পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

تواسBb দেশের মাটির সঙ্গে যোগ নেই ওর । তোমার মত চমৎকার ছেলে যে কেন বিপথে পা দিলে, ভেবে ঠিক করতে পারি নে। তোমার লজ্জ করে না একথা বলতে যে, তুমি রামকৃষ্ণ, বুদ্ধ, চৈতন্তের কথা কিছু জান না, তাদের কথা জানতে আগ্রহও দেখাও না, অথচ রোজ যাও যীশু খৃষ্টের বিষয় শুনতে ? একশো বার বলবে তুমি বিপথে পা দিয়ে দাড়িয়েচ। কই, একদিন গীতা পড়েচ ? অথচ গসপেল পড়তে ষাও পিকারিঙের কাছে—তোমাকে বন্ধু বলি তাই কষ্ট হয়, নইলে তুমি উচ্ছন্ন যাও না, আমি বলতে যাব কেন ? ভবেশ চলে গেলে আমার মনে হ’ল ও যা বলে গেল তা জ্যাঠাইম আমাকে যা বলতেন তার সঙ্গে মূলতঃ এক । ভবেশ আমাকে স্নেহ করে ব’লে হৃদয়হীন ভাষায় বলে নি জ্যাঠাইমার মত। কিন্তু আমি যা করচি ত যে খুব ভাল কাঞ্জ ময় একথা ভবেশ বলেচে । অনেক রাত পৰ্য্যন্ত কথাটা ভাবলাম। হিন্দুর ছেলের পক্ষে ধীশুখৃষ্টকে ভক্তি করাও পাপ। শ্রীরামপুরে এসে আমার একটা সুবিধে হয়েচে এখানে খৃষ্টধর্মের অনেক বই আছে, থিওলজির কলেজ রয়েচে, পিকারিঙের কাছে যাই ও-সষ সম্বন্ধে জানতে । পিকারিং আমাকে খৃষ্টান হ’তে বলেচে। কিন্তু খৃষ্টান ধৰ্ম্মের অনুষ্ঠানের দিকটা এখানে এসে দেখেচি, তার দিকে আমার মন আকৃষ্ট হয় নি। কিন্তু খৃষ্টকে আমি ভক্তি করি, খৃষ্টের কথা বলতে ভাল লাগে, শুনতে ভাল লাগে । এতে দোষ আছে কিছু ? মহাপুরুষের কি দেশ-বিদেশ আছে ? রাত্রে বাড়ির মধ্যে খেতে গিয়ে দেখি আর সকলের খাওয়া হয়ে গিয়েচে-ছোট বউ অর্থাৎ শৈলদিদির ছোট জায়ের রান্নার পাল ছিল এবেল—তিনি হাড়িকুড়ি নিয়ে বসে আছেন। আমি খেতে বসলাম কিন্তু কেমন অশ্বস্তি বোধ হতে লাগল—শৈলদিদির এই ছোট-জাকে আমি কি জানি কেন পছন্দ করিনে। মেজ বউ, সেজ বউকে যেমন মেজদি, সেজদি ব’লে ডাকি-ছোটবউকে আমি এপর্য্যন্ত কোন কিছু বলে ডাকি নি। অথচ তিনি আমার সাম্নে থেরোন বা আমার সঙ্গে কথা বলেন । ছোটবউয়ের বয়েস জামায় সমান হবে, এই সতেরো জাঠারো - আমি যদিও আপনি বলে কথা বলি। বাড়ি সব মেয়ের ও বৌয়ের জানে র্ষে ছোটৰোঁদের সঙ্গে জঞ্জর তেমন সম্ভাৰ নেই। ఏనీ8S কেন আমি তাকে ছোটদিদি ব’লে ভাকি নে, শৈলদি আমামু এ নিম্নে কতবার বলেচে । কিন্তু আমার ষা ভাল লাগে না, তা আমি কখনও করিনে । সেদিন এক ব্যাপার হমেচে । খেয়ে উঠে অভ্যাসমত পান চেয়েচি—কাউকে বিশেষ করে সম্বোধন করে নয়, যেন দেয়ালকে বলচি এই ভাবে । ছোটবউ আধ-ঘোমটা দিয়ে এসে পান আমার হাতে দিতে গেলেন—আমার কেমন একটা অশ্বস্তি বোধ হ’ল, কেন জানি নে, অস্ক কারুর বেলা আমার ত এমন অশ্বপ্তি বোধ হয় না ? পান দেবার সময় তার আঙ্গুলটা আমার হাতে সামান্ত ঠেকে গেল –আমি তাড়াতাড়ি হাত টেনে নিলাম। আমার সারা গা কেমন শিউরে উঠল, লজ ও অশ্বপ্তিতে মনে হ’ল পান আর কখনও এমন ভাবে চাইব না। মেজদি কি শৈলদির কাছে গিয়ে চেয়ে নেবো । সেই দিন থেকে ছোট বউকে আমি এড়িয়ে চলি । 象 মস-কয়েক কেটে গেল। শীত পড়ে গিয়েচে । আমি দোতলার ছাদে একটা নিরিবিলি জায়গায় রোদে পিঠ দিয়ে বসে জ্যামিতির আঁক কযচি। লেজদি হাসতে হাসতে ছাদে এসে বললেন -জিতু এস তোমায় ওরা ডাকছে । আমি বললুম—কে ডাকচে সেজদি ? সেজদির মুখ দেখে মনে হ’ল একটা কি মজা আছে। উৎসাহ ও কৌতুহলের সঙ্গে পেছনে পেছনে গেলাম। দোতলার ওদিকের বারানাতে সব মেয়েরা জড়ো হয়ে হাসাহসি করচে । আমায় সবাই এসে ঘিরে গঁড়াল, বললে—এস ঘরের মধ্যে। তাদের পেছনে ঘরে ঢুকতেই লেজদি বিছানার দিকে আঙুল দেখিয়ে বললেন-ওই লেপটা তোল ত দেখি কেমন বাহাঙ্কুরি ? বিছানাটার উপর আগাগোড়া লেপ-ঢাকা কে এক জন শুয়ে আছে লেপ মুড়ি দিয়ে । সবাই বললে— তোল ত লেপট । আমিও হাসিমুখে বল্লাম—কি বলুন না সেঞ্জদি, কি হুয়েচে কি ? ভাবলুম বোধ হয় শৈলদির ছোট দেওর অজস্থাকৈ এর একটা কিছু সাজিমেচে বা ঐ রকম কিছু। তাড়াতাড়ি লেপট টেনে নিয়েই চমকে উঠলাম। লেপের তুলীয় ছোট বৌঠাকরণ মুখে হাসি টিপে চোখ বুজে গুয়ে !