পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)8 প্তপ্রবচনস্ট చీ سيا রেখামু শব্দের ভাষায় তারি সম্বৰ্দ্ধনাকে স্থায়ী রূপ ও অসীম মূল্য দিয়ে রেখে গেছে । ষা কেবলমাত্র স্থানিক সামষিক, বৰ্ত্তমান কাল তাকে যত প্রচুর মূল্যই দিক, দেশের প্রতিভার কাছ থেকে অতিশয়ের সমাদর সে স্বভাবতই পায়নি যেমন পেয়েছে জ্যোৎস্না রাতে ভেসে-যাওয়া নৌকোর সেই সারিগান,— মাঝি তোর বৈঠা নে রে আমি আর বাইতে পারলাম না । যেমন পেয়েছে নাইটিঙ্গেল পার্থীর সেই গান, যে গান শুনতে শুনতে কবি বলেছেন তার প্ৰিয়াকে — Listen Eugenia, How thick the burst comes crowding through the leaves, Again—thou hearest ? Eternal passion : Eternal pain পূৰ্ব্বেই বলেছি রস মাত্রেই অর্থাং সকল রকম হৃদয়বোধেই আমরা বিশেষভাবে আপনাকেই জানি সেই জানাতেই বিশেষ আনন্দ । এইখানেই তর্ক উঠতে পারে যে-জানায় দুঃখ সেই ও নিতেও আনন, এ কথা স্বতোবিরুদ্ধ । দুঃথকে ভয়ের বিষয়কে আমরা পরিহায্য মনে করি তার কারণ তাতে আমাদের হানি হয়, আমাদের প্রাণে আঘাত দেয়, তা আমাদের স্বার্থের প্রতিকূলে যায়। প্রাণরক্ষার স্বার্থরক্ষার প্রবৃত্তি আমাদের অত্যস্ত প্রবল, সেই প্রবৃত্তি ক্ষুন্ন হ’লে সেটা হুঃসহ হয় । এই জন্তে হুঃখবোধ আমাদের ব্যক্তিগত আত্মবোধকে উদ্দীপ্ত করে দেওয়া সত্ত্বেও সাধারণত তা আমাদের কাছে অপ্রিয় । এটা দেখা গেছে, যে-মাহুষের স্বভাবে ক্ষতির ভয় প্রাণের ভম যথেষ্ট প্রবল নয় বিপদকে সে ইচ্ছাপূৰ্ব্বক আহবান করে, দুর্গমের পথে যাত্রা করে, দুঃসাধ্যের মধ্যে পড়ে ঝাপ দিয়ে । কিসের লোভে ? কোনো দুলৰ্ভ ধন অর্জন করবার জন্যে নয়, ভয় বিপদের সংঘাতে নিজেকেই প্রবল আবেগে উপলব্ধি করবার জন্যে । অনেক শিশুকে নিষ্ঠুর হতে দেখা যায়, কীট পতঙ্গ পশুকে যন্ত্রণা দিতে তার তীব্র আনন্দ বোধ করে। শ্রেয়োবুদ্ধি প্রবল হ'লে এই আনন্দ সম্ভব হয় না, তখন শ্রেয়োবুদ্ধি বাধা রূপে কাজ করে। স্বভাবত বা অভ্যাসৰশত এই বুদ্ধি হ্রাস হ’লেই দেখা যায় হিংস্রতার আনন্দ অতিশয় তীব্র ; ইতিহাসে তার বহু প্রমাণ আছে এবং জেলখানার এক শ্রেণীর কৰ্ম্মচারীর মধ্যেও তার দৃষ্টাস্ত নিশ্চয়ই দুলভ নয় । এই হিংস্ৰতারই অহৈতুক আনন্দ নিন্দুকদের—নিজের কোন বিশেষ ক্ষতির উত্তেজনাতেই যে মাকুম নিন্দ করে তা নয় । ঘাঁকে সে জানে না, যে তার কোনো অপকার করেনি তার নামে আকারণ কলঙ্ক আরোপ করায় যে নিঃস্বাখ দুঃখজনকতা আছে দলেবলে নিন্দী-সাধনার ভৈরবীচক্রে বসে নিন্দুক ভোগ করে তাই । ব্যাপারটা নিষ্ঠুর এবং কদৰ্য্য কিন্তু তীব্র তার আস্বাদন । যার প্রতি আমরা উদাসীন সে আমাদের সুখ দেয় না, কিন্তু নিন্দার পাত্র আমাদের অতুভূতিকে প্রবল ভাবে উদ্দীপ্ত করে রাপে । এই হেতুষ্ট পরের উপভোগ্য সামগ্ৰী করে নেওয়া মাতুষবিশেষের কাছে কেন বিলাসের অঙ্গরূপে গণ্য হয় । মহিষের মত অত বড় প্রকাণ্ড প্রবল জস্তুকে বলি দেবার ' সঙ্গে সঙ্গে রক্তমাখা উন্মত্ত নৃত্য সম্ভবপর ভার কাবণ বোঝা সহজ । দুঃখের অভিজ্ঞতায় আমাদের চেতন আলোড়িত হয়ে ওঠে। দুঃখের কটুম্বাদে দুই চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকলেও তা উপাদেয় । দুঃখের অল্পম্ভুতি সহজ আরামবোধের চেয়ে প্রবলতর । ট্রাজেডির মূল্য এই নিয়ে । কৈকেয়ীর প্ররোচনায় রামচন্দ্রের নিৰ্ব্বাসন, মন্থরার উল্লাস, দশরথের মৃত্যু. এর মধ্যে ভাল কিছুই নেই। সহজ ভাষায় যাকে আমরা সুন্দর বলি এ ঘটনা তার সমশ্রেণীর নয় একথা মানতেই হবে । তবু এই ঘটনা নিয়ে কত কাব্য নাটক ছবি গান পাচালি বহু কাল থেকে চলে আসছে, ভিড় জমছে কত, আনন্দ পাচ্চে সবাই । দুঃথকে হ’তে পারে, এতেই আছে বেগবান অভিজ্ঞতায় ব্যক্তিপুরুষের প্রবল আত্মাহুভূতি । বদ্ধ জল যেমন বোব, গুমট হাওয়া যেমন আত্মপরিচয়হীন, তেমনি প্রাত্যহিক আধমরা অভ্যাসের একটানা আবৃত্তি ঘা দেয় না চেতনায়, তাতে সত্তাবোধ নিস্তেজ হয়ে থাকে। ভাই দুঃখে বিপদে বিদ্রোহে বিপ্লবে অপ্রকাশের আবেশ কাটিয়ে মানুষ আপনাকে প্রবল আবেগে উপলব্ধি করতে চায় । একদিন এই কথাটি আমার কোনো একটি কবিতায় কেন ।