পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ বিচার না ক’রে প্রথম ভাবনা আপনার বিয়ের পরেও তাকে দেখতে পাবেন কি-না ?” চন্দ্রকস্তি নিস্তব্ধ হইয়া অন্তমনে বসিয়াছিলেন ; এখন ধীরে ধীরে কহিলেন, “কিন্তু যামিনী, তোমার বিয়ে তোমার বাবা স্থির করবেন। তার যাকে পছন্দ হবে- ” যামিনী উত্তেজিত হইয়া কহিল, “কখখনো না। আমার বাবা বিয়ে করবেন না। করব আমি।” চন্দ্রকাস্ত তথাপি মৌন হইয়া রহিলেন । যামিনী পুনশ্চ কহিল, “র্তাদের মত করাবার ভার আমার । কিন্তু তারা যদি সম্মতি দেন তাহলে বলুন আপনার আপত্তি করবার কিছু নেই।” চন্দ্রকাস্তের মুখ হইতে অস্ফুট স্বরে বাহির হইল, “আমার আর কিসের আপত্তি। নিৰ্ম্মলার বিম্বে হবে সে তো ভাল কথা, মুখের কথা।”

যামিনীর স্বভাবের গতিশীলতা এমন দ্রুত তাহাকে চালনা করে যে, সে যখন যাহা কামনা করে সমস্ত শক্তি দিয়া তাহাকে যতক্ষণ না আপনার করায়ত্ত করিয়া তোলে ততক্ষণ এক নিমেষের জন্যও থামিতে পারে না। অনেক সময় এমনও হয় তাহার একাগ্র বাসনাটাই তাহার কাছে সৰ্ব্বব্যাপী হইয়৷ উঠে। যাহাকে পাইবার জন্ত এত দুৰ্ম্মদ আকাঙ্ক্ষা সেই আসল বস্তুটিই তখন চেষ্টার উগ্রতায় কৰ্ম্মের জালে আচ্ছন্ন श्st ऊँठेिदांब्र ८षां श्घ्रं । নিৰ্ম্মলার ঈষৎ-উদ্ভিন্ন যৌবনের উপর স্নিগ্ধতার, অপরিসীম শুভ্রতার সে কী অনিৰ্ব্বচনীয় জ্যোতি আসিম্ব৷ পড়িয়াছিল। সে রূপ পুরুষের মনকে আচ্ছন্ন করে না, নেশায় মাতাল করে না, কিন্তু সমস্ত মন অধীর হইয় উঠে ঐ শুভ্র আচঞ্চল মনের অন্তরালে কী আছে দেখিবার জন্ত । হৃদয় লোভাতুর হইয়া উঠে ঐ অনাহুত মনে প্রথম বীণার তারটি ঝঙ্কত করিয়া তুলিতে, ভাবলেশহীন দৃষ্টিতে প্রথম প্রেমের ভারাতুর ছায়া ঘনাইয়া তুলিতে। যামিনী ক্ষিপ্রগতিতে সমস্ত ঠিক করিয়া আনিল । তাহার বড়দাদ নিৰ্ম্মলাকে পূজার ছুটির পরে দেখিতে আসিলেন এবং পছন্দও করিয়া গেলেন। টাকার কথা মুক্তি ২৫ ও তুলিতেই চন্দ্রকাস্ত ছন্স ছল চক্ষে কহিলেন, “আমার মেয়েটি মদি স্বর্থী হয়, তবে আমার যাহা কিছু আছে তাহাকে দিব ।” বিবাহের ব্যবসাদারী পণ কষাকষির অবগু ইহা রীতি নয় । কিন্তু চন্দ্রকাস্ত যেমন স্বরে এবং যেমন বাস্পাত্র চোখে কথা বলিলেন, তাহাতে র্তাহার কথার আস্তরিকতা সম্বন্ধে সংশয়ের কোন অবকাশ থাকে না । তাহার উপর তাহার পৈতৃক বাড়িটি তেতলা, বেশ বড়। আর নিৰ্ম্মলা যখন যামিনীর দাদার সম্মুখে বসিয়া সেতার বাজাইল তখন অদূরে তাহার ভূতপূৰ্ব্ব ওস্তাদ বসিয়াছিলেন। তিনি মাথা নাড়িয়া দু-একটা বিজ্ঞতাস্বচক কথা বলিলেন এবং ছাত্রীর বিস্তর স্বখ্যাতি করিলেন । যামিনীর দাদা বুঝিলেন যিনি মেয়েকে বেথুন কলেজে পড়াইতেছেন এবং পয়সা খরচ করিয়া গানবাজন শিখাইয়াছেন তার অবস্থা নিশ্চয়ই ভাল। তা ছাড়া আজকালকার এ রীতিটাও তিনি জানিতেন, ষেধানে কন্যাপক্ষেয় অবস্থা বেশ ভাল সেখানে সুস্পষ্ট ভাষায় দাবির পরিমাণ জানাইমু! দেওয়ার চেয়ে যদি বলা যায়, “আপনার সাধ্যমত আপনি দিবেন। আপনাদেরই মেয়ে, তাহাকে যাহা দিতে চান সে আপনারই বিবেচনার উপর নির্ভর করে, তাহা হইলে ঢের ভাল ফল হয় । অতএব তিনিও তাহাই করিলেন । যামিনীর দাদা বিনোদবাবু পূজার ছুটিতে কলিকাতায় বাড়ি ভাড়া করিয়া সস্ত্রীক আসিয়াছিলেন । মেক্ষে দেখিয়া ফিরিয়া যাইবার পরের দিন যামিনী দ্বিতলের একটি শম্বনকক্ষে ঢুকিয়া কহিল, “বোঁদ, তারপরে দাদা কী বললেন ?" বৌদি হাসি চাপিয়া মুখ গম্ভীর করিয়া কহিলেন, “মন্দ নমু ’ যামিনীর মুখ গভীর হইয় উঠিল। বৌদি আড়চোখে একবার তাহার মুখের পানে চাহিয়া বলিলেন, “জার রাগ * , করতে হবে না। না গো তোমার দাদা তা বলেনি। বরঞ্চ বলছিল, ‘মেয়েটি বেশ ভাল। ভাষা যখন আমার কাছে এসে বললে, ওই মেয়েকে ছাড়া সারা পৃথিবীতে সে আর কাউকে বিয়ে করবে না, তখন আমি মনে করেছিলুম ঘোরালে। করে কোথাও গ্রেমে পড়ে গেছে বুঝি . কিন্তু মেয়েটিকে চোখে দেখার পরে বুঝতে পারলুম–ন, এ মুখে এমন । একটি শাস্ত জাভা অার লক্ষ্মীন্দ্ৰ আছে, গায়ে পড়ে প্রেম