পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আষাঢ় _इ*ि**ोa * &3 ন, কি দিয়ে বাধানো যেন। মন্দিরের চারিপাশে বাগান, । চমৎকার গাছপাল, ফুল ফুটে আছে, কি অপূৰ্ব্ব দেখতে—ঠিক যেন আমাদের সোনাদ চী-বাগানের ধারে বনের গাছের ডালে ডালে ফোটা নীল আর্কিডের ফুল । আর একদিন দেখেছিলাম ঠিক ওই জায়গায় বসেই আকাশ বেয়ে সন্ধ্যার সময় তিনটি স্বন্দরী মেয়ে, পরণে যেন শ্বেতচমরীর লোমে বোন সাদা চকুচকে লুটিয়ে-পড়া কাপড়--তার উড়ে যাচ্চে এক সারিতে, বোধ হয় পুরো পাচ মিনিট ধরে তাদের দেখেচি। তারপর রোদ চক্চক্ করতে লাগল, আর তাদের স্পষ্ট দেখা গেল না—ওপরের দিকে যেতে যেতে মিলিয়ে গেল। এরকম নতুন নয়, কতবার দেখেচি, প্রায়ই দেখি, দু-পাচ দিন অস্তর দেধি, দেখে দেখে আমার সয়ে গিয়েচে, আগের মত ভয় হয় না । কিন্তু এক-একবার ভাবি, এ আমার এক রকম রোগ—না, চোখ খারাপ হয়ে গিয়েচে, নাৰি । আমার কারু সঙ্গে মিশতে সাহস হয় না এই জন্মে যে, হয়ত কোনূ সময় আমার অন্য ভাব এসে যাবে, আর যে সঙ্গে থাকবে লে আমায় ভাববে পাগল । হয়ত হাসবে, হয়ত লোককে বলে দেবে। এমূনিও এ-বাড়িতে জ্যাঠাইমা, কাকীম, কাক, এরা আমায় পাগলই ভাবেন । কি করবে। আমি ধা দেখি, ওঁরা তা দেখতে পান না, এই আমার অপরাধ। একটা উদাহরণ দি ঃ ফাল্গুন মাসে ছোটকাকার মেয়ে পানী অমুখে পড়ল । একদিন, দু-দিন গেল, অমুখ আর সারে না । জর লেগেই আছে । সাতদিন কেটে গেল—জর একই ভাব। দশ দিনের দিন অর্থ এমুনি বাড়ল, নৈহাটি থেকে বড় ডাক্তার আলবার कथा छुआ ॥ পানীকে আমার এ-বাড়ির ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভাল লাগে। তার বয়স বছর সাত আট, ঝাকৃড়া ঝাকৃড়া চুল মাথায়, চোখ কটা, সাহেবদের ছেলেমেয়েদের মত । এবাড়ির ছেলেমেয়েদের মুথে যেমন খারাপ কথা আর গালাগালি লেগেই আছে—পানীর কিন্তু তা নয় । তার একটা কারণ, সে এতদিন মামার বাড়িতে তার দিদিমার কাছে ছিল, গঙ্গার ওপারে ভল্লেখরে। সে বেশ মেয়ে বেশ গান করতে পারে, প্রাণে তার দামায়া আছে ৷ পানীর অরখ হয়ে পৰ্যন্ত আমার মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল—আমার ইচ্ছা হয়েছিল ওর কাছে গিয়ে বসে গায়ে হাত বুলিয়ে –িকিন্তু কাকীম তো আমায় বিছানা ছতে দেবে না, সেই ভয়ে পারতাম না । -- পানীর তখন সতেরো দিন জর চলচে-বুড়ে গোবিন্দ ডাক্তার ঘোড়ার গাড়ী করে টেশন থেকে এল—ঙ্গালানে বসে মসলার কোটে বার করে মসলা তোলে, ভাজ। মসলার গন্ধে দালান ভুরতুর করতে লাগল-চ করে দেওয়া হ’ল, চী খেলে, তারপর ওষুধ লিখে দিয়ে ভিজিটের টাকা মেজকাকার হাত থেকে নিয়ে না-দেখেই পকেটে পূরলে--তারপর রোগীকে বার-বার গরম জল খাওয়ানোর কথা য’লে গাড়ী ক’রে চলে গেল । - --- একটু একটু অন্ধকার হমেচে কিন্তু এখনও বাড়িতে গম্ভীর শাক বাঞ্জে নি, কি আলো জালা হয় নি—হুম্বত ডাক্তার আসবার জন্মে সকলে ব্যস্ত ছিল বলেই। আমি রোগীর । ঘরে দোরের কাছে গিয়ে ধাড়ালাম, কিন্তু পানীর বিছানা— । পানীর শিরে যে বসে আছে তাকে চিনতে পারলাম না। লালপাড় শাড়ী পরণে, আধুখোমটা দেওয়া কে একজন, জ্যাঠাইমার মত দেখতে বটে কিন্তু• জ্যাঠাইমা তো নয় ! ঘরের মধ্যে আর কেউ নেই—এইমাত্র কাকীমা বাইরে গেছেন । ডাক্তারে কি বলে গেল তাই জানতে ছোটকাকার কাছে। । আমি ভাবচি লোকটী কে, এমন সময় তিনি মুখ তুলে আমার দিকে চেয়ে বললেন–জিতু, নিৰ্ম্মলাকে বোলে৷ পানীকে আমি নিয়ে যাব, আমি ওকে ফেলে থাকতে পাররে না-ও আমায় কাছে ভাল থাকবে, নিৰ্ম্মলা যেন দুঃখ না করে । আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম—কে নিৰ্ম্মল আমি চিনি নে, । ধিনি বলচেন তিনিই বা কে, কোথা থেকে এলেচেন, কই এ বাড়িতে তো কোনোদিন দেখিনি তাঁকে, পানীকে তিনি এই অবস্থ শরীরে কোথায় নিয়ে যাবেন, এসব কথা ভাববার আগেই ছোটকাকীমা ঘরে ঢুকলেন–কিন্তু আরও আশ্চর্ঘ্যের বিষয় এই যে বিছানার পাশে ধিনি বসে আছেন, ছোটকাকীমা যে তাকে দেখতে পাচ্চেন এমন কোনে ভাব দেখলুম না। বিছানায় ধিনি বসে ছিলেন তিনি আমায় বললেন–জিতু, নিৰ্ম্মলাকে বলে এইবার—আমি চলে যাচ্ছি। আমি কিছু না ভেবে কলের পুতুলের মত চেয়ে বললাম-নিৰ্ম্মল কে ? - -