পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&3bー ఫిన98) বাহির বাড়ির কোলাহল ক্রমে ক্রমে প্রশমিত হইয় আসিল । মারামারি, বকাকি সব শেষ হইল, বরযাত্রের দল গ্রাম ত্যাগ করিয়া চলিস্ক গেল । উমাগতির শুালক র্তাহাকে নাড়া দিয়া বলিলেন, ‘ অমন পাথরের মত বসে থাকলে ত চলবে না। মেয়ের গায়ে হলুদ হয়ে গেছে, বিয়ে আজ রাত্রের মধ্যে দিতেই হবে, এখনও দুটো লগ্ন আছে।” উমাগতি শূন্তদৃষ্টিতে র্তাহার মুখের দিকে চাহিয়া বলিলেন, “পাত্র কোথায় পাব ?” র্তাহার শ্যালক অসহিষ্ণুভাবে বলিলেন, "তা আমি কি জানি ? চল খুঁজে দেখা যাক। কানা, খোড়া বুড়ে যা হোক, একটা কিছু জোটাতে হবে।” মন্ত্রমুগ্ধের মত উমাগতি র্তাহীর পিছন পিছন বাহির হইয়া গেলেন । শারদকে সকলে মিলিয়া ধরাধরি করিয়া ঘরে তুলিয়া লইম্বা গেল। জম্বা একবার চাহিম দেখিল, কোন কথা বলিল না। তাহার বিশাল চোখের দৃষ্টিতে এমন কিছু ছিল, যাহা সহ করিতে না পারিয়া সকলে ধীরে ধীরে তাহার ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল । রাত্রি গভীর হুইঞ্চে গভীরতর হইয়। চলিল। হিমশীতল বায়ু আৰ্ত্তনাদ করিয়া ফিরিতেছে, বিবাহসভার প্রদীপগুলি এক একটি করিম নিবিম্ব আসিল । শেষ লগ্নও প্রায় কাটিয় যায়। এমন সময় উমাগতি ফিরিয়া আসিধু মেমের সামনে দাড়াইলেন । পাগলের মত চোখে তাহার দিকে চাহিয়া বলিলেন, “মরতে পারবি মা ?” অম্বা তাহার বিশাল চোখ দুটি তাহার মুখে স্থাপিত করিয়৷ ৰলিল, “পারব বাবা, চল, আমরা তিন জনেই একসঙ্গে যাই।” শারদ হাহাকার করিয়া ৰাদিয়া উঠিলেন। ছুটিমা আসিয়া কন্যাকে বুকে জড়াইয়া ধরিয়া বলিলেন, “ন, না, চল এ পাপরাজ্য ছেড়ে যাই । জগতে কোথাও কি আশ্রয় পাব না ?” র্তাহার ভাইও আসিম্বা ঘরে ঢুকিলেন, বলিলেন, “তাই যাও । কাশী চলে যাও, আজ রাত্রেই স্বাঞ্চনা হও । অন্তপূর্ব মেয়ে নিয়ে গ্রামে যেয়ে না, প্রাণে মারা যাবে।” ষে গরুর গাড়ীতে র্তাহারা সকালে এ-গ্রামে আসিয়াছিলেন, তাহাতেই আবার উঠিয়া বলিলেন। বাড়ির মেয়ের অস্কার বিবাহসজ্জা খুলিয়। শাদা কাপড় পরাইয়া দিল, অন্য জিনিষপত্রও গুছাইয়া সর গাড়ীতে তুলিয়া দিল । শারদার ভ্রাতা বলিলেন, “আমি ওখানের জমিজমা ঘরদের সবের ব্যবস্থা করব, তোমাদের কোনো চিন্তা নেই।” গাড়ী ছাড়ে প্রায়, এমন সময় একজন লোক হাপাইতে হাপাইতে আসিম উপস্থিত হইল। উমাগত্তির সামনে দাড়াইম জিজ্ঞাসা করিল, “কোথায় যাচ্ছেন ? গ্রামে যাবেন না। ওরা দুই দলে মিলে আপনাদের ঘরে আগুন দেবার ষড়যন্ত্র করছে।” সে ভূষণ । অম্বার মুখ তাহার দিকে চাহিমা একবার ভোরের আকাশের মত অরুণ-রাগ রঞ্জিত হইয়া উঠিল । সে তাড়াতাড়ি অন্য দিকে মুখ ফিরাইয়া লইল । শারদ কাদিয়া বলিলেন, “আমরা কাশী যাচ্ছি বাবা । ও-গ্রামে জাত যখন ছিল, তখন টিকতে পারিনি, আজ জাত গেছে, এখন কোন সাহসে যাব ?” ভূষণ সেন বলিল, “চলুন আমি যাচ্ছি ষ্টেশন অবধি আপনাদের সঙ্গে । পথে বিপদ ঘটা অসম্ভব নয়।” গাড়ীগুলি চলিতে আরম্ভ করিল। গ্রামের সীমানা ছাড়াইবা মাত্র ভূষণ বলিল, “কাশী যাবেন না, কলকাতায় চলুন ।” উমাগতি বলিলেন, “কলকাতায় কে আমাদের আশ্রয় দেষে বাবা ?” ভূষণ বলিল, “সেখানে ত আপনার বোন ভগ্নীপতি, তার রয়েছেন। যে-সমাজ আপনাদের ত্যাগ করল, কেন আর ডাকে অঁাকড়ে থাকা ? আপনি পণ্ডিত, আপনাকে আর আমি কি বোঝাব ?” উমগতি বলিলেন, “সত্য । তাই চল গিল্পি " শারদ কথা বলিলেন না। ভূষণ র্তাহার দুই পাম্বের উপর মাথা রাখিম৷ বলিল, “ম, আমি তোমার স্বজাতি নই, কিন্তু আমি মানুষ, পশু নই।” শারদ। তাছার মাথায় হাত দিয়া নীরবে আশীৰ্ব্বাদ করিলেন, তাহার কণ্ঠে ভাষা ফুটিল না। অম্বা একবার ফিরিয়া ভূষণের দিকে তাকাইল, তাহার দুই চোখে অরুণোদয়ের জাভাল । -- .L3:త আগে এ-কথা ভাৰিনি ।