদের এই চিকিৎসা-পরিষদ বসিত। দৃঢ়বল যে কাশ্মীরের লোক ছিলেন তাহাও পূৰ্ব্বে বলা হইয়াছে। ইৎসিন নলান্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন এবং তিনি ফেভাবে বাগ ভটের কথার উল্লেখ করিয়াছেন তাহাতে মনে হয় যে বাগভট যেন তৎসমীপবৰ্ত্তী কোন স্থানের লোক ছিলেন। তাছাতে এরুপ