পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

令巴心 "প্রবাসী; SSDR", কিন্তু ষাদের জন্যে এই আন্দোলন, এই কোলাহল, তারা . এর কোন সংবাদই রাখে না। পাহাড়ের কোন স্বন্দর কদরে, ক্ষুদ্র স্রোতস্বিনীর কুলে কোন নিতৃত কুঞ্জে, বনাস্তের কোন শু্যামল ক্ষেত্রে উভয়ে উভক্ষেতে নিমগ্ন থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটায় আর মনে করে মাত্র এক নিমেষ অতীত হ’ল। এমন কি সৌন্দর্য্যের ললাম, ঐ কালো বনের যত কোকিলের গান, যত পার্থীর কলরব, যত ভেসে-আসা নৈসর্গিক গুঞ্জর, যত পুষ্পের সুবাস তাদের প্ৰেম-সম্মোহিত চিত্তে কোন বিক্ষেপ আনতে পারে না, হয়ত তাদের অস্তরের অজ্ঞাত ক্ষেত্রে শিহরণ স্থষ্টি করে তাদের প্রেমকে আরও মধুর করে দেয় ! কিন্তু যথাসময়ে এ সংবাদ পৌছল কালের পিতার কাছে । তিনি ছুটে এলেন ফ্রাইবুর্গে জানতে এ-খবর সত্য কি না। কাল তার একমাত্র সস্তান । তাকে অনেক বোঝাবার চেষ্টা করলেন, তুচ্ছ রূপের মোহে মুগ্ধ হয়ে তাদের শত শত বৎসরের আভিজাত্য যেন সে নষ্ট না করে । তা করলে তার উৰ্দ্ধতন সকল পুরুষের অভিশাপ তার মস্তকে পড়বে—সে কখনও স্বর্থী হবে না এই রকম অনেক কিছুই তাকে বোঝান হ’ল, কিন্তু সবই হ’ল বৃথা । এমন কি ভিনি লুইসেকে দশ সহস্র মুদ্রার লেভ দেখিয়ে এ থেকে নিবৃত্ত হ’তে অকুরোধ করলেন—তার ফলে হ’লেন অপমানিত, কিন্তু কাল রইল অটল ! শেষে তাকে ত্যজ্যপুত্র করার ভয় দেখান হ’ল-কাল" রইল তবু অটল ! কালের একমাত্র যুক্তি আভিজাত্য ও শ্রমজীবীর মধ্যে যদি মিলন না হয়, তাহলে জাতি যাবে উৎসন্ন—তাকে এ-বিবাহ করতেই হবে । কালের পিতা শেষে ব্ৰহ্মাস্ত্র নিক্ষেপ করলেন --তার সমস্ত প্রতিপত্তির প্রভাবে গভর্ণমেণ্ট কর্তৃক তাদের বিবাহের অনুমতি দান বন্ধ করলেন। গভর্ণমেণ্টের অজুহাত, যেহেতু কাল পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত, সে নিজে উপার্জনক্ষম না হ’লে, বিবাহ করার অনুমতি পেতে পারে না। অগত্যা তাদের বিবাহ গেল অনিশ্চিত কালের জন্তে পেছিয়ে। এমন কি ষ্টেট থেকে কালের পড়ার খরচও গেল বন্ধ হয়ে । পুস্তকের কীট ব’লে যে কালের. থ্যাতি বা অখ্যাতি ছিল সে হ’ল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্কশূন্ত-অতএব পুস্তকহীন। সে এখন প্রবল উদ্ধামে চাকরির সন্ধান করে --উদ্দেশু লুইসেকে বিবাহ করার উপযোগিতা অর্জন করা ! শেষে জাৰ্ম্মানীর উত্তর-পূৰ্ব্ব প্রাস্তের শহর ক্যোনিগবেগে তার একটা কাজ জুটল। ঠিক হ'ল উভয়ে সেখানে যাবেলুইসে যাবে পালিয়ে। পালনেরই প্রয়োজন, কারণ যেদিন সংবাদ এল কাল পিতার ত্যজ্যপুত্র হয়েছে, সেই দিন থেকে লুইসের মা তাকে বিশেষ ক’রে বারণ করেছেন কালের সঙ্গে মিশতে । এমন কি লুইসের ওপর কড়া পাহারা বসেছে, এমন কি লুইসের অন্যস্থানে যাতে তাড়াতাড়ি বিবাহ হয়ে যায় সে-চেষ্টা তিনি উঠে-পড়ে করছেন । এ-সব বিষয়ে তিনি অত্যন্ত "প্র্যাকটিকাল’ ! আর অত "প্র্যাকটিকাল’ বলেই কপদকশূন্ত অবস্থায় শিশুকন্যাকে নিয়ে বিধবা হবার পর তিনি আপন চেষ্টায় অত ভাল ফুলের দোকান গড়ে তুলেছেন এবং মেয়েকে ভদ্রোচিত শিক্ষা দেবার ব্যবস্থা করতে পেরেছিলেন । কিন্তু তরুণ-তরুণীর প্রথম প্রেমের বন্ত এ বাধা বলীল - ক্রমে অতিক্রম করে। প্রতিদিন অন্ততঃ কয়েক মিনিটের জন্য তাদের লুকিয়ে দেখা হয়ই—তবে তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাহাজ্ঞানশূন্ত হয়ে একত্রে কাটানে। আর ঘটে ওঠে ন। কাজ পাওয়ার সংবাদ এলে তারা ঠিক করল—আগামী রবিবার সকালে যখন লুইসের নিষ্ঠাবতী মাতা মেরী-গীর্জায় উপাসনা করতে যাবেন-লুইসে আসবে পালিয়ে । এবং উভয়ে তৎক্ষণাৎ ট্রেনে উঠে জাৰ্ম্মানীর অপর প্রাস্তে রওনা হবে । তারপর দুনিয়ার যা হয় হোক—তাদের বয়ে গেল । নির্দিষ্ট দিন প্রত্যুষে কাল জিনিষপত্র গোছাচ্ছে । গৃহকত্রীকে পাঠিয়ে দিল বাজারে তার জন্যে রাস্তার রসদ কিনতে । এমন সময়ে বাহিরের দরজায় আওয়াজ বেজে উঠল— ক্রি-ড়িং” ! কাল গিয়ে দরজা খুলতেই দেখে সামনে হানস । কেন অভিবাদন না ক'রে, কোন কথা না ব’লে, সোজ। তাঁর ঘরের মধ্যে ঢুকে টুপিট খুলে সোফার ওপর ছুড়ে ফেলে চারিদিকে একবার দৃষ্টিপাত ক’রে প্রস্থানের তোড়জোড় দেখে বিস্মিত হয়ে হানম জিজ্ঞাসা করলে, “কোথায় যাওয়া হবে ?” কাল-লে সংবাদে তোমার প্রয়োজন ? হানস-কোন প্রয়োজন নেই! তোমার মত কুলাঙ্গার