পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ সাছিভ্যঙত্ত্ব `ම් গকে স্বম্পষ্ট প্রকাশমান করতে পারলে সকল কালের মানুষ রাষ্ট্রনীতিকের গুরুতর মন্ত্রণ ব্যাপারের চেয়ে তাকে প্রধান স্থান দেবে। এ কথা নিশ্চিত জানি যে-সময়ে শকুন্তলা রচিত য়েছিল তখন রাষ্ট্রক আর্থিক অনেক সমস্যা উঠেছিল, যার গুরুত্ব তখনকার দিনে অতি প্রকাও উদ্বেগরুপে ছিল ; কিন্তু সে ম,এর আঞ্জ চিহ্নমাত্র নেই, আছে শকুন্তলা । মানবের সামাজিক জগৎ জুলোকের ছায়াপথের মত। তার অনেকখানি নানাবিধ অবচ্ছিন্ন তত্ত্বের অর্থাৎ যাব}াকুশনের বহুবিস্তৃত নীহারিকায় অবকীর্ণ, তাদের নাম হচ্চে সমাজ, রাষ্ট্র, নেশন, বাণিজ্য এবং আরও কত কি ! তাদের ৰূপহীনতার কুহেলিকায় ব্যক্তিগত মানবের বেদনাময় বাস্তবতা আচ্ছন্ন। যুদ্ধ নামক একটি মাত্র বিশেষ্যের তলায় হাজার হাজার ব্যক্তিবিশেষের হৃদমুদাহকর দুঃখের জলন্ত অঙ্গার বাস্তবতার অগোচরে ভষ্মাবৃত। নেশন নামক একটা শব চাপ দিয়েছে যত পাপ ও বিভীষিকা তার আবরণ তুলে দিলে মামুষের জন্যে লজ্জা রাখবার জামুগা থাকে না । সমাজ নামক পদার্থ যত বিচিত্র রকমের মূঢ়তা ও দাসত্বশৃঙ্খল গড়েছে তার স্পষ্টত আমাদের চোখ এড়িয়ে থাকে, কারণ সমাজ একটা অবচ্ছিন্ন তত্ত্ব, তাতে মানুষের বাস্তবতার বোধ আমাদের মনে অসাড় করেছে, সেই অচেতনতার বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে রামমোহন রায়কে, বিদ্যাসাগরকে । ধৰ্ম্ম শব্দের মোহ-যবনিকার অন্তরালে যে-সকল নিদারুণ ব্যাপার সাধিত হয়ে থাকে তাতে সকল শাস্ত্রে বর্ণিত সকল নরকের দণ্ডবিধিকে ক্লাস্ত করে দিতে পারে। ইস্কুলে ক্লাস নামক একটা অবচ্ছিন্ন তত্ত্ব আছে সেখানে ব্যক্তিগত ছাত্র অগোচর থাকে শ্রেণীগত সাধারণতার আড়ালে, সেই কারণে যখন তাদের মন নামক সজীব পদার্থ মুখস্থ বিদ্যার প্রেষণে গ্রন্থের পাতার মধ্যে পিষ্ট ফুলের মত শুকোতে থাকে আমরা থাকি উদাসীন। গবমেন্টের আমলতন্ত্র নামক অবচ্ছিন্ন তত্ত্ব মানুষের ব্যক্তিগত সত্যবোধের বাহিরে, সেইজন্য রাষ্ট্রশাসনের হৃদয়সম্পর্কহীন নামের নীচে প্রকাও আয়তনের নির্দয়ভা কোথাও বাধে না । মানবচিত্তের এই সকল বিরাট অসাড়তার নীহারিক ক্ষেত্রে বেদনাবোধের বিশিষ্টতাকে সাহিত্য দেদীপ্যমান করে তুলছে। রূপে সেই সকল স্বষ্টি সসীম ব্যক্তিপুরুষের আত্মপ্রকাশে সীমাতীত। এই ব্যক্তিপুরুষ মানুষের অন্তরতম ঐক্যতত্ত্ব, এই মানুষের চরম রহস্য। এ তার চিত্তের কেন্দ্র থেকে বিকীর্ণ হয়ে বিশ্বপরিধিতে পরিব্যাপ্ত আছে তার দেহে, কিন্তু দেহকে উত্তীর্ণ হয়ে আছে তার মনে, কিন্তু মনকে অতিক্রম করে, তার বর্তমানকে অধিকার করে অতীত ও ভবিষ্যতের উপকূলগুলিকে ছাপিয়ে চলেছে। এই ব্যক্তিপুরুষ প্রতীয়মানরূপে যে সীমায় অবস্থিত, সত্যরূপে কেবলি তাকে ছাড়িয়ে যা, কোথাও থামতে চায় না! তাই এ আপন সত্তার প্রকাশকে এমন রূপ দেবার জন্তে উৎকণ্ঠিত যে রূপ আনন্দময় যা মৃত্যুহীন। সেই সকল রূপস্তষ্টিতে ব্যক্তির সঙ্গে বিশ্বের একাত্মতা। এই সকল্প স্বষ্টিতে ব্যক্তিপুরুষ পরমপুরুষের বাণীর প্রত্যুত্তর পাঠাচ্চে, যে পরমপুরুষ আলোকইন তথ্যপুঞ্জের অভ্যস্তর থেকে আমাদের দৃষ্টিতে আপন প্রকাশকে নিরস্তর উদ্ভাসিত করেছেন সত্যের অসীম রহনে সৌন্দর্ঘ্যের অনিৰ্ব্বচনীয়তায় }

  • কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত ।