পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আষাঢ় - , - মরুপথে o সে সইতে পারত না। আর এখন সে এই বনগীয়ে তিল তিল করে মরছে, যাঁ-কিছু সে ভালবাসত সব-কিছু থেকে বঞ্চিত হয়ে । আমাদের দলে শার সে মিশ খায় না । অনেক কাল ছাড়াছাড়ি হওয়াতে আমাদের ধরণধারণ সব আলাদা রকম হয়ে গিয়েছে, অত্যন্তই আলাদা রকম। বেচারী শকুন্তল৷ বড়ই অমর্থী।” সোমেন্দ্র বলিল, “আপনার কথা শুনে ধে কি রকম দুঃখিত হলাম তা বলতে পারব না।” দীনেন্দ্র সোজা হইয়া বসিয়া বলিলেন, “ওর কাহিনীর ভিত্তর কতখানি দুঃথ খেলুকান আছে, তা আমি ছাড়া কে বুঝবে ? চোখের উপর তার যন্ত্রণা দিনের পর দিন দেখে দেখে জগৎসংসারে আমার অরুচি ধ’রে গেছে । শকুন্তলার নিজের কিছু টাকাও ছিল, কিন্তু স্বাস্থ্যের সন্ধানে পাহাড়ে গিয়ে গিয়ে তাও সে খরচ করে ফেলেছে। তার শ্বাসযন্ত্র হঠাৎ অত্যন্ত দুৰ্ব্বল হয়ে পড়ল। আমি অবশ্য এখনও তাকে পাহাড়ে পাঠাতে থারি, কিন্তু ডাক্তারের বলেন আর পাঠিয়ে কোন লাভ নেই। তার সারবার আর কোনও সম্ভাবনা নেই, এখন দিন-কটা কোনোমতে কাটিয়ে দেওয়া। তার অবস্থা যে এত খারাপ, তা তাকে দেখবার আগে বুঝতেও পারিনি। সে আমায়ু শুধু লিখেছিল যে, একটু দুৰ্ব্বল বোধ করছে বলে আমার কাছে আসতে চায়। কিন্তু তার অবস্থ৷ দেখে এখন মনে হয় স্থনিয়ার আর যে-কোনো জায়গাম সে এখানকার চেয়ে স্বর্থী থাকত। কিন্তু সে আর এখান থেকে যেতে রাঙ্গী নয় বলে এধানে জীবনটাকে অঁাকড়ে ধরবার কোনে ইচ্ছা থাকে না । সে ধখন ছোট ছিল, তখন আমি শহরে মোটরচালকের কাজ করতাম। সে যা-কিছু চাইত, রোজ সন্ধার সময় নিয়ে যেতাম । ৪৯২ টাকা মাইনে পেতাম, কিন্তু কোনো দিন তার কোনো সাধ অপূর্ণ রাখিনি। এখন টাকাকড়ি ঢের করেছি, কিন্তু আমার সাধ্যি নেই ষে তাকে এক মুহূর্ডের জন্যে শাস্তি দিতে পারি ।” - শহর ছাড়াইম্বা তাহার মাইলের পর মাইল চলিয়াছে । স্থধ্যের উত্তাপ ক্রমেই প্রখর হইয়। উঠিতেছে। সোমেশ্র কি ভাবিতেছে কে জানে ? : অবশেষে গাড়ীটা আসিয়া ধাড়াইল এটা গেটের সামূনে। প্রকাও বাগান, পাচিল দিয়া ঘের, পিছন দিকে মন্তবড় একটি

    • -ہ »

বাংলাবাড়ি । কাছাকাছি মানুষের খালের জার কোনো চিহ্ন খে বা না। - দীনেন্দ্ৰ নামিয়া পড়িয়া বলিলেন, “বাৰু এসে পড়া গেছে। আপনি বুদ্ধিমান মানুষ, আপনাকে আর আমি কি বলব ?" গেটের কাছে একটি দর্শীকৃতি মহিলা অগ্রসর হইয়া শাগিলেন, ইহাকেই সোমেন্দ্ৰ ষ্টেশনে দেখিয়াছিল। ভঞ্জমহিলা বিধবা বলিয়া সোমেঙ্গের বোধ হইল। ধীনেজ পরিচয় করিয়া দিলেন, “আমার বড় বোন, সাবিত্রী. গোমেজ উহাকে নমস্কার করিল। - সাবিত্রী বোধ হয় বাগানে কোনো কাজে জাসিয়াছিলেন, দীনেক্সের দিকে ফিরিঙ্ক বলিলেন, “একে নিলে ৰাও বসবার ঘরে, শুকু সেইখানে আছে।” সোমেশ্র দীনেশ্রের পিছন-পিছন বসিবার স্বরে গিয়৷ উপস্থিত হইল। ঘরখানি খালি, কিন্তু ভিতরে ঢুকিয়াই সে চমূকাইয়া উঠিল। উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের এক অখ্যাত পাড়াগায়ে এমন ভাবে সাজান ঘর দেখিবার প্রত্যাশা সে করে নাই। ঠিক যেন বালীগঞ্জের কোনো অভিজাত পরিবারের ড্রয়িং-রুম । একবার দরজার পর্দার ফঁাকে লে বাহিরের দিকে চাহিয়া দেখিল, দিগন্তব্যাপী সিমাকীর্ণ অন্তর্বর প্রান্তর। না, সে কলিকাতায় নাই। - স্বরধান তাহার বই লেচেনা বোধ হইতে লাগিল । কোথায় সে এ-ঘর দেখিয়াছে ? একদিকে মঞ্চবড় একটি পিয়ানো, তাহার ঠিক উপরেই তেজেক্সের একটি বড় ফোটোগ্রাফ। সোমেন্দ্রের মস্তিষ্কের ভিতরটা অকস্মাৎ পরিষ্কার হইয়া গেল। ঘরখানি অবিকল তেজেদের কলিকাতার বাড়ির ড্রক্ষি-কমের নকল । এমন নির্মুখ নকল যে, সোমেন্ত্রের মনে হইতে লাগিল এখনই রষ্টীন রেশমের পঞ্জ তুলিয়া তেজেঅ ঘরে আসিয়া ঢুকিৰে। সমস্ত ঘরখানি তাহার ব্যক্তিত্বে পরিব্যাপ্ত । ঘরের দেণ্ডস্থলে অনেকগুলি ছবি, তাহার ভিওর শকুন্তলারও প্রথম যৌবনের একটি. ছবি রহিয়াছে। এই সময়েই সোমেন্দ্র তাহাঞ্চে প্রথম দেখিয়াছিল। সেই দিনগুলি তারার মনে পড়িল। শকুন্তলার চোখের একটি চাহনি, তাহার রঙীন অঞ্চলগ্রাস্তের একটি ছিল্লোল, তখন তরুণ সোমেক্সকে পাগল করিয়া তুতি এতকাল পরেও -