পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8°8 খোকার মাথাটা নিজের কাধে চাপিয়া চাপড়াইতে চাপড়াইতে বলিল—“এমন ঠাণ্ড ছেলে এ-তল্লাটে দেখাকদিকিন কেউ ! বাছ আমার মাসী ব’লতে অজ্ঞান ।” ম, বৌদিদি, হুধা তিন জনেই হাসিয়া উঠিল । সুধ বলিল—“আচ্ছ মা, পাচ মাসের একটা শিশু,—সে ওকে কথন মাদী বললে বল fদকিন ?—আবার বলতে অজ্ঞান হয়ে গেল।” মা বলিলেন—“মাসী হ’য়ে ও-ই জ্ঞানরহিত হয়েচে— কি যে করবে, কি বলবে..” শৈল তাহার মাসীত্ব লইয়া এমন ‘ব্যাখ্যানায় অপ্রস্তুত হইয়া থোকাকে রকেবসাইরা দুড়-দুড় করিয়া পলাইতেছিল। ছয়ারের নিকট হইতে হঠাৎ ছুটিয়া আসিয়া সয়ুস্তভাবে বলিল—“ও দিদি ৷ শীগির পুণীকে নামিয়ে খোককে কোলে নিয়ে ভবিসিব্যি হ’য়ে ব’স ;—তোমার সই, মই-ম, ও-পাড়ার সতী-fপসি—একপাল সব দেখতে আসচে তোমায়—দাও নামিয়ে—fদলে ?---” মৃধা ধীরেমুস্থে বাটি থেকে একমুঠ চাল উঠানে পায়রার বfাকের উপর ছড়াইয়া দিয়া বলিল—“বয়ে গেচে আমার ; শ্বশুরবাড়ির ক’নে বউ নাকি ?” গাড়ীতে সমস্ত রাত্রি জাগার জের,—বিকাল হইয়া গেলেও স্বধ অঘোরে নিদ্র দিতেছিল। শৈল আসিয় হস্তদন্ত হইয়া তাহীকে ঠেলিয়া উঠাইল—“ও দিদি, শামূলী ফিরে এসেচে, তার বাছুর দেখ’সে ; কি চমৎকার যে হয়েচে, এ-তল্লাটে অমন বাছুর কেউ যদি---” মা ধমক দিয়া উঠিলেন—“ন, এ-তল্লাটে যা-কিছু এক তোদেরই আছে।--“দেখ,দিক্ষিন, সমস্ত রাত ঘুমোয় নি মেয়েট, মিচিমিচি এসে তুললে ” শৈলর মনে দিদির আর খোকার আসার লঙ্গে সঙ্গে কোথা থেকে একটা তোড় নামিয় গিয়াছে ; কিন্তু সেট যেন নিজের বেগেই সব জায়গায় ধাক্কা খাইয়া মরিতেছে। উৎসাহের মুখে মা’র নিকট ধমক খাইয়া বেচারি সঙ্কুচিত হইয়া পড়িয়াছিল, দিদির কথায় আবার সামলাইয়া উঠিল - উঠতে উঠতে সুধা হাসিয়া বসিল—“ভাগ্যিসু ಇಷJSಃ ఏ98S শৈলী ভুললে মা –স্বপ্ন দেখছিলাম—খোকাকে ন দেবে শ্বশুরের যেন লীযরতি দাড়িয়ে গেচে ; এসে ব’লচেন—‘এক বছর হয়ে গেল বৌমাকে পাঠিয়েটি, কতদিন আর রাখা চলে P•••ষাবেনই নিয়ে•••তোমরা হাতে ধ’রে কাকুতিমিনতি ক’রে ব’লচ—‘এই ত মোটে আজ সকালে এসেচে বেইমশাই-••কে শোনে ?... সেজেগুজে কঁদিতে কঁদিতে বেরুচ্চি—এমন সময় ੋੀ••" শৈল চোখ ফুটে বড় বড় করিয়া একেবারে তদগত হইয়৷ গুলিতেছিল ; উল্লাসে হাততালি দিয়া নাচিয় উঠিল—“দেখ, কেমন আমি দিদিকে বাচিয়ে দিয়েচি ; যদি না---” | তাহার পর সবার হাসিতে নিজের ভুলটা বুঝিতে পারিয়া, একেবরে দুই হাতে মুখ ঢাকিয় দিদির কোলে মিশিয়া গেল । হুধা বলিল—“চল, ও, দেখিগে।” নামিতেই থোকা জাগিয়া উঠিল । “দেখেচ ? ওর টনক নড়ে, কোথাও যদি এক-পা যাবার জো আছে।”— বলিতে বলিতে খোকাকে তুলিয়া লইল, ভাজের দিকে চাহিয়া বলিল—“বোঁদি তুমিও এস ভাই ।” “হাতের পাট-ট সেরে আসচি, তুমি এগোও ”—বলিয় সে পাশের ঘরে চলিয়া গেল । শামূলী গোয়াল ঘরে তৃপ্তির গাঢ় নিঃশ্বাসের সঙ্গে জাবুন থাইতেছিল, আর মাঝে মাঝে মুখ তুলিয়া সামনের খোলা জায়গায় চঞ্চল, উৎক্ষিপ্যমান বৎসটির পালে চাহিয়৷ এক-একটা হ্রস্ব অথচ গভীর আওয়াজ করিয়া নিজের বাৎসল্য-স্নেহ প্রকাশ করিতেছিল । সুধী সামনে আসিয়া বলিল—“কি ল শামূলী, চিনতে পারিস ?..-ওম, কত বড়টা হয়ে গেচে গরুটা ’ * শামূলী নাদ হইতে ঘাড়টা বাহির করিয়া জীবন চিবাইতে চিবাইতে প্রশ্বকত্রীর পানে একটু চাহিল। তাহার পর হঠাৎ মুখনাড়া বন্ধ করিয়া দু-পু আগাইয় অসিয়া সুধীর ডান হাতটা সুদীর্ঘ টানের সঙ্গে চাটিতে আরম্ভ করিয়া দিল । বুকের নিকট হইতে একটা অব্যক্ত, ভরাট আওয়াজ বাহির হইয় আসতে লাগিল এক