পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ আয়ুৰ্ব্বেদের ইতিহাস ২e১ মনে করা যাইতে পারে যে, বৃন্ধ বাগভট সম্ভবতঃ মগধেরই লোক ছিলেন । মাধব কোন দেশের লোক ছিলেন তাহা নিশ্চয় করিয়া বলা যায় না । অনেকে বলেন যে, মাধব এবং বিজয় রক্ষিত উভয়েই বাংলা দেশের লোক । ইহার সপক্ষে বা বিপক্ষে প্রমাণ নির্দেশ করা কঠিন। দৃঢ়বল যদি নবম শতাব্দীর লোক হন তাহ হইলে মাধব হয়ত ৭ম শতাব্দীর লোক হইবেন এবং অষ্টাঙ্গহৃদয়কার বাগভট হয়ত ৯ম শতাব্দীর লোক হইবেন । চরক ও মাধবের মধ্যে এই যে প্রায় ৬০০ বৎসরের ব্যবধান ইহার মধ্যে কোনও প্রসিদ্ধ ভিষকের নাম পাওয়া যায় না। কিছু দিন হইল তুর্কীস্থানের বালুস্তুপের মধ্যে নাবনীতক নামে এক সংগ্রহগ্রস্থ পাওয়া গিয়াছে । এই সংগ্ৰহ গ্রন্থ খৃষ্টীয় ৩য় শতাব্দীর লেখা এইরূপই পণ্ডিতেরা অকুমান করেন । ইহা চরক, স্বশ্ৰত ও অদ্যান্য গ্রন্থ হইতে সংগৃহীত এবং প্রধানতঃ একখানি ভেষজসারসংগ্রহের গ্রন্থ । এই নাবনীতকে সাম্বব্য, গর্গ, বশিষ্ঠ, করাল, স্বপ্রভ, বাড় বলি প্রভৃতি ভিষকের নাম পাওয়া যায়। এই গ্রন্থে হবুষাবস্তি নামে একরূপ অন্ত্রবস্তি (Enema) ব্যবহারের বিধান আছে । চরক স্বশ্ৰতেও মলদ্বার দিয়া প্রয়োগের জন্য নানাজাতীয় বস্তির বিধান ছিল । এই সকল বস্তিদ্বারা নানাবিধ ঔষধ সঙ্কীর্ণ নলের মধ্য দিয়া অন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করাইয় দেওয়া হইত। ইহা ছাড়া স্ত্রীলোক ও পুরুষের মূত্রদ্ধারের নানা প্রকার ব্যাধির জন্য বিভিন্ন প্রকারের বস্তি প্রয়োগের (cathetar) ff fgø i চক্রপাণিদত্ত গৌড় দেশেরই লোক ছিলেন ইহা প্রমাণ করা কঠিন নহে। সম্ভবতঃ অষ্টম কি নবম শতাব্দী হইতেই বঙ্গদেশে আয়ুৰ্ব্বেদ-চর্চার প্রসার বৃদ্ধি পাইতে আরম্ভ করে । বিজয় রক্ষিতের পূৰ্ব্বেও ধে বহু আয়ুৰ্ব্বেদের গ্রন্থকৰ্ত্ত গ্রন্থ লিখিয়া গিয়াছিলেন এবং তাহার অনেকেই ষে চরকের উপরে টীকা ও অন্যান্য প্রকার গ্রন্থ লিখিয়াছিলেন তাহার পরিচয় আমরা বিজয় রক্ষিতের টীকার মধ্য হইতে পাই । ডহলণ ( ১১শ কি ১২শ শতাব্দী ) তাহার নিবন্ধসংগ্রহে বলিয়াছেন যে, প্রাচীন বৃদ্ধস্থশুতকৃত স্বশুভসংহিতা নাগার্জনের দ্বারা প্রতিসংস্কৃত হইয়া বর্তমান স্বশুভসংহিতা নামে চলিয়াছে। বর্তমান স্বশ্ৰুত গ্রন্থে যে একটা উত্তর তন্ত্র আছে তাহাও ইহার পরিচায়ক । চক্রপাণি ఇt=ఖచిe র্তাহার ভানুমতী নামক টাকাতে এই প্রতিসংস্কারের উল্লেখ করিয়াছেন ; স্থপ্রতচন্দ্রিক বা হামুচন্দ্রিক নামে প্রচলিত গয়দাসের পঞ্জিকাতে নাগার্জনের পাঠ বলিয়া যে পাঠটি চলিয়াছে তাহ বর্তমান স্বশ্ৰতেরই পাঠ, অষ্টাঙ্গন্ধদক্ষসংহিতার ভট্টনারায়ণকৃত বাগভট্টখগুনমওনটীকায় স্বশ্ৰতের নাগাৰ্জ্জুনের পাঠ"বলিয়া স্বতন্ত্র পাঠোল্লেখ আছে । আমরা তিনটি নাগাৰ্জ্জুনের কথা জানি। প্রথম, শূন্তবাদী নাগাৰ্জুন ( খ্ৰীঃ প্রথম শতাব্দী ) ; দ্বিতীয়, বৃন্দসিদ্ধযোগে যে নাগাৰ্জ্জুনের কথার উল্লেখ করিয়াছে, ইনি সম্ভবতঃ খৃষ্টীয় চতুর্থ কি পঞ্চম শতকের লোক ছিলেন ; তৃতীয়, নবম শতাব্দীর গুর্জরের রাসায়নিক নাগার্জন । এই তৃতীয় নাগাজুনই বোধ হয় কক্ষপুটতন্ত্রের লেখক ছিলেন । আর দ্বিতীয় নাগাৰ্জুন বোধ হয় স্থশ্রীতসংহিতার প্রতিসংস্করণ করিয়াছিলেন । জৈযাট, গয়দাস, ভাস্কর, শ্ৰীমাধব, ব্ৰহ্মদেব প্রভৃতির বৃহল্লঘুপঞ্জিকা আর স্বায়চন্দ্রিক, পঞ্জিকা ও শ্লোকবাৰ্ত্তিক নামে সুশ্রীতের টীকা প্রণয়ন করিয়াছিলেন । ইহা ছাড়া চক্রপাণিদত্তও ভানুমতী নামে এক টীকা লিখিয়াছিলেন । গোমিন আষাঢ় বৰ্ম্ম, জিনদাস, নরদস্ত, গদাধর, বাষ্পচন্দ্র, সোম, গোবৰ্দ্ধন, প্রশ্ননিধান প্রভৃতিরাও স্বশ্ৰতের টীকা লিখিয়াছিলেন । চরকের উপর চক্রপাণিদত্তের টীকাথানি এখন মুদ্রিত হইয়াছে। তাহ ছাড়া স্বামিকুমার, হরিশ্চন্দ্র, শিবদাস সেন, বাষ্পচন্দ্র ঈশান দেব, ঈশ্বর সেন, বকুল কর, জিনদাস, মুনিদাস, গোবৰ্দ্ধন, সন্ধাকর, জয়নন্দী ও গমুদাস প্রভৃতিরাও চরকের টক লিখিয়াছিলেন । চক্রপাণির সময় পৰ্য্যস্ত জতুকৰ্ণসংহিতাখানি পাওয়া যাইত। পরাশরসংহিতা ও ক্ষীরপাণিসংহিতা ও শ্রীকণ্ঠদত্ত ও শিবদাসের সময় পৰ্য্যস্ত পাওয়া যাইত । চক্রপাণির টীকায় খরনাদসংহিতা ও বিশ্বামিত্রসংহিতারও উল্লেখ পাওয়া যায় । প্রাচীন হারীতসংহিতাখানি চক্রপাৰি ও বিজয় রক্ষিতের সময় পৰ্য্যস্ত ছিল। ভেলসংহিতাখানি কিছুদিন হুইল প্রকাশিত হইয়াছে । ধন্বন্তরির চিকিৎসাতত্ত্ববিজ্ঞান, কাশীরাজের চিকিৎসাকৌমুদী, দিবোদাসের চিকিৎসাদর্শন, অশ্বিনীর চিকিৎসাসারতন্ত্র ও ভ্রমল্প, নকুলের বৈদ্যকসৰ্ব্বস্ব, সহদেবের ব্যাধিসিন্ধুবিমৰ্দ্দন, যমের জ্ঞানার্ণব, চাবনের জীবাদন, জনকের র্যাধিসন্দেহভঞ্জন, চন্দ্রক্ষতের সর্বসার,